• মাঠ ভরাতে ভরসা তিনি! বক্তা তালিকাতেও নতুন, বন্যা টুডুর অপেক্ষায় ব্রিগেড
    এই সময় | ২০ এপ্রিল ২০২৫
  • সুজয় মুখোপাধ্যায়

    গুরুগম্ভীর রাজনৈতিক শব্দবন্ধ নয়, দলের নেতা-নেত্রীদের থেকে মেঠো-ঝাঁঝালো ভাষাতেই বক্তব্য শুনতে চাইছেন ব্রিগেডমুখী কর্মী-সমর্থকরা। শ্রমিক-কৃষক-খেতমজুর সংগঠনদের ডাকা রবিবার বাম ব্রিগেডের মঞ্চে শোনা যাবে তেমনই এক মেঠো কণ্ঠের বক্তৃতা। না, মীনাক্ষী মুখোপাধ্যায় নন। এ দিন ‘টক অফ দ্য টাউন’ বন্যা টুডু। কে তিনি?

    খেতমজুর ইউনিয়নের নেত্রী বন্যা টুডু। রবিবার ব্রিগেডে তিনি অন্যতম প্রধান বক্তা। শীর্ষনেতাদের ভিড়ে গ্রাম্য এই নেত্রী একমাত্র মহিলা বক্তা। বিভিন্ন ছোটবড় জসভায় হুগলির গুড়াপ গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রাক্তন প্রধান এই বন্যা টুডুর বক্তৃতা ইতিমধ্যেই নজর কেড়েছে। মেঠো ভাষায় তৃণমূল-BJP-কে তাঁর ঝাঁঝালো আক্রমণ পছন্দ করছেন বাম কর্মী-সমর্থকরা। ফলে এ বারের ব্রিগেডে তাঁর বক্তব্য শুনতে উৎসুকদের ভিড় থাকবে বলেই মনে করছে আলিমুদ্দিন। তাই মহম্মদ সেলিম, অনাদি সাহু, নিরাপদ সর্দার, অমল হালদার, সুখরঞ্জন দে-র পাশাপাশি বন্যা টুডুও বামেদের মেহনতি মানুষের ব্রিগেডের মুখ।

    সম্প্রতি তিনি দাদপুরে লাল ঝান্ডা কাঁধে নিয়ে আদিবাসীদের জমি বেহাত হওয়া আটকে বঙ্গ রাজনীতিতে নজর কেড়েছেন। তাঁর সেই ভিডিয়ো ইতিমধ্যেই সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল। সেই জনপ্রিয়তাকেই এ বার কাজে লাগাতে চাইছে দল।

    ২০০১ সাল থেকে DYFI ব্লক কমিটির সদস্য হিসেবে বাম রাজনীতিতে পা দেন বন্যা টুডু। তার পর যুক্ত হন মহিলা সংগঠনের সঙ্গে। কৃষক সমিতিতেও কাজ করেছেন। ২০১৫ সালে খেত মজুর সংগঠনের নেত্রী হিসেবে পরিচিত হন। ২০১১ সালে এক জনসভায় তাঁর চুলের মুঠি ধরে স্টেজ থেকে নামিয়ে দেওয়ার অভিযোগ ঠিল তৃণমূলের বিরুদ্ধে। বক্তব্য রাখতে দেওয়া হয়নি। সেই বন্যাই প্রথমবার ব্রিগেডের মঞ্চে বক্তব্য রাখতে চলেছে। সামান্য বুক দুরুদুরু? দাপুটে নেত্রী এই সময় অনলাইনকে বলেন, ‘ভয় কীসের? আমরা মেহনতি খেটে খাওয়া মানুষ। আমাদের জন্যই এই ব্রিগেড।’ রাজনীতির পাশাপাশি বাস্তবিক রূপেই মাঠে পড়ে থাকেন এই খেত মজুর সংগঠনের নেত্রী। ধান বপন, বীজ রোপন থেকে শুরু করে সার দেওয়ার কাজও করেন।

    গুড়াপের চেরাগ্রাম লহরপুরের প্রত্যন্ত এলাকার এই বাসিন্দার বাড়িতে রয়েছেন স্বামী, ছেলে ও বউমা। সকলেই CPIM-এর সদস্য। বন্যার জীবনের প্রথম ব্রিগেড বক্তৃতা নিয়ে উচ্ছ্বসিত তাঁরাও।

    মঞ্চ থেকে কী বার্তা দিতে চলেছেন বন্যা টুডু? তিনি বলেন, ‘যে মানুষগুলো দিন আনে দিন খায়, মজুরি পায় না,, তাঁদের কথা বলব। চোরেদের সরকারের বিরুদ্ধে সরব হব। বামফ্রন্ট সরকার কাজ এনেছিল, সেই কাজ বন্ধ। বেকার ছেলেরা পিঠে ব্যাগ নিয়ে কেরালায় চলে যাচ্ছে। ১০০ দিনের কাজ ২০০ দিন করার আহ্বান জানাব।’

    ‘শূন্য’ তকমা ঘোচাতে পারবে বামেরা? ২৬-এর লক্ষ্য কী? বন্যা টুডুর জবাব, ‘বামেদের বলা হচ্ছে জিরো। আমাদের নাকি চোখে দেখা যায় না। আজকের ব্রিগেড দেখে যারা বলছে দূরবীনের দেখা যায় না, তাঁদের ঘুম ছুটে যাবে। মেহনতি মানুষ ঝান্ডা ধরেছে, কোমর বেঁধে নেমে পড়েছে। খেটে খাওয়া মানুষ বুঝে গিয়েছে, লালপার্টির সরকারই দরকার।’

  • Link to this news (এই সময়)