নিজস্ব প্রতিনিধি, আসানসোল: চিকিৎসার গাফিলতির অভিযোগ রোগীর আত্মীয়দের তাণ্ডবে আতঙ্ক ছড়াল দুর্গাপুরের একটি বেসরকারি মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। শুক্রবার রাতে দুর্গাপুর থানার শোভাপুরে এই ঘটনায় তিন রাউন্ড গুলি চালানো হয় বলে অভিযোগ। অভিযোগ, দুর্গাপুরের প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ী তাপস রায় ব্যাগ থেকে পিস্তল বের করে একের পর এক গুলি চালাতে থাকে। পুলিস ও নিরাপত্তারক্ষীদের সঙ্গে রোগীর আত্মীয়দের ব্যাপক ধস্তাধস্তি হয়। তারপরই বিশাল পুলিস বাহিনী এলাকায় এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। ওই ব্যবসায়ী সহ চারজনকে পুলিস গ্রেপ্তার করে। পুলিস জানিয়েছে, ব্যবসায়ীর লাইসেন্স প্রাপ্ত পিস্তলটি বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে।
এসিপি সুবীর রায় বলেন, রোগীর আত্মীয়রা চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগ তুলে বিক্ষোভ দেখানোর সময়ে গুলি চালায়। আমরা এই ঘটনায় চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। পুলিস ও নিরাপত্তা রক্ষীকে মারধরের জন্য পৃথক মামলা রুজু হচ্ছে।
দুর্গাপুরের কোকওভেন থানার অন্তর্গত অঙ্গদপুর রাতুড়িয়ার এক বাসিন্দা মঙ্গলবার দুর্ঘটনায় গুরুতর জখম হন। একাধিক হাসপাতাল ঘুরে শেষে তাঁকে শোভাপুরের বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। রোগীর চিকিৎসা নিয়ে শুক্রবার থেকেই রোগীর আত্মীয়রা দফায় দফায় হাসপাতালে বিক্ষোভ দেখান। তাঁদের অভিযোগ, রোগীর সঠিক চিকিৎসা হচ্ছে না। চিকিৎসকও তাঁদের সঙ্গে কথা বলছেন না। এনিয়ে শুক্রবার রাতে ও হাসপাতাল চত্বরে উত্তেজনা ছড়ায়। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের অভিযোগ, রোগীর আত্মীয়রা দল বেঁধে চিকিৎসকের সঙ্গে কথা বলার দাবি জানান। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়ে দেয়, এটি নিয়ম বর্হিভূত। এনিয়ে দু’পক্ষের বচসা শুরু হয়। খবর পেয়ে পুলিস হাসপাতালে এসে চিকিৎসকের সঙ্গে রোগীর কয়েকজন আত্মীয়র দেখা করিয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা করে। কিন্তু, বিক্ষোভকারিদের দাবি, তাঁরা সকলেই চিকিৎসকের সঙ্গে দেখা করবেন। এদিনে পুলিস ও নিরাপত্তারক্ষীর সঙ্গে তাদের তীব্র ধস্তধস্তি শুরু হয়। তখনই কয়েকজন পুলিসকর্মী ও নিরাপত্তা রক্ষীকে মারধর করা হয় বলে অভিযোগ। সেই সময়েই ওই ব্যবসায়ী লাইসেন্সপ্রাপ্ত পিস্তল থেকে গুলি ছোড়ে বলে অভিযোগ। এই ঘটনায় হাসপাতাল চত্বরে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। গুলির শব্দ শুনে অনেকে ছুটে পালাতে থাকে। গুলি চলার খবর পেয়ে বিশাল পুলিস বাহিনী হাসপাতাল চত্বরের দখল নেয়। ব্যবসায়ী সহ চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। পুলিসের দাবি, দাদাগিরি দেখাতে গিয়েই এই কাণ্ড ঘটিয়েছে ওই ব্যবসায়ী।
বেসরকারি ওই হাসপাতালের পক্ষ থেকে শনিবার একটি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। সেখানে ঘটনা নিয়ে তীব্র উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়। তারা জানিয়েছে, চিকিৎসক, নার্স ও পড়ুয়ারা আতঙ্কে রয়েছেন। চিকিৎসা ও শিক্ষা দুই ক্ষেত্রকেই প্রভাবিত করেছে এই ঘটনা। এতে কাজের পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে।