পুকুরের জলে ডুবে মৃত্যু এক ষষ্ঠ শ্রেণির পড়ুয়ার। ঘটনা হুগলি জেলার সিঙ্গুরে। মৃত পড়ুয়ার নাম আয়ুষ কর্মকার। শুক্রবার একটি প্রশিক্ষণ শিবিরে যোগদান করার পর স্থানীয় একটি পুকুরে ডুবে মৃত্যু হয় ওই পড়ুয়ার। পরিবারের অভিযোগ, যে ছেলে সাঁতার জানত না, জলে নামতে ভয় পেত, সে ছেলে জলে ডুবে কী করে মারা গেল ? সিঙ্গুরের আনন্দনগরের ঘটনায় ব্রতচারী সংঘের বিরুদ্ধে গাফিলতির অভিযোগ তুলে শনিবার থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের পরিবারের। ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, সিঙ্গুরের আনন্দনগর এলাকায় আনন্দনগর ব্রতচারী সংঘের পক্ষ থেকে চারদিন ব্যাপী ৩৫ তম আবাসিক ব্রতচারী প্রশিক্ষণ শিবির শুরু হয় ১৭ এপ্রিল থেকে। ছোট থেকে বড়ো, স্থানীয়রা ছাড়াও একাধিক জেলা থেকে শতাধিক মানুষ প্রশিক্ষণ শিবিরে যোগ দেন। সেই ক্যাম্পে ১৮ এপ্রিল অর্থাৎ শুক্রবার গিয়েছিল সিঙ্গুরের নস্করপুর এলাকার ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্র আয়ুষ কর্মকার। সকাল সাতটায় তাকে ছেড়ে দিয়ে আসেন বাবা শ্যামল কর্মকার। রাতে কাজ থেকে ফিরে ছেলেকে আনতে যাওয়ার কথা।
কিন্তু দুপুর নাগাদ হঠাৎই ব্রতচারী সংঘ থেকে শ্যামল কর্মকারকে ফোনে জানানো হয়, তাঁর ছেলে জলে ডুবে গিয়েছে। খবর পেয়ে পরিবারের লোকজন তড়িঘড়ি আনন্দনগর ব্রতচারী সংঘ-এ উপস্থিত হয়। ততক্ষণে সংঘের লোকজন আয়ুষকে জল থেকে তুলে স্থানীয় স্বাস্থ্য কেন্দ্রে নিয়ে যায। সেখান থেকে তাকে চুঁচুড়া ইমামবাড়া হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখানেই চিকিৎসকরা জানান সে মৃত। মেধাবী ছাত্রের এ হেন মৃত্যুতে শোকের ছায়া এলাকায়।
ঘটনার পর শনিবার সিঙ্গুর থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন মৃত আয়ুষের পরিবার। মৃত পড়ুয়ার পিতা শ্যামল কর্মকারের অভিযোগ, ‘ব্রতচারী সংঘের লোকজনের গাফিলতির জন্যেই আমার ছেলেটা মারা গেল। ওরা আমার ছেলেকে লক্ষ্যই দিল না। আমার ছেলে সাঁতার জানে না। জলে নামতে ভয় পেত সে কী করে পুকুরে গেল? আমি এই ঘটনার বিচার চাই।’
ব্রতচারী সংঘ-এর এক সদস্য অরুণ শাসমল জানান, আমাদের দীর্ঘদিনের সংস্থা। এর আগে এরকম ঘটনা ঘটেনি। ঘটনাটি খুবই দুঃখজনক। ছেলেটি আমাদের স্কুলেই পাঁচ বছর পড়েছে। বর্তমানে অন্য স্কুলে পড়ে। আমাদের ক্যাম্পাসের বাইরে একটি পুকুর আছে। সবার অলক্ষ্যে ছেলেটি কী ভাবে চলে গেল তা নিয়ে আমরাও চিন্তিত। আমাদের অনেক স্বেচ্ছাসেবক আছে, তাঁরাই দেখাশোনা করেন। তবে কর্তব্যে কারও গাফিলতি ছিল না। আমরাই চাই বিষয়টার সঠিক তদন্ত হোক। ঘটনায় অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত শুরু করেছে সিঙ্গুর থানা। পুলিশ জানিয়েছে, ময়নাতদন্তের রিপোর্টের পর পড়ুয়ার মৃত্যুর কারণ স্পষ্ট হবে।