এই সময়: আজকাল অধিকাংশ হার্ট অপারেশনের জন্য আর পাঁজর কেটে ওপেন সার্জারি করার দরকার পড়ে না। কয়েকটি ছিদ্র করে মিনিমালি ইনভেসিভ কার্ডিয়াক সার্জারি (এমআইসিএস)–র মাধ্যমে হৃদযন্ত্রের শল্য চিকিৎসা করাই ইদানীং দস্তুর। এতে রক্তক্ষরণ ও যন্ত্রণা কম হয়, রোগীও দ্রুত সুস্থ হয়ে ওঠেন।
বহু দিন ধরে কলকাতাতেও এই সার্জারি হচ্ছে। কিন্তু চিকিৎসকদের আক্ষেপ, এ নিয়ে জনমানসে এখনও তেমন সচেতনতা গড়ে ওঠেনি। ফলে সব দিক থেকে বেশি সুবিধে থাকা সত্ত্বেও ওপেন সার্জারির চেয়ে একটু বেশি ব্যয়বহুল বলে এমআইসিএস পদ্ধতি বেছে নিতে গিয়ে সংশয়ী হয়ে পড়েন রোগী–পরিজন। তবে ধীরে হলেও পরিস্থিতি বদলাচ্ছে বলে মত চিকিৎসকদের।
অ্যাপোলো হাসপাতালের কার্ডিয়াক সার্জেন মহম্মদ রেহান সইদ বলেন, ‘এমআইসিএস–এ যেহেতু সামান্যই কাটাছেঁড়া, নামমাত্র রক্তপাত হয়, তাই পুরো সুস্থ হয়ে উঠতে ওপেন সার্জারির মতো দু’–তিন মাস সময় লাগে না। সপ্তাহ দুয়েকের মাথাতেই রোগী অস্ত্রোপচার–পরবর্তী যাবতীয় ব্যথা–বেদনার সমস্যা মিটিয়ে স্বাভাবিক জীবনযাপনে ফিরে আসতে পারেন।’
তিনি জানান, অনেকের ধারণা আছে, এমআইসিএস–এর সাহায্যে মামুলি হার্টের অপারেশনই একমাত্র করা সম্ভব। বাস্তব হলো, এমআইসিএস পদ্ধতিতে সব ধরনের বাইপাস সার্জারিই করা সম্ভব। চার–পাঁচটি হৃদ–ধমনির বাইপাস করাও সম্ভব। এবং এমআইসিএস–এ ঝুঁকি কম বলে, কো–মর্বিডিটি রয়েছে, এমন রোগীর ক্ষেত্রে এই পদ্ধতিতে সার্জারি করাই বিচক্ষণতা।
তাই একান্ত সমস্যা না থাকলে, আজকাল কার্ডিয়াক সার্জেনরা যথাযথ পরিকাঠামোর হাসপাতালে ওপেন হার্ট সার্জারির বদলে এমআইসিএস বা কি–হোল বাইপাস সার্জারি করতেই বেশি পছন্দ করেন। এতে বাঁ দিকের বুকে দু’টি পাঁজরের হাড়ের মধ্যে ৩–৪ সেন্টিমিটার কেটে তার মধ্যে দিয়েই অপারেশন সেরে ফেলেন ডাক্তাররা। বেশি দিন হাসপাতালে থাকতে হয় না রোগীকেও।