জলপাইগুড়ির ৫০০টি অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রে তৈরি হচ্ছে পুষ্টি বাগান, ফলবে ফল-সব্জি
বর্তমান | ২০ এপ্রিল ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি, জলপাইগুড়ি: শিশুদের অপুষ্টি দূর করাই টার্গেট। এ জন্য জলপাইগুড়ি জেলার পাঁচশো অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রে তৈরি হচ্ছে পুষ্টি বাগান। সেই বাগানে ফলবে হরেক ফল-সব্জি। সম্পূর্ণ জৈবসারে উৎপাদিত ওই সব্জি যোগ করা হবে শিশুদের খাবারে। এতে যেমন খাবারের পুষ্টিমূল্য বাড়বে। একইসঙ্গে নিজেদের বাগানের ফল খেতে দেওয়া হবে অঙ্গনওয়াড়িতে আসা খুদেদের। জেলা প্রশাসনের সঙ্গে এই উদ্যোগে শামিল হয়েছে উদ্যানপালন দপ্তর। অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীরাই পুষ্টি বাগানের পরিচর্যা করবেন। কীভাবে ফল ও সব্জির বাগান করতে হবে, এখন তারই প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে আইসিডিএস কর্মীদের। ইতিমধ্যেই ধূপগুড়ি ও বানারহাট ব্লকে ওই প্রশিক্ষণ শেষ হয়েছে। জেলার বাকি ব্লকেও চলতি মাসের মধ্যে পুষ্টিবাগান তৈরির প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে বলে জেলা উদ্যানপালন দপ্তর জানিয়েছে।
জলপাইগুড়ির সহকারি উদ্যানপালন অধিকর্তা খুরশিদ আলম বলেন, জেলাশাসকের নির্দেশে যেসব অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রে জায়গা রয়েছে, সেখানে পুষ্টি বাগান তৈরির কাজ শুরু হয়েছে। জেলায় পাঁচশোটি অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রে ওই বাগান করার টার্গেট নেওয়া হয়েছে। সংশ্লিষ্ট কেন্দ্রের অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীরা পুষ্টি বাগানের পরিচর্যা করবেন। এজন্য তাঁদের ধাপে ধাপে ট্রেনিং দেওয়া হচ্ছে। ট্রেনিং শেষে সব্জি ও ফলের বীজ দিচ্ছি আমরা।
জেলা প্রশাসনের আধিকারিকরা বলছেন, বাণিজ্যিকভাবে চাষের জন্য ফসলের জমিতে রাসায়নিক সার ও কীটনাশক প্রয়োগ করা হয়। ফলে বাজার থেকে যেসব সব্জি ও ফল কেনা হয়ে থাকে, তা ‘বিষমুক্ত’ নয়। সেকারণে অঙ্গনওয়াড়ির পুষ্টি বাগানে শুধুমাত্র জৈবসার প্রয়োগ করা হবে।
জেলা প্রশাসন সূত্রে খবর, বিভিন্ন পঞ্চায়েতে জৈবসার তৈরির প্রকল্প চালু হয়েছে। সেখান থেকেই সার সংগ্রহ করে পাঠানো হবে অঙ্গনওয়াড়ির পুষ্টিবাগানের জন্য। যেসব অঙ্গনওয়াড়িতে জায়গা নেই, আশপাশে যদি কোনও সরকারি পতিত জমি থাকে কিংবা প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠে পুষ্টিবাগান তৈরির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। যেসব জায়গায় প্রাইমারি স্কুলের সঙ্গেই অঙ্গনওয়াড়ি সেন্টার রয়েছে, সেখানে বড় আকারের পুষ্টি বাগান করার টার্গেট নেওয়া হয়েছে। যাতে অঙ্গনওয়াড়ির শিশুদের সঙ্গে প্রাথমিকের পড়ুয়াদেরও পুষ্টির ঘাটতি মেটে।
সরকারি মাপকাঠিতে যেসব শিশু মারাত্মকভাবে অপুষ্টির শিকার, তাদের ‘লাল শিশু’ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। জেলায় যাতে একটিও ‘লাল শিশু’ না থাকে, সে ব্যাপারে কড়া নির্দেশ দিয়েছেন জেলাশাসক শমা পারভীন। এজন্য অন্তঃসত্ত্বাদের স্বাস্থ্যের উপর নিয়মিত নজরদারি চালাতে বলা হয়েছে। তাঁরা ঠিকমতো পুষ্টিকর খাবার পাচ্ছেন কি না, তা দেখভালের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীদের। যদি কোনও অন্তঃসত্ত্বা অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রে আসতে না পারেন, সেক্ষেত্রে তাঁর বাড়িতে গিয়ে পুষ্টিকর খাবার পৌঁছে দিয়ে আসতে বলা হয়েছে। - নিজস্ব চিত্র।