• মমতার মুখে এ বার RSS-এর নাম, শান্তি আবেদনে রাজ্যবাসীকে চার পাতার খোলা চিঠি মুখ্যমন্ত্রীর
    এই সময় | ২০ এপ্রিল ২০২৫
  • শান্তি বজায় রাখার আবেদন জানিয়ে রাজ্যবাসীকে চার পাতার খোলা চিঠি লিখলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই চিঠিতে একযোগে নিশানা করেন বিজেপি ও আরএসএসকে। এর আগে বিভিন্ন সময়ে মমতার নিশানায় বিজেপি থাকলেও, এই প্রথম মমতার মুখে রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সঙ্ঘ বা আরএসএস-এর নাম। মমতা লেখেন, ‘বিজেপি ও তার সঙ্গীরা হঠাৎ পশ্চিমবঙ্গে খুব আক্রমণাত্মক হয়েছে। এই সঙ্গীদের মধ্যে আরএসএসও রয়েছে।’ ‘বিজেপি ও তার সঙ্গীরা’ যা প্রচার করছে, তা মিথ্যা ও সঙ্কীর্ণ। একই সঙ্গে সকলকে শান্ত ও ধীর থাকার আবেদনও জানান তিনি।

    মমতার খোলা চিঠিতে সর্বধর্মসমন্বয়ের কথা যেমন উঠে এসেছে, লিখেছেন, রামকৃষ্ণ-বিবেকানন্দ-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের কথাও। মমতার চিঠিতে উল্লেখ রয়েছে, ‘আগুনের সঙ্গে খেলার জন্য রামনবমীর দিন বেছে নেওয়া হয়। কিন্তু তা খুবই শান্তিপূর্ণ ভাবে উদযাপিত হয়। এর পর ওরা ওয়াকফ সংশোধনী আইনের বিরুদ্ধে সংঘটিত আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত কিছু বিষয়কে ব্যবহার করতে চায়।’ এই ধরনের ঘটনার মাধ্যমে আসলে ‘বিজেপি ও তার সঙ্গীরা’ বিশ্বজুড়ে হিন্দুধর্মের ‘অপযশ’ করছে বলেও উল্লেখ করেন মুখ্যমন্ত্রী।

    তবে এই পরিস্থিতি তাঁর পুলিশ প্রশাসন কী ভাবে সামাল দিয়েছে, সে কথা লেখেন মুখ্যমন্ত্রী। পুলিশের দু’জন অফিসারকে সরানো হয়েছে, আরও পদক্ষেপ করা হচ্ছে। তাঁর কথায়, ‘দাঙ্গা যারা ঘটায় তারা হিন্দুও নয়, মুসলিমও নয়– দাঙ্গা বাধায় দুর্বৃত্তরা। কাউকে ছাড়া হবে না।’

    মমতা মনে করান, উত্তরপ্রদেশ, রাজস্থানে প্রতিবাদ ‘বুলডোজ়’ করা হয়। একটা প্রতিবাদ মিছিলও করতে দেওয়া হয় না, দাবি তাঁর। মণিপুর, অসম, ত্রিপুরাতেও বার বার পরিস্থিতি খারাপ হয়েছে, তাও লেখেন মমতা। বাংলা সব অর্থেই দেশের মধ্যে এগিয়ে থাকা রাজ্য। তাই ঈর্ষা থেকে ‘হিংসুটে লোকেরা’ এ সব করছে বলে লেখেন মুখ্যমন্ত্রী।

    চার পাতার চিঠির একেবারে শেষে মমতার আবেদন, ‘ধীর থাকুন, শান্ত থাকুন, ঐক্যবদ্ধ থাকুন। মিথ্যা সাম্প্রদায়িক প্রচারে বিপথগামী হবেন না। আসুন আমরা মিলেমিশে একজোট হয়ে থাকি।’ খোলা চিঠি শেষ করেছেন, রবি ঠাকুরের ‘ভারত ভাগ্য বিধাতা’র পঞ্চস্তবকের দ্বিতীয় স্তবক দিয়ে—

    ‘অহরহ তব আহ্বান প্রচারিত, শুনি তব উদার বাণী

    হিন্দু বৌদ্ধ শিখ জৈন পারসিক মুসলমান খৃস্টানি

    পূরব পশ্চিম আসে, তব সিংহাসন-পাশে

    প্রেমহার হয় গাঁথা।

    জনগণ-ঐক্য-বিধায়ক জয় হে ভারত ভাগ্য বিধাতা।

    জয় হে, জয় হে, জয় হে, জয় জয় জয় জয় হে।’

  • Link to this news (এই সময়)