এই সময়, লাটাগুড়ি: ডুয়ার্সে ক্রমশ বেড়ে চলেছে বিদেশি পর্যটকদের ভিড়। গত কয়েকদিন ধরেই ডুয়ার্সের প্রাণকেন্দ্র লাটাগুড়ি-সহ পাশ্ববর্তী পর্যটন এলাকায় আমেরিকা, অস্ট্রেলিয়া, ক্যানাডা-সহ অন্য দেশ থেকে পর্যটকরা আসছেন। এতে আশার আলো দেখছেন ডুয়ার্সের পর্যটন ব্যবসায়ীরা।
কয়েক বছর আগে অতিমারীর সময়ে মুখ থুবড়ে পড়েছিল উত্তরের পর্যটন শিল্প। করোনা আবহ কাটিয়ে ফের স্বাভাবিক ছন্দে ফিরতে সময়ও লেগেছিল অনেক। সম্প্রতি, গত কয়েক বছরে নতুন দিশা দেখছে ডুয়ার্সের পাহাড়-নদী-জঙ্গল। যদিও এ দেশের পর্যটকদের তুলনায় সেখানকার লাটাগুড়ি ও গোরুমারায় বেশি সমাগম দেখা গিয়েছে বিদেশি পর্যটকদের।
ডুয়ার্সের এক ট্যুর অপারেটর উজ্জ্বল শীলের কথায়, 'ইদানীং ইউরোপের বিভিন্ন দেশের পাশাপাশি আমেরিকা, অস্ট্রেলিয়া-সহ আশপাশের দেশ থেকে পর্যটকদের ডুয়ার্সমুখী হতে দেখা যাচ্ছে, যা পর্যটনে অবশ্যই ভালো ইঙ্গিত। গত এক সপ্তাহের মধ্যে তিনটি আলাদা বিদেশি পর্যটক দল লাটাগুড়ি ও গোরুমারায় বেড়াতে এসেছেন।'
শুক্রবার অস্ট্রেলিয়া থেকে গোরুমারায় আসা কলিন জন বর্গ, প্যাটসি আইরিন মিলসেরা জানিয়েছেন, দার্জিলিং, সিকিম ভ্রমণ শেষ করে লাটাগুড়িতে এসেছেন। এখানকার চা বাগান ও বন্যপ্রাণ দেখে তাঁরা আপ্লুত। সামনের বছরে ভুটানে আসবেন তাঁরা। সেখান থেকে ফের ডুয়ার্সে আসবেন।
কেন এই টান? ডুয়ার্সের পশ্চিম অংশের পর্যটন মূলত জঙ্গল নির্ভর। লাটাগুড়ি ও গোরুমারাকে কেন্দ্র করেই দেশ-বিদেশ থেকে প্রচুর মানুষ ডুয়ার্সে বেড়াতে আসেন। গোরুমারার পাশাপাশি সামসিং, লাভা, ঝালং, রকি আইল্যান্ড, সুলতানেখোলা-সহ জায়গাগুলি তাঁরা বেছে নেন স্টেকেশন (থাকার জায়গা) হিসেবে। এখানকার অর্থনীতির বেশিরভাগটাই পর্যটনের উপরে নির্ভর করে থাকে। শিলিগুড়ি এবং দার্জিলিংয়ের ট্যুর অপারেটর কবীর ছেত্রীর বক্তব্য, 'বিদেশি পর্যটকদের সঙ্গে ডুয়ার্সের পর্যটনের অর্থনীতি অনেকটা জড়িয়ে থাকে। মূলত ডুয়ার্স ও পাহাড় মিলিয়ে একটা প্যাকেজে বিভিন্ন স্বাদ নেওয়ার সুযোগ পান।'
সাধারণ দর্শকের তুলনায় টিকিটের মূল্য অনেকবেশি হওয়ায় বিদেশি পর্যটক এলে বন দপ্তরের বাড়তি আয় হতো। সম্প্রতি মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে জঙ্গলের এন্ট্রি-ফি তুলে নেওয়ার পরে সেই আয় বন্ধ হয়েছে। স্থানীয় পর্যটকদের মতো বিদেশি পর্যটকদের থেকেও জঙ্গলে প্রবেশের জন্য গাইড ও জিপসি ভাড়া ছাড়া আর কিছুই নেওয়া হচ্ছে না।