চাকরি বাতিল নিয়ে তৃণমূল কংগ্রেসের সভানেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ‘অল আউট’ আক্রমণ, অন্যদিকে রাজ্যের প্রধান বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর সমালোচনায় কিঞ্চিৎ বিতর্কিত মন্তব্য। ব্রিগেড থেকে সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম বুঝিয়ে দিলেন, তৃণমূল-বিজেপির ‘বিকল্প’ হিসেবেই লড়বে বামেরা। শব্দ খরচ করলেন না কংগ্রেস-আইএসএফকে নিয়ে।
রাজ্যের প্রায় ২৬ হাজার চাকরি বাতিল নিয়ে তৃনমূলকে আক্রমণ করে সেলিম বলেন, ‘যেখানে নিয়োগ হচ্ছে, সেখানে দুর্নীতির পাহাড়।’ মুখ্যমন্ত্রীকে টেনে তোপ দাগেন তিনি। শুভেন্দুর প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, ‘শুভেন্দু কী বলেছিলেন, মেদিনীপুরে লাল ঝান্ডা কেন, ন্যাকড়াও দেখা যাবে না। এখন উনি তৃণমূলের ঝান্ডাকেই ন্যাকড়া বানিয়ে...।’ এরপর যা তিনি বলেছেন, তা নিয়ে খানিক বিতর্কই তৈরি হয়েছে।
লাল পতাকার ভিড় দেখে ‘তৃপ্ত’ সেলিম বললেন, ‘যাঁরা বলছিল, সিপিএম শেষ, তাঁদের বলছি আমরা আছি। আধপেটা খেয়েও আমরা লাল ঝান্ডা ধরে আছি। আমাদের নীতি আদর্শ আছে।’ শূন্যে পৌঁছনো কর্মী-সমর্থকদের বৈশাখী ব্রিগেড থেকে বুঝিয়ে দেওয়া হলো, ‘যাঁরা দূরবীন দিয়ে লাল ঝান্ডা দেখতে পাচ্ছিল না, তাঁদের বুকে কাঁপন ধরাবে এই ব্রিগেড।’
বাকি পাঁচ বক্তার থেকে কিছুটা বেশি সময় নিয়েছেন সেলিম। ৩৫ মিনিটের ভাষণে কখনও গলার শিরা ফুলিয়ে হুঙ্কার, কখনও বাঁকা হাসির মাঝেই তৃণমূল-বিজেপিকে কটাক্ষ। সমাবেশে আগত কর্মীরা বলছেন, শেষ পাতে জমিয়ে দিয়েছেন তিনি। কৃষকদের অসহায়তা, শ্রমিকদের হাহাকার, কর্মসংস্থানের দুরাবস্থাতে বাঁধা ভাষণকে ছাপিয়ে সেলিমের বক্তব্যে উঠে এল সাম্প্রতিক শিক্ষকদের চাকরি বাতিল থেকে মুর্শিদাবাদের অশান্তির ঘটনার প্রসঙ্গ।
সেলিম বলেন, ‘আমাদের দাবি, সাম্প্রদায়িক হিংসা যে ছড়াবে, পুলিশকে তার বিরুদ্ধে মামলা করতে হবে। না হলে আমরা রাজ্যের সব থানায় এফআইআর করব। লাল ঝান্ডা কোনও কাপড়ের টুকরো না। চিটফান্ডের টাকা দিয়ে তা কেনা হয়নি।’ ২৬ হাজার শিক্ষকের চাকরি বাতিল নিয়ে কাঠগড়ায় দাঁড় করানো হয় তৃণমূল সরকারকে। সেলিমের কথায়, ‘কাজের জায়গা ছোট হয়ে যাচ্ছে। কেন্দ্র, রাজ্যে কোথাও নিয়োগ হচ্ছে না। যেখানে নিয়োগ হচ্ছে, সেখানে দুর্নীতির পাহাড়। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর নাকে ঝামা ঘষে দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। ২৬ হাজার মানুষের চাকরি গিয়েছে।’
বক্তৃতার শুরুতেই সেলিম উল্লেখ করেন, ‘এই ব্রিগেড বুকে কাঁপন ধরাবে’। কাঁপন কি সত্যিই ধরাবে? কৃষক, শ্রমিক, খেতমজুর ও বস্তি এই চার গণসংগঠনের ডাকা ব্রিগেডে লাল প্রতিবাদী কণ্ঠের অনুরণন কি টিকবে ২৬-এর ভোট পর্যন্ত, অপেক্ষা এক বছরের।