উত্তর ২৪ পরগনায় বাড়ি। চাকরির জন্য সেখান থেকে ছুটে গিয়েছিলেন মেদিনীপুরে। সেই ২০১৮ সাল থেকে মেদিনীপুরেই রয়েছেন। সন্তানকে মেদিনীপুরের একটি স্কুলে এ বার ভর্তিও করেছেন পশ্চিম মেদিনীপুরের কেশপুর ব্লকের আন্দিচক হাইস্কুলের শিক্ষিকা প্রান্তিকা সিংহ। কিন্তু হঠাৎ চাকরিটাই চলে গেল। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে ৩১ ডিসেম্বর অবধি স্কুলে যেতে পারবেন। কিন্তু তার পর? প্রশ্ন প্রান্তিকার। তাঁর কথায়, ‘২০১৮ সাল থেকে এখানেই তো সংসার, সব কিছু। সন্তানকে সদ্য মেদিনীপুর শহরের একটি স্কুলে ভর্তি করেছি। আমি আমার ছাত্র ছাত্রীদেরও সন্তানস্নেহেই ভালোবাসি। আট মাস পর এই সব কিছু ছেড়ে চলে যেতে হবে? এটা কি সম্ভব! এই জন্যই কি এত পড়াশোনা করে, যোগ্যতার প্রমাণ দিয়ে চাকরি করতে এসেছিলাম?’
আন্দিচক হাইস্কুলের নিউট্রিশিয়ন বিষয়ের (একাদশ-দ্বাদশ) শিক্ষিকা প্রান্তিকা সিংহ। গত ৩ এপ্রিল সুপ্রিম কোর্টের রায়ে চাকরি হারিয়েছেন উত্তর ২৪ পরগনার মছলন্দপুরের প্রান্তিকাও। সুপ্রিম কোর্টের বৃহস্পতিবারের (১৭ এপ্রিলের) বিশেষ নির্দেশে অবশ্য অযোগ্য প্রমাণিত নন, এমন যোগ্যরা ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত স্কুলে যেতে পারবেন।
শুক্রবার ছিল গুড ফ্রাইডের ছুটি। শনিবার আর নিজেকে আটকে রাখতে পারেননি তিনি। ছুটে গিয়েছিলেন প্রিয় ছাত্রছাত্রীদের কাছে। ছাত্রছাত্রীরাও তাদের প্রিয় শিক্ষিকাকে দেখতে পেয়েই ছুটে এসে জড়িয়ে ধরে। কান্না ধরে রাখতে পারেননি ২০১৬-র এসএসসিতে প্রথম কাউন্সেলিংয়েই সুযোগ পাওয়া প্রান্তিকা।
কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী প্রান্তিকা। স্নাতক থেকে বি.এড সবই কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে করেছেন। ফার্স্ট ক্লাস পাওয়া ছাত্রী ছিলেন তিনি। রাতারাতি চাকরি হারিয়ে এ ভাবে অনিশ্চয়তার মুখোমুখি হতে হবে, ভাবতেই পারছেন না তিনি।