• কেক-পেস্ট্রির ব্র্যান্ডকে চ্যালেঞ্জ ছুড়েছে দাদা-ভাই
    এই সময় | ২০ এপ্রিল ২০২৫
  • সব্যসাচী ঘোষ, মালবাজার

    জিভে জল আনা কেক তো আছেই। সঙ্গে দূরন্ত পেস্ট্রি, স্যান্ডউইচ। পিৎজা, মাফিন, ডোনাট। এ সবই ব্র্যান্ডেড বিপণিতে পাওয়া যায়। সেই স্বাদকে চ্যালেঞ্জ জানাচ্ছেন দুই ভাই। সমানে সমানে লড়াই চালাচ্ছে তাঁদের তৈরি 'দাদাভাই বেকারি'।

    বড় বড় ফ্রাঞ্চাইজি কেক বিপণি অন্য শহরের মতো গড়ে উঠেছে জলপাইগুড়ির মালবাজারেও। এর পাশাপাশি শহরের নিজস্ব ব্র্যান্ড তৈরি করেছেন শ্রীবাস ও সুদীপ দাস। বছর আটেক হলো কেক-বিলাসকে অন্য উচ্চতায় নিয়ে গিয়েছেন তাঁরা। গ্রাহকের পছন্দের ডিজাইন এবং ফ্লেভারে কেক প্রস্তুত করে চলেছে দাদাভাই বেকারি। এই কেকের দাম শহরে থাকা অন্য বিখ্যাত ব্র্যান্ডেড বিপণির সামগ্রীর তুলনায় অনেকটাই কম। শুধু কেক নয়, এর পাশাপাশি পেস্ট্রি, স্যান্ডউইচ, পিৎজা, মাফিন, ডোনাট সবই দুই ভাইয়ের কারখানায় তৈরি হচ্ছে। রাজ্যের বিভিন্ন জেলার থেকে আসা সাত জন কারিগর এই কারখানায় কাজ করছেন। কেক পরিবহণে সংস্থার নিজস্ব বাতানুকূল গাড়ি এবং এক্সক্লুসিভ স্টোর রয়েছে। ফ্র্যাঞ্চাইজি ছড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে বিভিন্ন এলাকায়। নানা আকারের গরম প্যাটিসও যাতে সহজেই ছোট দোকানিরা বিক্রি করতে পারেন, সে জন্য তাঁদের গরম রাখার ছোট আকারের যন্ত্রও দেওয়া হচ্ছে। 'দাদাভাই বেকারি'র চালিকাশক্তি শ্রীবাস দাদা, বয়স ৩৫ বছর। ভাই সুদীপ ২৯ বছর বয়সি। দুই তরুণ ভাইয়ের এই সাফল্য শহরের অন্যদের কাছে এখন দৃষ্টান্তের মতোই।

    তবে শুরুটা সহজ ছিল না মোটেই। দুই ভাইয়ের বাড়িতে তৈরি হতো নানা ধরনের বিস্কুট, সস্তার কেক, খাস্তা লেড়ো ইত্যাদি। ছোট থেকেই বাবার বেকারির কাজ দেখে বড় হয়েছে দু'ভাই। টানাটানির সংসারে বাড়ির মধ্যেই ছোট্ট কারখানা। বিক্রিও ছোট শহরের বিভিন্ন দোকানে ঘুরে ঘুরে। বাবা চলে গিয়েছেন বছর ১৪ আগে। বেকারির ব্যবসাই করবেন নাকি অন্য কিছু, এই দোলাচলে কেটেছে অনেকটা সময়। ২০১৭ থেকে ভোল বদলের শুরু। আধুনিক রুচির কেকের যে চাহিদা উত্তরোত্তর বেড়েই চলছে তা বুঝেই পুরোনো কারখানা শ্রীবাস সুদীপ গড়লেন নতুন রূপে। আরও ঘর তৈরি করে নানা যন্ত্রপাতি দিয়ে কাজ শুরু হলো। তারপর শুধু এগিয়ে যাওয়ার কাহিনি।

    আগামীতে সংস্থাকে আরও বড় আকারে নিয়ে যেতে চান শ্রীবাস। ডুয়ার্সের বড় বড় হোটেল, রিসর্টে প্রাতঃরাশে নিখরচায় বুফে সাজিয়ে দেওয়া হয়। সেখানে রেসিন এবং কাজু নাট বার কেক, ওয়ালনাট ব্রাউনি, আপেল ক্রাম্বল পাই ইত্যাদি সরবরাহ ভাবনা রয়েছে। ব্যবসার আর একটি ডিভিশনে নানা স্বাদের কুকিজ বিস্কুট উৎপাদনের কাজ ইতিমধ্যেই শুরু হয়েছে। শুধু উৎপাদন নয়, আধুনিক মানের প্যাকেজিং এর উপরেও জোর দিচ্ছেন শ্রীবাস। তিনি বলেন, 'ছোট শহরে উন্নত প্যাকেজিং একটা চ্যালেঞ্জ, আমরা সেটা বুঝে আধুনিক প্যাকেজিং তৈরির কাজ শুরু করেছি। এতে ক্রেতারা আকৃষ্ট হন। সময়ের সঙ্গে ব্যবসার আকার বাড়ছে। আগামীতে বিপণন ও উৎপাদন, দুই ডিভিশনে আরও কর্মী নিয়োগ করা হবে।'

  • Link to this news (এই সময়)