• আর ক্ষোভ নয়, বিবাহিত দিলীপকে তৃণমূলের প্রীতি-শুভেচ্ছা, দল যদি অনুমতি দেয় উপহারে দেবেন ফুল
    আনন্দবাজার | ১৯ এপ্রিল ২০২৫
  • মাত্র ২৮ দিন আগের কথা। খড়্গপুরে রাস্তার উদ্বোধন করতে গিয়ে তৃণমূলের মহিলা ব্রিগেডের বিক্ষোভের মুখে মেজাজ হারিয়েছিলেন মেদিনীপুরের প্রাক্তন সাংসদ দিলীপ ঘোষ। রাগে গজরাতে গজরাতে ‘বাপবাপান্ত’ করেছিলেন তৃণমূল কর্মী প্রীতি কারারদের। প্রতিবাদে গলার জোর বাড়িয়েছিলেন প্রীতিরাও। পাল্টা তাঁকে শুনতে হয়েছিল, ‘গলা টিপে দেব’ হুঙ্কার। সেই দিলীপ আজ বিবাহিত। বিজেপি নেতার উপর সেই রাগ, ক্ষোভও আর পুষে রাখেননি তৃণমূলের প্রীতি। শনিবার দিলীপ খড়্গপুর গেলে নতুন জীবনের জন্য ফুলের তোড়া দিয়ে তাঁকে শুভেচ্ছা জানাতে চান তৃণমূল কর্মী। তবে দল যদি অনুমতি দেয় তবেই।

    শুক্রবার বিয়ে করেছেন রাজ্য বিজেপির প্রাক্তন সভাপতি দিলীপ। পাত্রী রিঙ্কু মজুমদার তাঁর দলেরই নেত্রী। দিলীপের নয়া ইনিংসের জন্য রাজনৈতিক সতীর্থ থেকে বিরোধীরা অভিনন্দন জানিয়েছেন। ব্যতিক্রম নন খড়্গপুরের প্রীতি কারার, বৈশাখী সাহারাও। শনিবার ৬১ বছরে পা দিয়েছেন দিলীপ। সকালে নিউ টাউনে তাঁর জন্মদিন পালিত হয়েছে। বিকেলে খড়্গপুর যাওয়ার কথা তাঁর। সেটা জানার পর তৃণমূল কর্মী প্রীতি বলেন, ‘‘উনি এলে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানাব। তবে দল যদি অনুমতি দেয় তবেই যাব।’’ পর ক্ষণেই ওই তৃণমূল কর্মীর সংযোজন, ‘‘আশা করি, মহিলাদের গলায় আর ‘পা তুলে দেব’ বলবেন না উনি। এ বার হয়তো মহিলাদের সম্মান করবেন...। দলের অনুমতি পেলে খড়্গপুরে ফিরলেই ফুল নিয়ে পৌঁছে যাব আমরা!’’

    ২১ মার্চ খড়্গপুর শহরের ভবানীপুর মাঠপাড়ায় একটি রাস্তা উদ্বোধনে গিয়েছিলেন মেদিনীপুরের প্রাক্তন সাংসদ দিলীপ। সেখানে তাঁকে ঘিরে বিক্ষোভ দেখান তৃণমূলের মহিলা কর্মীরা। অভিযোগ, সাংসদ থাকার সময়ে নিজের লোকসভা কেন্দ্রে দিলীপকে দেখা যেত না। এখন যখন তিনি ওই পদে নেই, তখন কেন রাস্তার উদ্বোধন করতে এসেছেন? প্রীতিরা প্রশ্ন করেন, ‘‘এত দিন তো আপনাকে পাওয়া যায়নি! রাস্তার কাজ আমাদের কাউন্সিলর (প্রদীপ সরকার) করে দেওয়ার পর উদ্বোধন করতে এসেছেন?’’ ওই কথা শুনেই তেলেবেগুনে জ্বলে ওঠেন দিলীপ। বলেন, ‘‘রাস্তা তৈরির জন্য আমি টাকা দিয়েছি। কারও বাপের টাকা নয়। যাও গিয়ে প্রদীপকে জিজ্ঞেস করো!’’ পাল্টা গর্জে উঠেছিলেন প্রীতি। বলেছিলেন, ‘‘আপনি বাপ তুললেন কেন? আপনি প্রাক্তন সাংসদ। এ সব কথা আপনার মুখে মানায়?’’ দিলীপের জবাব, ‘‘বেশ করেছি তুলেছি...। চোদ্দোপুরুষ তুলব।’’ কথায় কথায় পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। ক্ষোভে ফুঁসতে থাকেন প্রীতি, বৈশাখীরা। তাঁদের মিলিত প্রতিবাদে আমল না দিয়ে দিলীপ বলেন, ‘‘বেশি চিৎকার করবে না, গলায় টিপে দেব!’’

    ঘটনাক্রমে দিলীপের মন্তব্যের নিন্দা করে পথে নামে তৃণমূল। বিক্ষোভ হয় দিলীপের তৎকালীন বাংলোর সামনে। তবে সে দিনের ‘উত্তপ্ত’ ঘটনার কথা আর এই বৈশাখী বিকেলে মনে রাখতে চায় না তৃণমূলের মহিলা ব্রিগেড। তাঁরা বলছেন, ‘‘ওঁর বিবাহিত জীবন সুখের হোক। খড়্গপুরে ফিরলে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানাব। সেই সঙ্গে আমরা আশা করি, এ বার মহিলারা ওঁর কাছ থেকে ভাল ব্যবহার পাব!’’
  • Link to this news (আনন্দবাজার)