• মুর্শিদাবাদে বাবা-ছেলে হত্যায় গ্রেপ্তার আরও এক
    দৈনিক স্টেটসম্যান | ২০ এপ্রিল ২০২৫
  • মুর্শিদাবাদে অশান্তি চলাকালীন বাবা-ছেলে খুনের ঘটনায় গ্রেপ্তার আরও এক। শনিবার রাতে মূলচক্রী জিয়াউল শেখ ওরফে চাচাকে চোপড়া থেকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তিনিই খুনের নির্দেশ দিয়েছিলেন। ধৃতের বাড়ি সামশেরগঞ্জ থানার সুলিতলা এলাকায়। তবে খুনের ঘটনার পর থেকে তিনি পলাতক ছিলেন। আগেই এই খুনে যুক্ত থাকার অভিযোগে ৩ জনকে গ্রেপ্তার করেছিল পুলিশ। জিয়াউলকে নিয়ে ধৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল ৪। রবিবার তাঁকে জঙ্গিপুর আদালতে তোলা হয়।

    ঘটনার সময়ের সিসিটিভি ফুটেজ দেখে অভিযুক্ত জিয়াউলকে শনাক্ত করার পরই তদন্তকারীরা খোঁজ শুরু করেন। এরপরই দেখা যায়, অভিযুক্ত উত্তর দিনাজপুরে গিয়ে গা ঢাকা দিয়ে রয়েছেন। শনিবার রাতে অভিযান চালিয়ে সেখান থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে পুলিশ সূত্রের খবর। পুলিশ সূত্রে খবর, জোড়া খুনে ধৃত তিনজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করে জিয়াউলের নাম জানতে পুলিশ পারে। একই সঙ্গে সিসিটিভি ফুটেজেও তাঁকে দেখা গিয়েছিল বলে দাবি তদন্তকারীদের।

    ওয়াকফ সংশোধনী আইন প্রত্যাহারের দাবিতে সপ্তাহখানেক আগে অগ্নিগর্ভ হয়ে ওঠে মুর্শিদাবাদে। সেই সময় জাফরাবাদে বাড়ি থেকে টেনে নিয়ে গিয়ে হরগোবিন্দ দাস ও চন্দন দাসকে খুনের অভিযোগ ওঠে একদল দুষ্কৃতীর বিরুদ্ধে। মুর্শিদাবাদের ঘটনার তদন্তে সিট গঠন করে রাজ্য সরকার। প্রথমে সুতি ও বীরভূমের মুরারই থেকে কালু নাদাব ও দিলদার নাদাবকে গ্রেপ্তার করেন তদন্তকারীরা। তাঁদের জিজ্ঞাসাবাদ করে সুতি থেকেই ইনজামাম হক নামে আরও এক দুষ্কৃতীকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। পুলিশ জানতে পেরেছে অভিযুক্তরা বাংলাদেশ পালিয়ে যাওয়ার ছক কষছিল।

    পুলিশ সূত্রে খবর, পেশায় ইলেকট্রিক মিস্ত্রি এই ইনজামামের পিতা-পুত্রের বিবাদ ছিল। নিহতদের বাড়ির সামনে একটি বৈদ্যুতিন খুঁটিতে কাজ করা নিয়ে বিবাদ দেখা দিয়েছিল দু’পক্ষের মধ্যে। তবে সেই ঘটনার জন্যই খুন কি না, তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ। এদিকে দাস পরিবারের পাশে দাঁড়ায় প্রশাসন। তাঁদের পরিবারকে ১০ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তবে ওই টাকা তাঁরা নেবেন না জানান পরিবারের সদস্যরা।

    ১৬ এপ্রিল বাবা-ছেলের শ্রাদ্ধানুষ্ঠান সম্পন্ন। যদিও সেই অনুষ্ঠান ঘিরেও ভয়ের আবহ ছিল। দাস পরিবারের অভিযোগ, শ্রাদ্ধের জন্যে পুরোহিত এবং ক্ষৌরকার পাওয়া যাচ্ছিল না। অশান্তির ভয়ে এবং আতঙ্কে কেউ আসেননি। তাই পুরোহিত ছাড়াই শ্রাদ্ধ সম্পন্ন হয়।

    পুলিশ জানিয়েছে, মুর্শিদাবাদে অশান্তির ঘটনায় এখনও পর্যন্ত ১০০টিরও বেশি এফআইআর দায়ের করা হয়েছে। গ্রেপ্তারির সংখ্যা ২৭৬। জিয়াউল শেখের গ্রেপ্তারির কথা নিশ্চিত করে মুর্শিদাবাদের ডিআইজি সৈয়দ ওয়াকার রাজা জানান, পুলিশ বিভিন্ন ডিজিটাল তথ্য সংগ্রহ করে জানতে পেরেছে খুনের সময় ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন জিয়াউল।
  • Link to this news (দৈনিক স্টেটসম্যান)