আত্মরক্ষার জন্য এ বার সীমান্তবর্তী নির্দিষ্ট কিছু এলাকায় হিন্দুদের বৈধ ছাড়পত্র (লাইসেন্স)-সহ আগ্নেয়াস্ত্র দেওয়ার দাবি তুললেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী! সেই সঙ্গেই এত দিন হিন্দুদের এক জোট করার জন্য বার বার বার্তা দিচ্ছিলেন তিনি। এ বার এক ধাপ এগিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিধানসভা কেন্দ্র ভবানীপুরে দাঁড়িয়ে শুভেন্দু স্লোগান দিলেন, ‘মমতা ভাগাও, হিন্দু বাঁচাও’! বিরোধী দলনেতার এই সব মন্তব্যকে ‘বিষ’ হিসেবে উল্লেখ করে পাল্টা সরব হয়েছে শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস।
‘বাঙালি হিন্দু বাঁচাও’, এই স্লোগানকে সামনে রেখে রাজ্য বিজেপির যুব মোর্চা শনিবার নেতাজি ভবন থেকে ভবানীপুর পর্যন্ত মিছিলের ডাক দিয়েছিল। বিরোধী দলনেতার নেতৃত্বে হওয়া ওই মিছিলে যোগ দিয়েছিলেন মোর্চার রাজ্য সভাপতি ইন্দ্রনীল খাঁ, বিজেপি নেতা তমোঘ্ন ঘোষ, অনুপম ভট্টাচার্য প্রমুখ। মিছিল শেষে সভা থেকে মুর্শিদাবাদ-সহ সাম্প্রতিক একাধিক গোলমালের প্রেক্ষিতে বিরোধী দলনেতা বলেছেন, “এনআইএ না হলে, কেন্দ্রীয় বাহিনী না থাকলে হিন্দুরা বাঁচবে না।” এর পরেই তাঁর সংযোজন, “বিএসএফ-সিআরপি সব সময় থাকে না। বাংলাদেশ থেকে যে সব এলাকা ৫০ কিলোমিটারের মধ্যে এবং যেখানে হিন্দু জনসংখ্যা ২০%, সেখানে তাঁদের বৈধ ছাড়পত্র-সহ আগ্নেয়াস্ত্র দেওয়া উচিত। আত্মরক্ষার অধিকার প্রত্যেকের আছে।” এর পরেই মমতার উদ্দেশে ভোট-রাজনীতির অভিযোগ করেছেন বিরোধী দলনেতা। তাঁর বক্তব্য, “মোথাবাড়িতে হেরেছেন। ফরাক্কা, শমসেরগঞ্জে পিছিয়ে আছেন। তাই বেছে বেছে আক্রমণ। চতুর্থ বার মুখ্যমন্ত্রী হতে হবে। ৩৩% ভোট যাতে সঙ্গে থাকে, তাই এই ঘটনা। তার সঙ্গে অভাবী হিন্দুর ভোট নেব। এক দিকে রাজীব কুমার, মনোজ বর্মা, অন্য দিকে সিদ্দিকুল্লা, সওকাত মোল্লা।”
রাজ্যে ক্ষমতায় এলে মুর্শিদাবাদ ‘ঠান্ডা’ করার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন শুভেন্দু! তাঁর বক্তব্য, “মুর্শিদাবাদের গোলমালের হিসাব নেব। সরকারে এলে দুষ্কৃতীদের বাড়িতে বুলডোজ়ার চলবে। ১২% সুদ-সহ পুরো টাকা আদায় করব।”
শুভেন্দুর মন্তব্যের প্রেক্ষিতে পাল্টা সরব হয়েছে তৃণমূল। দলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষের বক্তব্য, “বিরোধী দলনেতা আগে বলেছিলেন, বাংলাদেশ থেকে ঢুকে বাংলাদেশের কায়দায় লুট করে নিয়ে চলে গিয়েছে। এটা তা হলে বিএসএফের ব্যর্থতা। ওঁকে যদি ঠান্ডা করতেই হয়, বাংলাদেশে গিয়ে ঠান্ডা করুন! পশ্চিমবঙ্গের মধ্যে বিষ ছড়িয়ে অশান্তি করছেন কেন?”
হিন্দুদের উপরে ‘অত্যাচারে’র অভিযোগকে সামনে রেখে বারুইপুরের পুলিশ সুপারের দফতর ঘেরাও করেছিল বিজেপি। হয়েছে ধিক্কার মিছিলও। অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতে বিরাট পুলিশ বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছিল। বিজেপির যাদবপুর সাংগঠনিক জেলার সভাপতি মনোরঞ্জন জোতদারের অভিযোগ, “ওয়াকফ-বিরোধী আন্দোলনের নামে নির্যাতন করা হচ্ছে। প্রশাসন কোনও ব্যবস্থা নিচ্ছে না।”