• ‘স্কুলে শরীর এসেছে, মন আসেনি’, সুপ্রিম রায়ের পর স্কুলে ফিরেও দুশ্চিন্তায় বাঁকুড়ার শিক্ষক–শিক্ষিকারা
    এই সময় | ২০ এপ্রিল ২০২৫
  • সুপ্রিম কোর্টের রায়ের পর নিমেষের মধ্যে চাকরি হারিয়েছিলেন ২৬ হাজার শিক্ষক-শিক্ষিকা ও শিক্ষাকর্মীরা। এর পর সম্প্রতি সুপ্রিম কোর্ট যে রায় দিয়েছে তাতে সাময়িক খুশি হলেও সম্পূর্ণ নিশ্চিন্ত হতে পারছেন না চাকরিহারারা। কারণ, আদৌ তাঁদের চাকরি থাকবে কি না সেই নিয়ে ধন্ধ তৈরি হয়েছে চাকরিহারা শিক্ষক–শিক্ষিকাদের মনে। শনিবার তারই রেশ দেখা গেল বাঁকুড়া মিউনিসিপ্যাল হাই স্কুলে। সেই স্কুলের শিক্ষক শিশির কুমার গরাই বলেন, ‘স্কুলে শরীর এসেছে, মন আসেনি।’

    সম্প্রতি সুপ্রিম কোর্ট যে রায় দিয়েছেন, তাতে যে সব শিক্ষক–শিক্ষিকারা অযোগ্য বলে চিহ্নিত নন তাঁরা আগামী ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত স্কুলে যেতে পারবেন। সুপ্রিম রায়ের পর শনিবার বাঁকুড়া মিউনিসিপ্যাল হাই স্কুলে যোগ দিলেন সেই স্কুলের দুই চাকরিহারা শিক্ষক–শিক্ষিকা। তবে কর্মক্ষেত্রে যোগ দিলেও, তাঁরা যে এখনই নিজেদের লড়াই থেকে পিছপা হচ্ছেন না, তা ফের একবার স্পষ্ট করে দিলেন বাঁকুড়ার চাকরিহারা শিক্ষকরা।

    এ দিন স্কুলে এসেছিলেন শিক্ষিকা মৌমিতা চট্টরাজ ও শিশিরকুমার গরাই। শিক্ষিকা মৌমিতা চট্টরাজ স্কুলে যোগ দেওয়ার পর কিছু বলতে না চাইলেও, শিশিরকুমার গরাই নিজের অবস্থান স্পষ্ট করেছেন।

    কর্মক্ষেত্রে ফিরে বাঁকুড়া মিউনিসিপ্যাল হাইস্কুলের বিজ্ঞানের শিক্ষক শিশির কুমার গরাই বলেন, ‘স্কুলে শরীর এসেছে, মন আসেনি। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত আমরা আছি। সরকার চাইলে যোগ্যদের তালিকা প্রকাশ করে রিভিউ পিটিশন দিলে থাকবো, না হলে তারপর হয়তো অবসর নিতে হবে। তবে ছয় থেকে সাত বছর পর ফের পরীক্ষায় বসা সম্ভব না। বিভাগীয় পরীক্ষা ছাড়া কোনও অবস্থাতেই নতুন করে আর পরীক্ষায় বসব না। লড়াই জারি থাকবে।’ বাঁকুড়া মিউনিসিপ্যাল হাই স্কুলের প্রধান শিক্ষক সাধন চন্দ্র ঘোষ বলেন, ‘দু’জন শিক্ষক-শিক্ষিকা ফের কাজে যোগ দিয়েছেন। ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত তাঁদের স্কুলে আসার যে ছাড়পত্র দিয়েছে সেই অনুযায়ী তাঁরা স্কুলে এসেছেন। যা স্কুল কর্তৃপক্ষ ও ছাত্রছাত্রীদের পক্ষে মঙ্গলকর। তবে পরবর্তীকালে কী হবে সেটা আমরা জানি না। আইনী জটিলতা কাটিয়ে যোগ্যতার বিচারে তাঁরা ফের স্থায়ীভাবে এখানে কাজ করুক সেটাই আমরা চাই।’

    এ দিকে ফের শিক্ষক-শিক্ষিকাদের কাছে পেয়ে খুশী স্কুলের পড়ুয়ারাও। শুধুমাত্র পড়াশোনা নয়, ওই শিক্ষক-শিক্ষিকারা তাঁদের সঙ্গে বন্ধুর মতো মেশেন বলে জানিয়েছে পড়ুয়ারা। ফের তাঁরা কাজে যোগ দেওয়ায় স্কুল পড়ুয়ারা প্রত্যেকেই খুব খুশী। শনিবার পড়ুয়ারা বলে, ‘স্যার ও ম্যাডামরা আমাদের স্কুলে থাকুক ও পড়াক, এটাই আমরা চাই। তাঁরা খুব ভালো পড়ান ও আমাদের সঙ্গে বন্ধুর মতো মেশেন।’ যতদিন না তাঁরা যোগ্যতার সঙ্গে ফের স্কুলে ফিরতে পারবেন, ততদিন তাঁরা আন্দোলন জারি রাখবেন বলে জানিয়েছেন।

  • Link to this news (এই সময়)