ধরা পড়েনি চিতাবাঘ, আতঙ্কে রাত জাগছেন ভান্ডিগুড়ির চা শ্রমিকরা
বর্তমান | ২১ এপ্রিল ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি, জলপাইগুড়ি: খাঁচা পাতা হলেও রবিবার রাত পর্যন্ত ধরা পড়েনি চিতাবাঘ। ফলে চরম আতঙ্কে রাত জাগছেন জলপাইগুড়ি সদর ব্লকের ভান্ডিগুড়ি চা বাগানের শ্রমিকরা। রবিবার বাগানে পাতা তোলার কাজ শুরুর আগে বাজি-পটকা ফাটানোর পাশাপাশি টিন পেটান শ্রমিকরা। যাতে বাগানে চিতাবাঘ লুকিয়ে থাকলে ওই শব্দ শুনে পালায়। কিন্তু শনিবার সকালে বাগানের ৬০ নম্বর সেকশনে শ্রমিক ঝুটুং ওরাওঁকে মারাত্মকভাবে জখম করে বাগানে লুকিয়ে পড়া চিতাবাঘটিকে আর একবারও দেখা যায়নি। শ্রমিকদের দাবি, পেল্লাই সাইজের চিতাবাঘটিকে তাঁরা বাগানের ৬১ নম্বর সেকশনে গা ঢাকা দিতে দেখেছেন। ফলে সেখানেই চিতাবাঘটি লুকিয়ে থাকতে পারে, এই আতঙ্কে এদিন ভান্ডিগুড়ি চা বাগানের ৬০ ও ৬১ নম্বর সেকশনে কাজ হয়নি।
শ্রমিকরা আতঙ্কে সিঁটিয়ে থাকলেও চিতাবাঘের হামলা থেকে বাঁচতে তাঁদের পর্যাপ্ত বাজি-পটকা দেওয়া হচ্ছে না, এই অভিযোগে এদিন বাগানের ম্যানেজার এস এস ফ্লোরাকে ঘিরে বিক্ষোভ হয়। পরে শ্রমিকদের বেশি করে বাজি-পটকা দেওয়া হয়। এদিকে, চিতাবাঘের সঙ্গে লড়াই করে জখম শ্রমিক ঝুটুং ওরাওঁ শিলিগুড়ির একটি নার্সিংহোমে চিকিৎসাধীন। তাঁর শরীরে অস্ত্রোপচার হয়েছে। বর্তমানে ওই শ্রমিকের অবস্থা স্থিতিশীল বলে হাসপাতালের তরফে জানানো হয়েছে।
ভান্ডিগুড়ি চা বাগানের শ্রমিক বরুণ ভূমিজ বলেন, যতক্ষণ না চিতাবাঘ ধরা পড়ছে, আমরা নিশ্চিন্ত হতে পারছি না। যতই বাজি-পটকা ফাটানো হোক না কেন, বাগানে পাতা তুলতে যেতে ভয় লাগছে। শনিবার সারারাত বনকর্মীরা বাগানে পাহারা দিয়েছেন। তাঁযতক্ষণ না চিতাবাঘটি ধরা পড়ছে, আমরাও রাত জাগব।
বেলাকোবার রেঞ্জার চিরঞ্জিৎ পাল বলেন, ভান্ডিগুড়ি চা বাগানে চিতাবাঘ ধরতে খাঁচা বসানো রয়েছে। আমরাও সারাক্ষণ নজরদারি চালাচ্ছি। বাগানের শ্রমিকদের সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে। সন্ধ্যার পর যাতে শিশুরা একা বাইরে না বের হয়, সেদিকে নজর রাখতে বলেছি। যতক্ষণ না চিতাবাঘটি ধরা পড়ছে, বাগানে কাজ শুরুর আগে টিন পিটিয়ে কিংবা বাজি-পটকা ফাটিয়ে শব্দ করতে বলা হয়েছে। এতে চিতাবাঘটি যদি লুকিয়ে থাকে, ওই শব্দ শুনে পালিয়ে যাবে। চিতাবাঘ ধরতে পাতা হয়েছে খাঁচা। - নিজস্ব চিত্র।