টানা ২১ দিন ধরে হাসপাতালে মৃত্যুর সঙ্গে লড়াই করেও শেষরক্ষা হলো না। গত ২৯ মার্চ বহরমপুরে ডিউটিতে যাওয়ার সময় দুর্ঘটনায় গুরুত্বর আহত হয়েছিলেন কৌশিক রক্ষিত। কিন্তু দীর্ঘ লড়াইয়ের পর শুক্রবার ২৯ বছর বয়সে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করলেন নিমতা থানার সাব ইন্সপেক্টর কৌশিক রক্ষিত। সহকর্মীর এ ভাবে আকস্মিক মৃত্যুতে শোকগ্রস্ত নিমতা থানার পুলিশকর্মীরা। শুক্রবার থেকেই নিমতা থানা ও কৌশিক রক্ষিতের বাড়িতে শোকের ছায়া।
২০২১ সালের ১৫ আগস্ট কৌশিক রক্ষিত সাব-ইন্সপেক্টর হিসেবে নিযুক্ত হয়েছিলেন। এর পর ট্রেনিং শেষ করে ২০২২ সালের ২০ মে থেকে নিমতা থানায় তাঁর নতুন কর্মজীবনের সূচনা হয়েছিল। অত্যন্ত দক্ষ, নির্ভীক ও সৎ অফিসার হিসেবে খুব অল্প সময়েই এলাকায় ও সহকর্মীদের মধ্যে সুনাম অর্জন করেছিলেন তিনি। কৌশিক রক্ষিতের অমায়িক ব্যবহার ও বন্ধুত্বপূর্ণ মনোভাবের জন্য তিনি সকলের আপন হয়ে উঠেছিলেন। মূলত, তাঁর সততা ও কর্তব্যপরায়ণতাই তাঁকে পুলিশ বিভাগের এক উজ্জ্বল মুখ করে তুলেছিল বলে জানান কৌশিকের সহকর্মীরা।
এর পর চলতি বছরের ২৪ জানুয়ারি, ব্যারাকপুর পুলিশ কমিশনারেট থেকে তাঁর পোস্টিং হয় পশ্চিমবঙ্গ স্টেট STF-এ। নতুন কর্মস্থলে যোগ দেওয়ার কিছুদিনের মধ্যেই ঘটে ভয়াবহ দুর্ঘটনা। গত ২৯ মার্চ মুর্শিদাবাদের বহরমপুরে ডিউটিতে যাচ্ছিলেন তিনি। সেই যাত্রাপথেই দুর্ঘটনার কবলে পড়ে গুরুত্বর আহত হন কৌশিক রক্ষিত। এর পর দীর্ঘ ২১ দিন ধরে হাসপাতালে মৃত্যুর সঙ্গে লড়াই করে শেষ পর্যন্ত শুক্রবার সকালে মৃত্যু হয় সাব ইন্সপেক্টরের। জানা গিয়েছে, গত বছর অগাস্ট মাসে বিয়ে করেছিলেন কৌশিক রক্ষিত। তাঁর বাড়ি বর্ধমান জেলার ভাতার থানার অন্তর্গত। পরিবারে স্ত্রী ছাড়া বাবা, মা ও দিদি রয়েছে।
তবে কৌশিকের এ ভাবে অকালপ্রয়াণে সকলেই স্তম্ভিত। STF-এ যাওয়ার আগে তাঁর শেষ পোস্টিং ছিল নিমতা থানায়। নিমতা থানার তরফে শুক্রবার ফেসবুকে একটি পোস্ট করা হয়। সহকর্মীরা বলেন, ‘আমরা শুধু একজন অফিসার নয়, এক বন্ধুকে হারালাম।’