নিজস্ব প্রতিনিধি, তমলুক: যোগদা সৎসঙ্গ পালপাড়া মহাবিদ্যালয়ে গভর্নিং বডি নিয়ে টানাপোড়েনের মাঝেই ২২ এপ্রিল শিক্ষক ও অশিক্ষক কর্মীদের নিয়ে জরুরি বৈঠক ডাকলেন অধ্যক্ষ। বিজ্ঞপ্তি জারি করে ওইদিন বেলা আড়াইটায় কলেজের সেমিনার হলে বৈঠক ডাকা হয়েছে। কলেজের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে সেখানে আলোচনা হবে বলে অধ্যক্ষ নোটিসে উল্লেখ করেছেন। কলেজের অস্থায়ী কর্মীদেরও মিটিংয়ে হাজির থাকতে বলা হয়েছে। এদিকে, ওই কলেজের তৃণমূল ছাত্র পরিষদ ইউনিটের পক্ষ থেকে ফের বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যকে চিঠি পাঠানো হয়েছে। তাতে কলেজের গভর্নিং বডির কার্যকলাপ নিয়ে তদন্তের দাবি জানানো হয়েছে।
প্রতি ছ’মাস অন্তর ওই কলেজে গভর্নিং বডির মিটিং হয়। গত ২ এপ্রিল ২৪ দফা এজেন্ডা নিয়ে মিটিং ছিল। কিন্তু, টিএমসিপি ইউনিটের বিক্ষোভে গভর্নিং বডির পূর্ব নির্ধারিত ওই মিটিং ভণ্ডুল হয়েছে। সেদিন নিগৃহীত হন গভর্নিং বডির সম্পাদক শীতলচন্দ্র দে। গভর্নিং বডির সভা ভেস্তে যাওয়ায় পিএফ, পেনশন, প্রমোশন, স্বশাসিত কলেজ করার এজেন্ডা আপাতত ঝুলে রয়েছে। ছাত্র সংগঠনের দাবি, বর্তমান গভর্নিং বডি অবৈধ। কারণ, রাজ্য সরকারের উচ্চশিক্ষা দপ্তর ২০২২ সালে ১৬ মার্চ ওই কলেজে নতুন গভর্নিং বডি গঠনের নির্দেশ দিলেও তা কার্যকর করা হয়নি। অপরদিকে, গভর্নিং বডির সম্পাদক শীতলচন্দ্র দে-র দাবি, ওই কমিটি সম্পূর্ণভাবে বৈধ। ছাত্র সংগঠনের বক্তব্য সঠিক নয়। গভর্নিং বডি নিয়ে জটিলতা কাটাতে ছাত্র সংগঠন এগরার মহকুমা শাসকের দ্বারস্থ হয়েছে। সেইমতো জেলা প্রশাসন এনিয়ে উচ্চশিক্ষা দপ্তরে একটি চিঠি দিয়েছে। তাতে কলেজের বর্তমান পরিস্থিতি উল্লেখ করা হয়েছে। আগামী ২২ এপ্রিল কলেজের অধ্যক্ষ জরুরি মিটিং ডেকেছেন। সেখানে গভর্নিং বডি ইস্যুতে কলেজের শিক্ষক এবং অশিক্ষক কর্মী প্রত্যেককে অবগত করা হবে। সেইসঙ্গে তাঁরা সকলেই যাতে এই ইস্যুতে কলেজ কর্তৃপক্ষের পাশে থাকেন সেই বিষয়টিও নিশ্চিত করা হবে।
যোগদা সৎসঙ্গ সোসাইটি পরিচালিত ওই কলেজে গভর্নিং বডির সভাপতি হিসেবে আছেন সোসাইটির স্বামী অচ্যুতানন্দ গিরি মহারাজ। সম্পাদক আছেন সোসাইটির আর এক কর্মকর্তা শীতলচন্দ্র দে। ঘটনার সূত্রপাত ২০২২ সালে ১৬ মার্চ উচ্চ শিক্ষা দপ্তরের ডেপুটি সেক্রেটারির নির্দেশিকা নিয়ে। ওইদিন নির্দেশিকা জারি করে পটাশপুরের বিধায়ক উত্তম বারিক গভর্নিং বডির সভাপতি বলে জানানো হয়েছে। নির্দেশিকায় ওই কমিটির সরকারি মনোনীত আরও দু’জন সদস্য হিসেবে জেলা পরিষদ সদস্য পটল আদক ও দেবব্রত পণ্ডার নাম উল্লেখ করা ছিল। শীতলবাবু বলেন, ২০২২ সালে ২৬ মার্চ উচ্চশিক্ষা দপ্তর স্পেশাল কমিশনার এক নির্দেশিকা জারি করে সর্বত্র পুরাতন গভর্নিং বডিকে ছ’মাস এক্সটেনশন করার নির্দেশ দেন। সেইমতো আমাদের পুরনো কমিটি এক্সটেনশনে চলছে। প্রতি ছ’মাস অন্তর কমিটি রিনিউ হয়। গভর্নিং বডির স্বচ্ছতা বজায় রেখে কাজ করছে। টিএমসিপির কলেজ ইউনিটের সভাপতি সুমন দাস বলেন, রাজ্য সরকারের নির্দেশকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে পুরাতন কমিটি বহাল রয়েছে। সেই কমিটি নানা ক্ষেত্রে অনিয়ম করছে। অধ্যক্ষর ভূমিকা যথাযথ নয়। ছাত্র বিক্ষোভে গভর্নিং বডির সভা আটকে যাওয়ায় অধ্যক্ষ জরুরি মিটিং ডেকেছেন। আমরা নিজেদের দাবিপত্র বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য এবং এগরার মহকুমা শাসকের কাছে পাঠিয়েছি। কলেজের অধ্যক্ষ প্রদীপ্তকুমার মিশ্র এনিয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাননি।