কড়া হাতে পরিস্থিতির মোকাবিলা, স্বাভাবিক হচ্ছে ধুলিয়ান, খুলছে দোকানপাট, গ্রেপ্তার ২৮৯...
আজকাল | ২০ এপ্রিল ২০২৫
আজকাল ওয়েবডেস্ক: পুলিশের কড়া হস্তক্ষেপে ক্রমেই শান্ত হচ্ছে মুর্শিদাবাদের সামশেরগঞ্জ এবং সুতি থানা এলাকার পরিস্থিতি। জঙ্গিপুর পুলিশ জেলার সুপার আনন্দ রায় রবিবার এক সাংবাদিক সম্মেলনে জানিয়েছেন, গত ১২ তারিখের পর আর নতুন করে কোথাও কোনও অশান্তি হয়নি।
তবে সাধারণ মানুষের মধ্যে প্রশাসনের প্রতি আস্থা ফিরিয়ে আনার জন্য পুলিশের ধরপাকড় জারি রয়েছে। রবিবার সামশেরগঞ্জ থানার অন্তর্গত ধুলিয়ান ডাকবাংলো মোড় সংলগ্ন এলাকায় যান চলাচল প্রায় স্বাভাবিক ছিল। দোকানদাররা তাঁদের নিজেদের প্রতিষ্ঠান খুলে ফের একবার ব্যবসা-বাণিজ্য শুরু করেছেন। বাজারগুলোতে আবার আগের মত ভিড় লক্ষ করা যাচ্ছে।
জঙ্গিপুর পুলিশ জেলার সুপার আনন্দ রায় জানান, 'সুতি এবং সামশেরগঞ্জ এলাকায় যে হিংসার ঘটনা ঘটেছে তাতে শনিবার পর্যন্ত মোট ১৩৮ টি মামলা রুজু হয়েছে, তার মধ্যে শনিবার নতুন করে ১৪ টি মামলা রুজু করা হয়েছে। এখনও পর্যন্ত অশান্তির ঘটনায় যুক্ত থাকার অভিযোগে মোট ২৮৯ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।'
জাফরাবাদে বাবা-ছেলেকে খুনের ঘটনায় নতুন করে আরও একজনকে গ্রেপ্তার করেছে। পুলিশ আনন্দ রায় জানান,' ধৃত ব্যক্তির নাম জিয়াউল হক। তার বাড়ি সামশেরগঞ্জ থানার অন্তর্গত শুলিতলা এলাকায়। গোপন সূত্রে প্রাপ্ত খবরের ভিত্তিতে ওই ব্যক্তিকে ইসলামপুর থানার অন্তর্গত চোপড়া থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।'
এই নিয়ে বাবা-ছেলে খুনের ঘটনায় মোট চার জনকে গ্রেপ্তার করল পুলিশ। পুলিশ সূত্রের খবর, এই খুনের ঘটনায় অন্যতম প্রধান 'মাস্টারমাইন্ড' ছিল জিয়াউল। খুনের ঘটনার পরিকল্পনা ওই ব্যক্তি করেছিল বলে প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জানতে পেরেছে।
আনন্দ রায় আজ আরও জানান, 'সাধারণ মানুষের মধ্যে আস্থা ফিরে আসার ফলে ইতিমধ্যেই প্রায় ১০০টি পরিবার নিজেদের বাড়িতে ফিরে এসেছে। আরও বেশ কিছু পরিবার দ্রুত ফিরে আসবে বলে আমরা আশাবাদী। বিভিন্ন এলাকায় কেন্দ্রীয় এবং পুলিশ বাহিনীর টহলদারি জারি রয়েছে। জাফরাবাদ এবং আশেপাশের এলাকায় তিনটি পুলিশ ক্যাম্প করা হয়েছে।'
অন্যদিকে জঙ্গিপুর হিংসার ঘটনা তদন্ত যতই এগোচ্ছে পুলিশের হাতে তত বিস্ফোরক তথ্য আসছে। তদন্তকারীদের অনুমান একটি বিশেষ আন্দোলনকে সামনে রেখে কিছু অসাধু মানুষ নিজেদের স্বার্থসিদ্ধি করার চেষ্টা করেছিল, যা ওই আন্দোলনের সঙ্গে কোনওভাবেই জড়িত নয়।
জঙ্গিপুর পুলিশ জেলায় সম্প্রতি ঘটে যাওয়া বিভিন্ন ঘটনার তদন্তে স্থানীয় পুলিশকে সাহায্যের জন্য রাজ্য পুলিশের তরফ থেকে নয় সদস্যের একটি 'সিট' গঠন করা হয়েছে। পুলিশের তদন্তকারীরা এবং ফরেন্সিক সাইন্স ল্যাবের আধিকারিকেরা জঙ্গিপুর পুলিশ জেলার বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে একাধিক তথ্য প্রমাণ সংগ্রহ করছেন।