স্বামীর নামে মিথ্যা অনুপ্রবেশের মামলা, কান্না থামছে না সব্যবালার, শীতলকুচিতে বন্ধ কাঁটাতারের ওপারে চাষবাস
বর্তমান | ২০ এপ্রিল ২০২৫
সংবাদদাতা, শীতলকুচি: কাঁটাতারের বেড়ার ওপারে আটকে স্বামী। এপারে স্বামীর শোকে ডুকরে কাঁদছেন সব্যবালা বর্মন। গত বুধবার কাঁটাতারের বেড়ার ওপারে বোরো খেতে কাজে গিয়ে বাংলাদেশি দুষ্কৃতীদের হাতে অপহৃত হয়েছেন পশ্চিম শীতলকুচি গ্রামের উকিল বর্মন। ঘটনার পর তিনদিন কেটে গেলেও তাঁকে দেশে ফেরাতে পারেনি বিএসএফ। জানা গিয়েছে, বাংলাদেশের হাতিবান্ধা থানার পুলিস তাঁর বিরুদ্ধে অবৈধ অনুপ্রবেশের মিথ্যা মামলা রুজু করেছে। ফলে সময় যত কাটছে পরিবারের সদস্যদের মধ্যে পাল্লা দিয়ে উৎকণ্ঠাও বাড়ছে।
অন্যদিকে, সীমান্তে বিএসএফের কড়াকড়ির জেরে কাঁটাতারের বেড়ার ওপারে কৃষি জমিতে যেতে পারছেন না পশ্চিম শীতলকুচি গ্রামের বাসিন্দারা। এর জেরে তাঁরা ফসল নষ্টের আশঙ্কা করছেন। যদিও বিএসএফের এক আধিকারিক জানিয়েছেন, তাদের প্রহরায় খুব দ্রুত চাষিরা কাজে যেতে পারবেন। পশ্চিম শীতলকুচি গ্রামের বাসিন্দা রমেশ বর্মন বলেন, আমার যেটুকু জমি রয়েছে সেটা কাঁটাতারের বেড়ার ওপারে। বুধবারের ঘটনার পর থেকে সীমান্তের ওপারে বিএসএফ কাউকে যেতে দিচ্ছে না। সময়ে বোরো ধানের জমিতে জলসেচ না দিলে ফসল নষ্ট হতে পারে। বিএসএফ আমাদের জানিয়েছে পরিস্থিতি একটু স্বাভাবিক হলে গেট খুলবে। কিন্তু কবে খুলবে সেবিষয়ে জানায়নি।
এদিকে, উকিলবাবুকে ফেরত আনার পাশাপাশি বোরো খেত নিয়ে চিন্তায় পড়েছে তাঁর পরিবারও। ওপারে তাঁদের প্রায় তিন বিঘা জমি রয়েছে। আর্থিক অনটনের কারণে তাঁর দুই ছেলে ভিনরাজ্যে শ্রমিকের কাজে থাকায় ফসল নষ্টের আশঙ্কা করছেন তাঁরা। উকিল বর্মনের বউমা পাম্পি বর্মন বলেন, বাবার (শ্বশুর) শোকে মা (শাশুড়ি) ঠিকমতো খাওয়া দাওয়া করছেন না। কেঁদেই চলেছেন। দ্রুত বাবাকে ফিরিয়ে আনার ব্যবস্থা করুক প্রশাসন।
শনিবার দুপুরে উকিলবাবুর বাড়িতে যান সিপিএমের এরিয়া কমিটির সম্পাদক আকবর আলি মিয়াঁ, ধ্বজেন বর্মন, বিধান অধিকারী সহ অন্যান্যরা। বিএসএফ সূত্রে জানা গিয়েছে, ফ্ল্যাগ মিটিংয়ের মাধ্যমে উকিলবাবুকে ফেরাতে বারবার বৈঠক হলেও তাঁকে ফেরানো যায়নি। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নজরে দিয়েছেন বিএসএফ কর্তারা।