অর্ক দে, বর্ধমান: বিজেপি নেতার ‘দাদাগিরি’! টাকা আদায় করতে গিয়ে দোকান ভাঙচুর। কিশোরের দায়ে গামলাভর্তি গরম দুধ ঢেলে দেওয়ার মারাত্মক অভিযোগ উঠল। চাঞ্চল্যকর ঘটনাটি ঘটেছে পূর্ব বর্ধমানের দেওয়ানদিঘি থানা এলাকায়। ঘটনায় থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের হয়েছে। পুলিশ ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে। অভিযুক্ত বর্ধমান ২ নম্বর মণ্ডলের সাধারণ সম্পাদক অমিত মাকড় পলাতক।
জানা গিয়েছে, দেওয়ানদিঘি এলাকার একটি চালকলের অদূরে চায়ের দোকান চালান উমাশঙ্কর সাউ নামে এক ব্যক্তি। দোকানের সঙ্গেই তাঁদের থাকার ঘর। বছর খানেক আগে ওই ব্যক্তি ব্যক্তিগত কারণে মির্জাপুরের বাসিন্দা পেশায় ইমারত ব্যবসায়ী অমিত মাকড়ের থেকে ভাগে ভাগে ৫০ হাজার টাকা নিয়েছিলেন। ভাগে ভাগে সেই টাকা মেটানো হবে বলে দু’জনের মধ্যে কাগজে লেখাপড়াও হয়েছিল বলে দাবি। সেই মোতাবেক চা বিক্রেতা উমাশঙ্কর সাউ টাকাও শোধ করছিলেন বলে অভিযোগ।
বেশ কয়েকদিন ধরে দু’জনের মধ্যে টাকা নিয়ে বিবাদ দেখা দেয়। উমাশঙ্করের দাবি, তিনি বেশিরভাগ টাকাই শোধ করেছেন। এদিকে অমিত মাকড়ের দাবি, ৩৫ হাজারের বেশি টাকা বাকি আছে। দেনা-পাওনা লেখা সেই খাতা তিনি দেখাতে রাজি নন। এদিকে পাওনা টাকার জন্য বার বার চাপ দিচ্ছিলেন বলে অভিযোগ। এই অবস্থায় শনিবার দুপুরের উমাশঙ্করের দোকানে পাঁচ সঙ্গীকে নিয়ে হানা দেন ওই ইমারত ব্যবসায়ী বিজেপি নেতা। সেসময় দোকানে ছিলেন না উমাশঙ্কর। ছিল তাঁর ১২ বছরের ছেলে। অভিযোগ, অমিত মাকড় সঙ্গীদের নিয়ে দোকান ভাঙচুর শুরু করে। গালিগালাজও নাগাড়ে চলতে থাকে। হামলার প্রতিবাদ করেছিল দোকানে থাকা ওই কিশোর। তার ‘শাস্তি’ হিসেবে দোকানে থাকা গরম দুধ কিশোরের গায়ে ঢেলে দেওয়া হয়। জানা গিয়েছে, অমিত মাকড় এখন বর্ধমান ২ নম্বর মণ্ডলের সাধারণ সম্পাদক পদে রয়েছেন। কীভাবে তিনি এই কাজ করতে পারেন? সেই প্রশ্ন উঠেছে।
পরে গুরুতর জখম অবস্থায় ওই কিশোরকে উদ্ধার করে বর্ধমান জেলা সদর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। তার শরীরের ডান দিকের অনেকটা অংশ পুড়ে গিয়েছে। গতকাল রাতেই আক্রান্তের পরিবারের তরফ থেকেই থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। পুলিশ ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে। এদিকে ঘটনার পর থেকেই অভিযুক্ত অমিত মাকড় পলাতক। পুলিশ অমিতের এক সঙ্গীকে গ্রেপ্তার করেছে বলে খবর।