সুমন ঘোষ, বেলদা
২০০৫ সালের স্বপ্ন। ২০২৫-এ কি সেই স্বপ্ন পূরণ হবে? বিধায়কের সহাস্য মন্তব্য, 'স্বপ্নপূরণ কী মশাই, এটাই হবে জেলার সেরা অডিটোরিয়াম!' ২০০৫। বামফ্রন্ট জমানা। বিধায়ক ও রাজ্যের মন্ত্রী সূর্যকান্ত মিশ্র। তারপরে কেটে গিয়েছে কুড়ি-কুড়িটা বছর। এখন ২০২৫। ভরা তৃণমূল জমানা। বিধায়ক সূর্য অট্ট। বিধানসভা নারায়ণগড়। জেলা পশ্চিম মেদিনীপুর। আর যে এলাকার মানুষ এতদিন হা-পিত্যেশ করে বসে আছেন সেই এলাকার নাম বেলদা।
একদা যে বেলদায় অডিটোরিয়াম তৈরির স্বপ্ন দেখেছিলেন সিপিএম নেতৃত্ব। কিন্তু পিলার ছাড়া কিছুই তৈরি হয়নি বলে অভিযোগ। এ বার সেখানেই হচ্ছে অডিটোরিয়াম। তার জন্য আগে বরাদ্দ হয়েছিল ৮৫ লক্ষ টাকা। পরে বরাদ্দ হয়েছে ২ কোটি ৬০ লক্ষ টাকা। নারায়ণগড়ের বিধায়ক সূর্যকান্ত অট্টের কথায়, 'ওই টাকায় ১৮০০ আসনের অত্যাধুনিক অডিটোরিয়াম হবে বেলদায়। এত বড় অডিটোরিয়াম হবে যা আমাদের জেলাতেও নেই।'
বেলদায় এই অডিটোরিয়ার তৈরির জন্য অবশ্য কোনও একটি বিভাগ টাকা দেয়নি। এর জন্য বিধায়ক যেমন বিধায়ক তহবিল থেকে টাকা দিয়েছেন, তেমনই টাকা দিয়েছে এসএসি-এসসটি দপ্তর, পঞ্চায়েত সমিতি। পঞ্চদশ ফিনান্স থেকেও মিলেছে টাকা। কাজ প্রায় শেষের পথে। খুব শিগগির উদ্বোধনও করা হবে। তারপরে সবার জন্য ওই অডিটোরিয়াম খুলে দেওয়া হবে বলেই প্রশাসন জানিয়েছে।
বেলদা বর্ধিষ্ণু এলাকা। পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার নিরিখে ব্যবসার একটি বড় কেন্দ্রও বলা যায়। স্বাভাবিক কারণে, নানা ধরনের অনুষ্ঠান হয় এখানে। কিন্তু এলাকায় অডিটোরিয়াম না-থাকায় বিভিন্ন মিটিং, আলোচনা সভা বা সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান করতে হলে খোলা মাঠে প্যান্ডেল খাটিয়ে করতে হতো। তবে সেটা নানা কারণে বেশ ঝুঁকির ছিল। বিশেষত, বর্ষাকাল বা শীতকালে। কালবৈশাখী বা নিম্নচাপের চাপ তো আছেই।
এই অডিটোরিয়াম তৈরি হলে ভবিষ্যতে সেই সমস্যা আর থাকবে না বলেই সকলের অভিমত। স্থানীয় বাসিন্দাদের কথায়, 'এই ধরনের অডিটোরিয়াম বেলদার মতো শহরে খুব জরুরি। কিন্তু নানা কারণে তা হয়নি। অবশেষে কাজ সম্পূর্ণ হলে বেলদার মানুষ উপকৃত হবেন। বেলদা থেকে কয়েক কিলোমিটার দূরে খড়গপুর বা খড়গপুর লাগোয়া এলাকায় অনুষ্ঠানের আয়োজন করতে হবে না। নিজেদের এলাকাতেই সকলে অনুষ্ঠান করার সুযোগ পাবেন।'