• শিক্ষার টানে ক্লার্কের চাকরি ছেড়ে স্কুলে, হাত কামড়াচ্ছেন সত্যজিৎ
    এই সময় | ২০ এপ্রিল ২০২৫
  • দিব্যেন্দু সিনহা, জলপাইগুড়ি

    সরকারি দপ্তরে করণিকের চাকরি পেয়েছিলেন। কিন্তু শিক্ষার প্রতি ভালোবাসায় সেই মায়া ত্যাগ করে স্কুলে গ্রুপ সি ক্লার্কের পদকেই বেছে নিয়েছিলেন। কিন্তু পরবর্তীতে এই ভালোবাসাই যে তাঁকে অনিশ্চিত পরিস্থিতির মধ্যে ফেলে দেবে বুঝতে পারেননি। এখন পরিবার নিয়ে বিনিদ্র রজনী কাটাচ্ছেন জলপাইগুড়ি গড়ালবাড়ি হাইস্কুলের ক্লার্ক সত্যজিৎ রায়।

    ২০১৬ সালের পরীক্ষায় পাশ করে ২০১৮ সালে গড়ালবাড়ি হাইস্কুলে গ্রুপ সি পদে কাজ শুরু করেন তিনি। স্কুল এবং কাজের প্রতি নিষ্ঠাবান হওয়ায় অল্প কিছুদিনের মধ্যেই স্কুলের শিক্ষক, শিক্ষাকর্মী এবং ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে জায়গা করে নিয়েছিলেন সত্যজিৎ। কিন্তু সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে চাকরি যাওয়ার পর একপ্রকার ভেঙে পড়েছেন তিনি। চাকরিহারা এই করণিক বলেন ‘পায়ের তলা থেকে মাটি সরে গিয়েছে। মার্চ মাসের বেতন মিলেছে। এপ্রিল থেকে বেতন পাওয়া যাবে কি না জানা নেই। এখন পরিবার নিয়ে কী ভাবে চলব সেটাই বড় প্রশ্ন।’

    তাঁর সংযোজন, ‘রাজ্য সরকার ছাত্রছাত্রীদের কথা চিন্তা করে শিক্ষক–শিক্ষিকাদের হয়ে সওয়াল করেছে ভালো কথা। কিন্তু একটি স্কুলে গ্রুপ সি এবং ডি কর্মীদেরও যথেষ্ট কাজ থাকে। তাঁদেরও প্রয়োজন রয়েছে, সংসার রয়েছে। সেই জায়গাটি রাজ্য চিন্তা করছে না।’ এর বিরুদ্ধে তাঁরাও আন্দোলন চালিয়ে যাবেন বলে জানান সত্যজিৎ। অশিক্ষক কর্মীদের ‘যোগ্য গ্রুপ সি-ডি’ বলে একটি সংগঠন আছে।

    সেখানে এই গ্রুপে জলপাইগুড়িতে ৬০ জন এবং রাজ্যে এক হাজারেরও বেশি সদস্য আছেন। এই সংগঠনের পক্ষ থেকে সুপ্রিম কোর্টে একটি পিটিশন দায়ের করা হচ্ছে। এ ছাড়া তাঁদের পাশে সংগ্রামী যৌথ মঞ্চের কর্মীরাও রয়েছেন। তাঁরাও পদক্ষেপ করবেন বলে আশ্বাস দিয়েছেন।

    সত্যজিৎ বলেন, ‘২০১৮ সালে সরকারি ক্লার্কের পরীক্ষায় পাশ করেছিলাম। ২০১৯ সালেই উত্তীর্ণরা কাজে যোগ দেন। আমার অনেক পরিচিত স্কুলের চাকরি ছেড়ে সরকারি দপ্তরের কাজে যোগ দিয়েছিলেন।’ তাঁর আফশোস, ‘সেই সময়ে শিক্ষার প্রতি ভালোবাসায় সরকারি চাকরিতে যোগ না দিয়ে স্কুলেই থেকে গেলাম। যার মাসুল এখন গুনতে হচ্ছে।’ এখন তাঁর মতোই অজানা আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন হাজার হাজার অশিক্ষক কর্মী।

  • Link to this news (এই সময়)