বিজেপি কর্মী খুনে চার তৃণমূল নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে ‘হুলিয়া’ নোটিস সাঁটাল এনআইএ
বর্তমান | ২০ এপ্রিল ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি, তমলুক: ময়নায় বাকচায় বিজেপি কর্মী খুনের ঘটনায় চার তৃণমূল নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে হুলিয়া জারি করল এনআইএ। দলের প্রাক্তন অঞ্চল সভাপতি মনোরঞ্জন হাজরা, অঞ্চল ও বুথস্তরের তিন নেতা বুদ্ধদেব মণ্ডল, কমল খুটিয়া ও স্বপন ভৌমিকের বিরুদ্ধে বাকচার বিভিন্ন জায়গায় নোটিস ঝোলানো হয়েছে। সেখানে তাদের পলাতক অভিযুক্ত হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। আগামী ২১এপ্রিল কলকাতা সিটি সেশন কোর্টে মামলার পরবর্তী দিন রয়েছে। সেদিন ওই চারজনকে কোর্টে হাজির হওয়ার জন্য নোটিস ঝোলানো হয়েছে। ওই আদালতের মুখ্য বিচারক ওই চারজনকে পলাতক অভিযুক্ত হিসেবে ঘোষণা করেছেন। শুক্রবার এনআইএ বাকচা এবং গোড়ামহালে এসে ওই নোটিস সাঁটিয়েছে। আদালতের নির্দেশমতো নির্ধারিত দিনে অভিযুক্তরা হাজিরা না দিলে এক মাস পর তাঁদের সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করতে পারবে এনআইএ। ২০২৩সালে ১মে ময়না থানার বাকচা পঞ্চায়েতের অধীন গোড়ামহালে গ্রামে খুন হন বিজয়কৃষ্ণ ভুঁইয়া। তিনি বিজেপির গোড়ামহাল বুথ কমিটির সভাপতি ছিলেন। বোমা ছুড়ে ও গুলি করে তাঁকে খুন করা হয়। হাইকোর্টের নির্দেশে ওই ঘটনার তদন্তভার পায় এনআইএ। খুনের ঘটনায় মোট ৩৫জন তৃণমূল নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে এফআইআর হয়। তালিকায় তৃণমূলের ময়না ব্লক সহ সভাপতি অমিতাভ ভঞ্জ, তৎকালীন অঞ্চল সভাপতি মনোরঞ্জন হাজরা প্রমুখ নেতৃত্বও রয়েছেন। ওই মামলায় ন’জন গ্রেপ্তার হয়েছে। যদিও এখনও অনেকেই ধরাছোঁয়ার বাইরে। গতবছর ১০সেপ্টেম্বর এনআইএ বাকচা ও গোড়ামহাল গ্রামের মোট ১৪জন অভিযুক্তের খোঁজে তল্লাশি চালিয়েছিল। তাদের মধ্যে পাঁচজনের বাড়িতে কেউ না থাকায় বাড়ি সিল করে দিয়েছিল। শুক্রবার ফের এনআইএ বাকচা এবং গোড়ামহাল গ্রামে পৌঁছয়। বাকচা অঞ্চল তৃণমূল সভাপতি ছিলেন মনোরঞ্জন হাজরা। তাঁর বাড়িতে হুলিয়া নোটিস সাঁটানো হয়েছে। এছাড়াও গোড়ামহাল গ্রামের তিনজন বুদ্ধদেব মণ্ডল, কমল খুটিয়া ও স্বপন ভৌমিকের বাড়িতে ওই নোটিস ঝোলানো হয়েছে। এনআইএ তাদের বাড়িতে যাওয়ার সময় কেউ ছিলেন না। প্রত্যেকের বাড়িতে সিটি সেশন কোর্টের মুখ্য বিচারকের ইস্যু করা হুলিয়া নোটিস ঝোলানো হয়েছে। আগামী ২১এপ্রিল মামলার পরবর্তী দিনে তাদের হাজির থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। বিজেপির ময়না-৩ নম্বর মণ্ডল সভাপতি উত্তম সিংহ বলেন, আমাদের বুথ সভাপতি খুনের ঘটনায় চার তৃণমূল নেতার বিরুদ্ধে হুলিয়া নোটিস সাঁটিয়েছে এনআইএ। তাঁদের বাড়ি ছাড়াও নানা পাবলিক প্লেসে ওই নোটিস ঝোলানো হয়েছে। বাকচা পঞ্চায়েত অফিসেও নোটিস সাঁটানো হয়েছে। নিয়ম অনুযায়ী, ওই নোটিস মোতাবেক নির্ধারিত দিনে হাজিরা না দিলে সম্পত্তি ক্রোক করা যায়। আমাদের ধারণা, অভিযুক্তরা তদন্তে সহযোগিতা না করলে জাতীয় তদন্তকারী সংস্থা ওই পথে এগবে। তৃণমূল কংগ্রেসের ময়না ব্লক সভাপতি সন্দীপব্রত দাস বলেন, ওই খুনের ঘটনায় গোটা বাকচা পঞ্চায়েতের আমাদের একচেটিয়া নেতা-কর্মীদের নাম জড়ানো হয়েছে। তাদের অধিকাংশ এই ঘটনার সঙ্গে যুক্ত নয়। তদন্তকারী সংস্থা তাঁদেরও টার্গেট করছে।