• প্রতিস্থাপিত গাছ বেঁচে আছে তো? দেখতে দেউচা-পাচামিতে সর্বভারতীয় আদিবাসী সংগঠন
    প্রতিদিন | ২১ এপ্রিল ২০২৫
  • নন্দন দত্ত, সিউড়ি: দেউচা-পাচামিতে কয়লাখনির কাজ শুরু হওয়ার পর সেখানকার পরিবেশ নিয়ে চিন্তার মেঘ দেখা গিয়েছিল পরিবেশ সংরক্ষকদের মনে। তবে তাঁদের আশ্বস্ত করে সেখানকার গাছগুলিকে অন্যত্র প্রতিস্থাপিত করা হয়েছে। হাজার খানেক শাল, শিমূল গাছ প্রতিস্থাপিত করা হয়েছে অন্যত্র। সাধারণত প্রতিস্থাপিত গাছের বাঁচার সম্ভাবনা কম থাকে। দেউচার গাছগুলির কী পরিস্থিতি, তা দেখতে রবিবার বীরভূমের মহম্মদবাজারে পৌঁছল ৪৫ টি আদিবাসী সংগঠনের যৌথ কমিটি ‘ইউনাইটেড ফোরাম অফ অল আদিবাসী ইউনিয়ন’। যৌথ সংগঠনের সভাপতি রামদাস কিস্কু জানান, ‘‘আমরা তিনটি বিষয় নিয়ে এলাকায় ঘুরে খুশি।’’

    বীরভূমের মহম্মদবাজারের চাঁদা মৌজায় এশিয়ার বৃহত্তম কয়লাখনি থেকে উত্তোলন নিয়ে বিরোধীরা সরব। পরিবেশ দূষণ থেকে আদিবাসীদের জমি অধিগ্রহণ, উচ্ছেদ নিয়ে নানা অভিযান, আন্দোলন হয়েছে। বিশেষ করে রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী কয়লাখনির জন্য খনন এলাকায় প্রতিস্থাপিত গাছ নিয়ে সরব হন। তিনি ভিডিও দেখিয়ে দাবি করেছিলেন, এক জায়গা থেকে তুলে অন্য জায়গায় বসানো গাছ বেঁচে নেই। তবে রবিবার ইউনাইটেড ফোরাম অফ অল আদিবাসী ইউনিয়নের তরফে সেই এলাকা পরিদর্শন করে সন্তোষ প্রকাশ করলেন সংগঠনের সদস্যরা।

    উল্লেখ্য, প্রথম পর্যায়ের ১২ একর জায়গা থেকে খননের কাজ শুরু হয়েছে। সেই এলাকায় ৯৮০ টি মহুল, শাল, শিমূল গাছ পড়েছে। আদিবাসীদের পূজিত এই গাছ না কেটে তাকে ওই এলাকায় প্রতিস্থাপিত করার পরিকল্পনা নিয়েছে প্রশাসন। রবিবার সেই গাছ প্রতিস্থাপনের কাজ নিজের চোখে দেখে প্রতিনিধি দল। ঘটনাক্রমে এদিন এলাকায় ছিলেন গাছ প্রতিস্থাপনের দায়িত্বে থাকা অতিরিক্ত জেলাশাসক বাবুলাল মাহাতো। তিনি প্রতিনিধিদের ঘুরে ঘুরে এলাকায় গাছ প্রতিস্থাপন দেখান। তিনি জানান, ‘‘এখনও পর্যন্ত ৩৯০ টি গাছ এক জায়গা থেকে তুলে অন্যত্র প্রতিস্থাপিত করা হয়েছে। আগের পর্যায়ের সব গাছেই নতুন করে পাতা দেখা গিয়েছে। গাছ তার শীতঘুম ছেড়ে বেরিয়েছে। এই সময় বর্ষার আগে পর্যন্ত আমরা দ্রুত গতিতে বাকি গাছের অধিকাংশ প্রতিস্থাপিত করে দিতে চায়।’’

    শিল্পের জন্য গাছ এক জায়গা থেকে তুলে অন্যত্র প্রতিস্থাপিত করার বিষয়টি রাজ্যে এই প্রথম। একইসঙ্গে এখনও পর্যন্ত প্রতিস্থাপিত প্রায় সব গাছ বেঁচে থাকা বিশাল বড় সাফল্য বলেই দাবি। যৌথ কমিটির সভাপতি রামদাস কিস্কু ও কমিটির আহ্বায়ক মিতুন টুডু জানান, ‘‘আমরা তিনটি বিষয় নিয়ে ঘুরে দেখেছি। আমাদের আশ্চর্য করেছে, সব গাছ বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে তুলে তা প্রতিস্থাপিত করছে। তাতে সব গাছ বেঁচেছে। দ্বিতীয়ত ৩২৬ একর জায়গা জুড়ে যে কয়লা খনি করার পরিকল্পনা সেই এলাকায় কোনও আদিবাসীকে উচ্ছেদ করা হচ্ছে না। তৃতীয়ত যারা সরকারকে জমি দিয়েছে তারা স্বেচ্ছায় জমি দিয়েছে। কিছু অংশ আছে যারা এখনও জমি দেয়নি, এটা ঠিক। তারা কিছু দ্বিধায় আছে এটাও সত্যি। কিন্তু তারা প্রকল্পের বিরোধিতা করছে না।’’
  • Link to this news (প্রতিদিন)