ষাঁড় চুরি রুখতে পূর্ব মেদিনীপুরে নাকা চেকিংয়ের নির্দেশ এসপির
বর্তমান | ২০ এপ্রিল ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি, তমলুক: পূর্ব মেদিনীপুর জেলায় ষাঁড় চুরি আটকাতে সব থানায় নাকা পয়েন্ট করে চেকিং করার নির্দেশ দিলেন পুলিস সুপার সৌম্যদীপ ভট্টাচার্য। রাত ১২টা থেকে ভোর ৫টা পর্যন্ত প্রতিটি থানায় নাকা চেকিং চলবে। শুক্রবার রাত থেকেই জেলাজুড়ে চেকিং শুরু হয়েছে। তমলুক, নন্দকুমার, চণ্ডীপুর, নন্দীগ্রাম, এগরা, ভগবানপুর, ভূপতিনগর সহ সর্বত্র রাতে নাকাচেকিং চলছে। প্রত্যেক থানার আইসি এবং ওসিকে নাকা পয়েন্টে থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আগামী ৩০ এপ্রিল দীঘায় জগন্নাথধামের উদ্বোধন করবেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তার আগে ষাঁড় চোরদের দাপাদাপিতে বিড়ম্বনায় পড়েছে পুলিস। বিজেপি ওই ঘটনাকে হাতিয়ার করে পুরোদস্তুর রাজনীতি শুরু করেছে। এই অবস্থায় ষাঁড় চোরদের উৎপাত ঠেকাতে আপাতত রাতভর নাকা চেকিং চলবে। পুলিস সুপার বলেন, রাতে নাকা চেকিং চলছে। গত ১৭ এপ্রিল ভোর ৪টে নাগাদ রেয়াপাড়ায় ষাঁড় চুরি করতে আসা দক্ষিণ ২৪পরগনার দুষ্কৃতীরা পুলিসের গাড়িকে ধাক্কা মেরে বেপরোয়া গতিতে চম্পট দেয়। দুষ্কৃতীদের গাড়ির ধাক্কায় পুলিসের গাড়ির ড্রাইভার সহদেব প্রধান মারা যান। গুরুতর জখম হন রেয়াপাড়া ফাঁড়ির এএসআই সুশান্ত মিত্র। তার আগে ১০ এপ্রিল নন্দীগ্রাম-১ ব্লকের তেখালি থেকে দু’টি ষাঁড় চুরি করে পালানোর সময় চার দুষ্কৃতীকে ধাওয়া করে গ্রেপ্তার করা হয়। চারটি থানার পুলিসের চেষ্টায় দুষ্কৃতীরা ধরা পড়ে। দুষ্কৃতীরা ভীষণ বেপরোয়া। ভারী পণ্যবাহী যান ছাড়া যে কোনও গাড়িকে অনায়াসে ধাক্কা মেরে পালাতে সক্ষম তারা।
ভূপতিনগর, খেজুরি, ভগবানপুর, চণ্ডীপুর, নন্দীগ্রাম সহ বিভিন্ন জায়গায় ষাঁড় চুরি হচ্ছে। রাত নামলেই দুষ্কৃতীরা গাড়ি নিয়ে পূর্ব মেদিনীপুরের নানাপ্রান্তে পৌঁছে যাচ্ছে। গাড়িতে ষাঁড় তুলে নিমেষে হাওয়া হয়ে যাচ্ছে তারা। গোয়াল ঘর থেকে গোরুও চুরি হয়ে যাচ্ছে। স্থানীয় কিছু লোক ওই কাজে সোর্স হিসেবে দুষ্কৃতীদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছে বলে অভিযোগ। তারাই ষাঁড়ের ছবি তুলে পাঠিয়ে দিচ্ছে। কমিশনের বিনিময়ে ষাঁড়ের লোকেশন জানিয়ে দিচ্ছে। ওড়িশার চন্দনেশ্বর থেকে প্রচুর ষাঁড় পূর্ব মেদিনীপুরে আসে। এছাড়াও, এই জেলায় অনেক শিবমন্দির রয়েছে। সেখানে ভক্তরা ষাঁড় ছেড়ে দেন। যেকারণে পূর্ব মেদিনীপুরে ষাঁড়ের সংখ্যা অনেক বেশি। সেজন্য দুষ্কৃতীদের নজর এই জেলার দিকেই। ষাঁড় চুরির ঘটনাকে রাজনৈতিক অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করছে বিজেপি। রেয়াপাড়ার ঘটনার প্রতিবাদে দলের পক্ষ থেকে শুক্রবার প্রতিবাদ মিছিল বের করা হয়। ধর্মীয় ভাবাবেগ জাগিয়ে বিষয়টিকে রাজনৈতিক অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করছে গেরুয়া পার্টি। বিজেপির নন্দীগ্রাম-৩ মণ্ডল সভাপতি সৌমিত্র দে বলেন, স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছে দক্ষিণ ২৪পরগনার দুষ্কৃতীরা। তারা রাতে এসে ষাঁড় চুরি করে নিয়ে যাচ্ছে। এধরনের ঘটনা রুখতে পুলিস উপযুক্ত পদক্ষেপ নিচ্ছে না। যেকারণে পুলিসের গাড়ির ড্রাইভার মারা গেল। এতবড় একটি ঘটনা ঘটানোর পরেও কীভাবে দুষ্কৃতীরা জেলা থেকে পালাতে পারল?