সুগার-প্রেশার-জ্বর সহ বিভিন্ন রোগের ১৩১ ওষুধ নিম্নমানের, শিশুদের জন্য কম্বিনেশন সিরাপ ব্যবহার নয়
বর্তমান | ২০ এপ্রিল ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: শত উদ্যোগেও ওষুধের গুণমান সুনিশ্চিত করা যাচ্ছে না কোনওভাবে। এবার কেন্দ্রীয় সরকার চলতি বছরের মার্চ মাসের নিম্নমানের ওষুধের তালিকা প্রকাশ করল। তাতে দেখা যাচ্ছে, নির্দিষ্ট ব্যাচ নম্বরের ১৩১টি জরুরি ওষুধের গুণগত মান অত্যন্ত নিম্ন। ওষুধগুলিকে কেন্দ্র এনএসকিউ বা ‘নট অব স্ট্যান্ডার্ড কোয়ালিটি ড্রাগস’ তালিকাভুক্ত করেছে। ফলে সব রাজ্যই এই ব্যাচ নম্বরের ওষুধগুলি বাজার থেকে তুলে নেবে। এর মধ্যে প্যারাসিটামল, সুগার, প্রেশার, গ্যাস, হাঁচি-কাশির ওষুধ যেমন আছে, তেমনই আছে ইনসুলিন, বিভিন্ন দামি অ্যান্টিবায়োটিক। ১৩১টির মধ্যে ৭১টি ওষুধকে কেন্দ্রীয় ড্রাগ কন্ট্রোল এবং ৬১টি ওষুধকে বিভিন্ন রাজ্যের ড্রাগ কন্ট্রোল নিম্নমানের বলে ঘোষণা করেছে। এদিকে, কেন্দ্র এক গেজেট নির্দেশনামায় জানিয়েছে, অ্যালার্জি, জ্বর, ঠান্ডা লাগা ইত্যাদি ক্ষেত্রে বহুল ব্যবহৃত বাচ্চাদের একটি কম্বিনেশনের বিভিন্ন কোম্পানির সিরাপ বানানো বা বিক্রি করা যাবে না সুর্নির্দিষ্ট সতর্কীকরণ ছাড়া। সেটি হল ক্লোরফেনিরামাইন ম্যালেট ও ফিনাইলেফ্রিন হাইড্রোক্লোরাইডের কম্বিনেশন। আবশ্যিক সতর্কীকরণটি হল, চার বছরের কম বয়সের বাচ্চাদের ক্ষেত্রে এই কম্বিনেশন ব্যবহার করাই যাবে না।
শনিবার একাধিক দপ্তর এবং জেলা প্রশাসনের সঙ্গে বৈঠকে রাজ্যের মুখ্যসচিব মনোজ পন্থ জাল ওষুধ নিয়ে কড়া বার্তা দেন। তিনি বলেন, ‘ড্রাগ কন্ট্রোল ভেজাল ওষুধ নিয়ে যেসব বিধিনিষেধের কথা জানিয়েছে, সেগুলি মেনে চলতে হবে। কোনওভাবেই যেন এই ওষুধ বাজারে না যায়।’ কোভিড-পর্বে তৈরি হওয়া ২০ বেডের হাসপাতালগুলি যাতে স্টোররুমে পরিণত না হয়ে যায়, তা নিয়েও এদিন তিনি সতর্ক করেন। ডেঙ্গু মোকাবিলায়ও সবাইকে সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে।
ড্রাগ কন্ট্রোল সূত্রে জানা গিয়েছে, সম্প্রতি হাওড়ার আমতার জাল ওষুধের মামলাটি ফের উঠেছিল উলুবেড়িয়া আদালতে। জাল ওষুধ চক্রে জড়িত থাকার অভিযোগ উঠেছিল বেলেঘাটার চাউলপট্টি রোডের দু’টি দোকানের বিরুদ্ধে। দোকানদু’টি বন্ধ করে দিয়েছিল ড্রাগ কন্ট্রোল। এবার ওই দু’টি দোকানকে কারণ দর্শানোর নোটিস পাঠিয়েছে দপ্তর। নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে উত্তর না মিললে তাদের লাইসেন্স বাতিল করে দেওয়া হবে। সংশ্লিষ্ট এক আধিকারিকের কথায়, ‘মোট ১৩টি ওষুধ নিয়ে এখন তদন্ত চলছে। এর মধ্যে অধিকাংশই প্রেশারের ওষুধ। এছাড়া প্রস্টেটের ওষুধ, অ্যালবুমিন সহ নানা ধরনের ওষুধ রয়েছে। সম্প্রতি প্রস্টেটের এক ধরনের ওষুধের পরীক্ষা রিপোর্ট দপ্তরের হাতে এসেছে। সেটিও জাল বলে জানা গিয়েছে।’