নিজস্ব প্রতিনিধি, বর্ধমান: জামালপুরের বৃদ্ধাকে নৃশংসভাবে খুনের পর ট্রেন ধরে বীরভূমের মল্লারপুরে পৌঁছে গিয়েছিল অভিযুক্ত অমিত বাগদি। বাড়িতে খাওয়ার পর রাতই সে ব্যাগ গুছিয়ে পালানোর পরিকল্পনা করেছিল। বাড়ি থেকে বেরতো যাওয়ার মুহূর্তে পুলিস তাকে পাকড়াও করে। পুলিস সূত্রে জানা গিয়েছে, মোবাইলের টাওয়ার লোকেশেন ধরে পূর্ব বর্ধমান জেলা পুলিস তার অবস্থান বুঝে যায়। সে বাড়ি থেকে পালিয়ে যেতে পারে। এমনটা আধিকারিকরা অনুমান করেছিল। সেই কারণে পূর্ব বর্ধমান জেলা পুলিসের শীর্ষ এক আধিকারিক মল্লারপুরের ওসির সঙ্গে যোগাযোগ করেন। সেইমতো মল্লারপুর থানার পুলিস দ্রুত বাড়ি পৌঁছে তাকে গ্রেপ্তার করেছে। বর্ধমান দক্ষিণের মহকুমা পুলিস আধিকারিক অভিষেক মণ্ডল বলেন, ধৃত বাড়ি থেকে পালিয়ে আত্মগোপন করার ছক কষেছিল।
পুলিস সূত্রে জানা গিয়েছে, মাত্র ২৪০০ টাকার জন্য অভিযুক্ত বৃদ্ধাকে খুন করে। বৃদ্ধকেও হত্যার পরিকল্পনা ছিল। তাকে মারধরও করা হয়। তিনি মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। তিনি মারা গিয়েছেন ভেবে অভিযুক্ত চম্পট দেয়। অমিত বৃদ্ধার বাড়িতে ভাড়া থাকতেন। বকেয়া বিদ্যুৎ বিল চাওয়ার কারণেই তাকে মারা হয়েছে।
এক পুলিস আধিকারিক বলেন, জামালপুর থানা এলাকার কুবীর গড়াই নামে এক ব্যক্তি তাকে ভাড়াবাড়ি দেখে দিয়েছিল। ঘটনার দিন সেও অভিযুক্তর সঙ্গে বৃহস্পতিবার বৃদ্ধার বাড়িতে ছিল। সেও জামালপুরের অবুজহাটির ওই দম্পতিকে মারধর করে। তবে সে এলাকা থেকে পালিয়ে যায়নি। জামালপুরের একটি কারখানায় কাজ করছিল। সেখানেই পুলিস গিয়ে তাকে পাকড়াও করে। ২৪০০ টাকার জন্য এভাবে কেউ খুন করতে পারে বলে আধিকারিকদের ধারণাতেই ছিল না। তবে তারা জেরায় স্বীকার করেছে বাড়ির মালিক মীরা সরকার বকেয়া বিল মেটানোর জন্য বারবার চাপ দিচ্ছিল। তার কাছে টাকা ছিল না। বকেয়া না মেটালে তারা থানায় যাওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছিল। সেই কারণে বাড়িতে ঢুকে তাকে খুন করে। গভীর রাতে তারা পাঁচিল টপকে বাড়ির ভিতর ঢোকে। খুন করার পর আবার পাঁচিল টপকেই পালিয়ে যায়। বৃদ্ধার স্বামী জখম অবস্থায় মেঝেয় পড়েছিলেন। শুক্রবার সকালে এলাকার বাসিন্দারা দরজা ধাক্কা দেওয়ায় তিনি কোনও রকম উঠে আসেন। স্থানীয়রা পুলিসকে খবর দেয়। জামালপুর থানার পুলিস মৃতদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠায়। ওই বৃদ্ধকে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।