নিজস্ব প্রতিনিধি, আসানসোল ও সংবাদদাতা, দুর্গাপুর: পাণ্ডবেশ্বরে জোড়া কঙ্কাল উদ্ধার ঘিরে তীব্র চাঞ্চল্য ছড়াল। শনিবার দুপুরে কুমারডিহি এলাকার ডিহি পার্কে মাথার খুলি সহ হাড়-কঙ্কাল দেখতে পাওয়া যায়। ছাগল চরাতে যাওয়া কয়েকজন মহিলা প্রথম সেগুলি দেখতে পান। তাঁরা এলাকায় এসে বিষয়টি জানালে পুলিসের কাছে খবর পৌঁছয়। পুলিস গিয়ে তা উদ্ধার করে। সেখানে জুতো ও জ্যাকেটও পড়ে থাকতে দেখা যায়। কুমারডিহি এলাকায় গতবছর ১ডিসেম্বর যমজ বোন নিখোঁজ হয়ে গিয়েছিল। কঙ্কালগুলি নিখোঁজ চতুর্থ শ্রেণির দুই পড়ুয়ার কি না, তা নিয়ে জল্পনা ছড়িয়েছে। পরিবারের একাংশের দাবি, দেহগুলি দুই বোনেরই। যদিও হাড়ের ডিএনএ পরীক্ষা ছাড়া এনিয়ে নিশ্চিত করে কোনও মন্তব্য করতে চাইছে না পুলিস।
ডিসি ভিজি সতীশ পশুমূর্তি বলেন, দু’টি কঙ্কার উদ্ধার হয়েছে। আমরা ডিএনএ পরীক্ষার জন্য নমুনা সংগ্রহ করেছি। ডিএনএ রিপোর্টের পরই এগুলি যমজ বোনের কি না, তা নিশ্চিত হওয়া যাবে।
প্রসঙ্গত, গতবছর ডিসেম্বরে পাণ্ডবেশ্বর থানার কুমারডিহি গ্রামে চতুর্থ শ্রেণির দুই পড়ুয়া স্নেহা ও স্নিগ্ধা বাউরি নিখোঁজ হয়ে যায়। যমজ দুই বোন মামাবাড়িতে দাদু, দিদার কাছেই থাকত। অণ্ডালের কাজোড়ায় বাবা বাপি বাউরির বাড়ি ছিল। স্ত্রী অন্যত্র চলে গেলেও বাপির সঙ্গে মেয়েদের ভালো সম্পর্ক ছিল। এই অবস্থায় বাড়ির কাছ থেকে তাদের কে নিয়ে গেল, তা নিয়ে শোরগোল পড়ে যায়। দুই বোন নিখোঁজ হওয়ার পরদিনই ওই এলাকায় স্থানীয় এক যুবকের দেহ উদ্ধার হয়। তা ঘিরে রহস্য দানা বাঁধে। যদিও পুলিস সেই সময় জানিয়েছিল, ওই যুবক আত্মহত্যা করেছেন। যমজ বোন নিখোঁজের সঙ্গে তার কোনও যোগ নেই।
কয়েক মাস পেরিয়ে গেলেও নিখোঁজ রহস্যের কিনারা করতে পারেনি পুলিস। এই ঘটনায় বাউরি সমাজ একাধিকবার আন্দোলনে নামে। পুলিস কমিশনারের অফিসে এসেও দুই নাবালিকাকে খোঁজার দাবি জানানো হয়। কিন্তু, পুলিস তাদের উদ্ধার করতে ব্যর্থ হয়। প্রায় সাড়ে চার মাস পর কুমারডিহির কয়েকশো মিটার দূরে পার্কের পিছন থেকে জোড়া কঙ্কাল উদ্ধার হয়। দুই নাবালিকার বাবা বাপিবাবু কঙ্কালের পাশে পড়ে থাকা জামা-জুতো দেখে দাবি করেন, সেগুলি তাঁর মেয়েদেরই হতে পারে। পুলিসের দাবি, নাবালিকাদের খুঁজতে তারা সবরকম চেষ্টা করেছে। এলাকায় চিরুনি তল্লাশিও করা হয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দারা বলেন, এই দু’টি দেহ নিখোঁজ যমজ বোনের প্রমাণিত হলে পুলিসি তদন্ত নিয়ে প্রশ্ন উঠবেই। কারাই বা দুই বালিকার এমন নির্মম পরিণতি ঘটাল, পুলিস কেন কিনারা করতে পারল না, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।