‘বিদ্রোহী’ চার্চিলই আই লিগ চ্যাম্পিয়ন, ফেডারেশনের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক ক্রীড়া আদালতে যাচ্ছে ইন্টার কাশী
আনন্দবাজার | ২০ এপ্রিল ২০২৫
গত ৬ এপ্রিল আই লিগ শেষ হয়ে গেলেও চ্যাম্পিয়ন দলের নাম ঘোষণা করেনি ফেডারেশন। শনিবার আপিল কমিটির বৈঠকের পর আচমকাই চার্চিল ব্রাদার্সকে চ্যাম্পিয়ন হিসাবে ঘোষণা করা হল। এই চার্চিলই কিছু দিন আগে ফেডারেশনের বিরুদ্ধে অস্বচ্ছ কাজকর্ম এবং পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ তুলে সুপার কাপ থেকে নাম তুলে নিয়েছিল। ‘বিদ্রোহী’ চার্চিলকে কোন পথে চ্যাম্পিয়ন ঘোষণা করা হল তা এখনও জানা যায়নি। তবে এই রায়ের পরে আন্তর্জাতিক ক্রীড়া আদালত কোর্ট অফ আরবিট্রেশন ফর স্পোর্টসে (ক্যাস) যাওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়ে রেখেছে ইন্টার কাশী।
আই লিগ শেষ হওয়ার পর চার্চিল ৪০ পয়েন্টে শেষ করে। ইন্টার কাশী শেষ করে ৩৯ পয়েন্টে। সমস্যা ইন্টার কাশীর একটি ম্যাচকে কেন্দ্র করে। গত ১৩ জানুয়ারি নামধারী এফসি-র সঙ্গে খেলা ছিল কাশীর। সেই ম্যাচে কাশী ০-২ গোলে হারে। তবে ম্যাচের পরেই নামধারীর বিরুদ্ধে সর্বভারতীয় ফুটবল ফেডারেশনের (এআইএফএফ) কাছে অভিযোগ করে কাশী। তাদের দাবি, ওই ম্যাচে নামধারী অবৈধ ভাবে ক্লেডসন কার্ভালহো দা সিলভাকে খেলিয়েছে। আগেই চারটি হলুদ কার্ড দেখায় ওই ম্যাচে নির্বাসিত থাকার কথা ছিল ক্লেডসনের। কিন্তু তিনি কাশীর বিরুদ্ধে ওই ম্যাচে খেলেন।
ফেডারেশনের শৃঙ্খলারক্ষা কমিটি কাশীর আবেদন শুনে সেই ম্যাচে নামধারীকে পরাজিত ঘোষণা করে এবং কাশীকে তিন পয়েন্ট দিয়ে দেয়। কিন্তু ২৭ মার্চ নিজেদের সেই সিদ্ধান্ত স্থগিত রাখে তারা। এতে তীব্র প্রতিবাদ করে কাশী। আইনি হুমকিও দিয়ে রাখে তারা। তাতেও লাভ হল না। স্থগিতাদেশ এ দিন তুলে নেওয়ায় ওই ম্যাচ থেকে তিন পয়েন্ট পাবে না কাশী। তাই চার্চিলই চ্যাম্পিয়ন।
এ দিন ইন্টার কাশী এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, ৬ এপ্রিলের আগেই যে সিদ্ধান্ত নেওয়া যেত তা অনাবশ্যক দীর্ঘায়িত করা হয়েছে। পাশাপাশি, আপিল কমিটির শুনানিতে যে পদ্ধতি অনুসরণ করা হয়েছে তা ঠিক নয়। তাই ‘স্বচ্ছ’ বিচার পেতে ক্যাসের দ্বারস্থ হচ্ছে তারা। কাশীর দাবি, শুরু থেকেই তারা সাধারণ একটি নিয়ম কাজে লাগিয়ে সমস্যা সমাধানের আর্জি জানালেও তা শোনা হয়নি। সঠিক বিচার পেতে সব রকম চেষ্টা করবে তারা।
এই নিয়ে তৃতীয় বার এবং ১২ বছর পর আই লিগ জিতল চার্চিল। রায় শুনে ক্লাবের মালিক আলেমাও চার্চিল বলেছেন, “ঈশ্বর এবং গোয়ার মানুষকে ধন্যবাদ। ওদের সমর্থনের জন্যই আমরা চ্যাম্পিয়ন।” তবে সুপার কাপে না খেলা নিয়ে এখনও অনড় তারা। আলেমাও বলেছেন, “ফেডারেশনকে লিখিত আকারে চিঠি পাঠিয়ে না খেলার কথা জানিয়েছিলাম। তার বদল হচ্ছে না। কারণ সব খেলোয়াড়ই বাড়ি ফিরে গিয়েছে। আই লিগ জেতার কথা আগে জানলে ওদের রেখে দিতাম।”
আই লিগ শেষ হওয়ার পরেও তাদের চ্যাম্পিয়ন ঘোষণা না করায় এই চার্চিলই ফেডারেশনকে আক্রমণ করে। ‘অস্বচ্ছ, দুর্নীতিগ্রস্ত’ বলে অভিহিত করে তারা। জানায়, ফেডারেশন তাদের খেতাব ‘চুরি’ করে নিয়েছে। ইন্টার কাশীকে রেফারিরা অন্যায্য সুবিধা পাইয়ে দিচ্ছেন এই অভিযোগ তুলে পাঁচটি ক্লাবের সঙ্গে জোট বেঁধে ফেডারেশনকে চিঠিও লেখে তারা। আই লিগ জেতার পর এই ‘বিদ্রোহ’ থাকে কি না, সেটাই এখন প্রশ্ন।