• লঘু পাপে গুরু দণ্ড! ক্লাসে হাসায় ছাত্রকে বেধড়ক ‘মার’, বারাসতে অভিযুক্ত শিক্ষককে শোকজ
    প্রতিদিন | ২০ এপ্রিল ২০২৫
  • অর্ণব দাস, বারাসত: ক্লাস চলাকালীন সতীর্থদের সঙ্গে হাসাহাসি করেছিল দশম শ্রেণির ছাত্র। সেটাই ছিল ‘পাপ’। সেই ‘লঘু পাপে গুরু দণ্ড’ পেতে হল তাকে। তখন সেই ছাত্রকে শাসনের নামে শিক্ষক কিল, ঘুষি, চড় মারতে শুরু করেন বলে অভিযোগ। তাতে শ্বাসকষ্ট শুরু হয় ওই ছাত্রের। এমনকী চিকিৎসার জন্য তাকে নিয়ে যেতে হয় হাসপাতালে। তারপরেও ছাত্র পুরোপুরি সুস্থ না হওয়ায় শনিবার অভিযুক্ত জীবনবিজ্ঞানের শিক্ষকের বিরুদ্ধে প্রধান শিক্ষকের কাছে অভিযোগ জানিয়ে বিক্ষোভ দেখালেন অভিভাবকরা। ঘটনায় শনিবার উত্তপ্ত হয়ে উঠল বারাসত মহাত্মা গান্ধী মেমোরিয়াল হাই স্কুল। তীব্র চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে।

    জানা গিয়েছে, অভিভাবকদের নালিশের জেরে অভিযুক্ত শিক্ষককে ম্যানেজিং কমিটির তরফে শোকজ করা হয়েছে। অসুস্থ ছাত্র ভর্তি বারাসত নবপল্লির একটি বেসরকারি নার্সিংহোমে। ঘটনাটি ঘটেছিল বৃহস্পতিবার, দশম শ্রেণির জীবন বিজ্ঞান ক্লাসে। অভিযোগ, ওই ছাত্র বন্ধুদের সঙ্গে হাসাহাসি করছিল। তাকে পড়া জিজ্ঞাসা করেন শিক্ষক শ্যাম সনাতন সাঁতরা। কিন্তু ছাত্রটি পড়া বলতে পারেনি, চুপ ছিল। এরপরই ‘স্যর’ তাকে বেধড়ক মারধর করেছিলেন বলে অভিযোগ। ছাত্রের শ্বাসকষ্ট শুরু হলে তাকে নিকটবর্তী নার্সিংহোমে ভর্তি করা হয়েছে। আক্রান্ত ছাত্রের কথায়, “চুল টেনে বেঞ্চে মাথা ঠুকে দেন। তারপর আমার ব্যাগ দিয়ে আমারই মাথায় মেরেছেন। মাথা নিচু করিয়ে শিক্ষক পিঠে কিল-ঘুষি মেরেছে। তখন দম নিতে পারছিলাম না। সবাই মিলে আমার মুখে-চোখে জল দিয়ে দেয়। তারপর নার্সিংহোমে নিয়ে যায়।”

    আক্রান্তের মা রেশমা বিবির অভিযোগ, “ছেলেকে মেরে নার্সিংহোমে নিয়ে এসেছে শুনে ছুটে আসি। দেখি ছেলেকে যেভাবে মেরেছে, চোরকেও কেউ এভাবে মারে না। শুধু মারধর নয়, মেরে পুঁতে দেবেও বলেছিল। এদিন প্রধান শিক্ষকের কাছে জানতে এসেছিলাম অভিযুক্ত শিক্ষকের বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা নেবে।” বাবা নাসির আলি বলেন, “বৃহস্পতিবার রাতের থেকে ফের স্বাসকষ্ট শুরু হয়। তাই পরেরদিন শুক্রবার বারাসত হাসপাতালে নিয়ে গিয়েছিলাম। তারপরেও ছেলে বারবার বলছে নিঃশ্বাস নিলেই কষ্ট হচ্ছে। এদিন স্কুলে অন্যান্য অভিভাবকরা মিলে এসে এনিয়ে অভিযোগ জানালাম।”

    যদিও এনিয়ে অভিযুক্ত শিক্ষকের শ্যাম সনাতন সাঁতরার সাফাই, “পড়ানোর সময় বারংবার ছাত্ররা সমস্যা করছিল। শান্ত করার অনেক চেষ্টা করেছি। তারপর বাধ্য হয়ে ছাত্রের পিঠে কয়েক ঘা চড় মেরেছি। ঘুষি মারিনি।” প্রধান শিক্ষক আলী আহসান জানিয়েছেন, “অভিযোগের ভিত্তিতে এদিন দুপুরে ম্যানেজিং কমিটির বৈঠক হয়েছে। অভিযুক্ত শিক্ষককে শো-কজ করে কারণ জানতে চাওয়া হয়েছে। উত্তর পাওয়ার পরে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। অভিযুক্ত শিক্ষক আক্রান্ত ছাত্রের চিকিৎসার সমস্ত ভার বহন করবেন বলে জানিয়েছেন।”
  • Link to this news (প্রতিদিন)