শাহজাদ হোসেন, ফরাক্কা: জাফরাবাদে খুন হওয়া বাবা-ছেলের বাড়িতে ঘুরে এসেছেন রাজ্যপাল। পাশে থাকার আশ্বাস দিয়েছেন তিনি। সেখান থেকেই কয়েক কিলোমিটার দূরে মুর্শিদাবাদের অশান্তিতে গুলিবিদ্ধ হয়ে প্রাণ হারানো এজাজ আহমেদের বাড়িতে শুধুই হাহাকার। ছেলে হারানোর বেদনায় কাঠ হয়ে গিয়েছেন মা। রাজ্যপাল সামশেরগঞ্জ গেলেও তাঁদের বাড়িতে গেলেন না কেন? সেই প্রশ্ন তুলে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন এজাজের মা ও দাদা। মায়ের গলায় হতাশা, “ভেবেছিলাম রাজ্যপাল আসবেন। এলেন কই?”
সাজুর মোড়ে অগ্নিগর্ভ পরিস্থিতির মধ্যে গুলিবিদ্ধ হয় হন সুতির কাশিমনগরের বাসিন্দা এজাজ আহমেদ। পরিবারের দাবি, সেদিন মামার বাড়ি থেকে নিজের বাড়িতে ফেরার সময় গণ্ডগোলের মাঝে আটকে পড়েন পরিযায়ী শ্রমিক এজাজ। কিছু বোঝার আগে গুলি লাগে তাঁর বুকে। আশঙ্কাজনক অবস্থায় ভর্তি করা হয় মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজে। দু’দিন পর সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু হয় তাঁর।
বাড়িতে রয়েছেন বৃদ্ধ বাবা-মা, স্ত্রী-সন্তান। ১৪ মাসের কন্যা সন্তান শৈশবেই পিতৃহারা হয়েছে। বাবা মানারুল শেখ কৃষক। মা সায়েমা বিবি বিড়ি শ্রমিক। রোজগেরে ছেলের মৃত্যুর শোকের মধ্যে তাঁদের চিন্তা সংসার চলবে কী করে। মুখ্যমন্ত্রীর কাছে দাবি-দাওয়া জানাতে চান তাঁরা। পুলিশ নিয়মিত খোঁজ রাখছে বলে জানিয়েছে এজাজের পরিবার।
কিন্তু রাজ্যপাল তাঁদের এলাকাতে গেলেও বাড়িতে গেলেন না কেন তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন সায়েমা । তাঁর কথায়, “রাজ্যপাল আমাদের বাড়ি আসবেন এটা আশা করেছিলাম, কিন্তু আসেননি। আমাদের বাড়ি থেকেও তো তরতাজা যুবক গুলিবিদ্ধ হয়ে প্রাণ হারিয়েছে।” তিনি আরও বলেন, “ও বাইরে কাজ করত। তাতেই সংসার চলত। আমার ছেলে তো চলে গেল। ওর সন্তান রয়েছে, বউ রয়েছে। ওরা চলবে কী করে। মুখ্যমন্ত্রী ওঁর সন্তানের দিকে তাকাক।”
এজাজের দাদার গলাতেও হতাশা ও ক্ষোভের সুর। রাজ্যপাল তো সবার তাহলে তিনি কেন আমাদের বাড়িতে এলেন না প্রশ্ন তুলে তিনি বলেন, “আমারাও আশা করেছিলাম উনি আমাদের বাড়িতে আসবেন। রাজ্যপাল তো কোনও দলের নন, উনি সবার। এই ঝামেলায় ওরা (হরগোবিন্দ দাসের পরিবার) যেমন প্রিয়জন হারিয়েছেন, আমরাও তরতাজা প্রাণ হারিয়েছি। আমরাও দুঃখী। অন্যজনের বাড়িতে গেলেন, আমাদের বাড়িতে আসেননি। এটা আশা করিনি।”