• সরকারি পোর্টালে এবার ইটভাটার নাম নথিভুক্ত করার প্রক্রিয়া সহজ
    বর্তমান | ২১ এপ্রিল ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, কৃষ্ণনগর: সরকারি পোর্টালে নাম তুলতে অনীহা ছিল ইটভাটার মালিকদের। প্রতি বছর নথি দিয়ে তবেই বৈধতার শংসাপত্র পেত ইটভাটা। তার জন্য জটিল প্রক্রিয়ার মাধ্যমে যেত হতো তাঁদের। এবার সেই প্রক্রিয়াকেই সহজ করতে চলেছে রাজ্য সরকার। সংশ্লিষ্ট পোর্টালে ইটভাটার নাম তোলা নিয়ে আর ঝক্কি পোহাতে হবে না মালিকদের। একবার নাম তুলে নিলেই হবে। শুধু প্রতি বছর মালিকদের রিনিউয়াল করতে হবে। এর ফলে ইটভাটার মালিকদের রাজস্ব ফাঁকি দেওয়ার যে প্রবণতা, তা অনেকটাই কমানো যাবে বলে মনে করছে প্রশাসন মহল। পাশাপাশি ইটভাটাগুলোকে বৈধতা প্রদানের প্রক্রিয়াতেও গতি আসবে। সেইসঙ্গে এই কাজ সরাসরি ব্লকের ভূমি সংস্কার অফিস থেকেই করা যাবে বলে জানা গিয়েছে। নতুন নিয়মে জেলা অফিসের ভূমিকা কমানো হয়েছে।‌ আগামী সপ্তাহে এই নিয়ে নবান্ন থেকে প্রত্যেক জেলার সঙ্গে মিটিং করা হবে। সেখানে  জেলা ও ব্লকের ভূমি সংস্কার দপ্তরের আধিকারিক, ইটভাটার মালিকরা উপস্থিত থাকবেন। 

    প্রশাসনের এক আধিকারিকের কথায়, বাংলার ভূমি পোর্টালে গিয়ে এতদিন ইটভাটার মালিকদের সমস্ত নথি দিয়ে আবেদন করতে হতো। তারপর ব্লক ও জেলাতে সেই আবেদন খতিয়ে দেখা হতো। এবার সেই প্রক্রিয়াকে সরল করা হচ্ছে। আগের মতো অনেক নথি আর দরকার পড়বে না। প্রতিবছর রিনিউয়াল করলেই হবে।  বিগত তিন বছর ধরে বাংলার ভূমি পোর্টালে ইটভাটার নাম তোলার জন্য প্রচুর নথি নেওয়া হতো। সিটিও, পরিবেশ রক্ষার শংসাপত্র, ধোঁয়া চেকের কাগজ, শিশুশ্রম না করানোর শংসাপত্র, চুল্লির পরিধি ঠিকঠাক আছে কি না, সমস্ত কিছু নথি দিয়ে পোর্টালে আপলোড করতে হতো মালিককে। সেগুলো খতিয়ে দেখতেন ব্লকে ভূমি সংস্কার দপ্তরের আধিকারিক। পাশাপাশি কোনও বছর রাজস্ব বকেয়া আছে কি না, তাও দেখা হতো।‌ 

    প্রতি বছর এই কাজ করতে হতো ভূমি সংস্কার দপ্তরের আধিকারিকদের। অর্থাৎ একই ইটভাটাকে প্রতি বছর নতুন করে নাম এন্ট্রি করতে হতো। তাতে দেখা যেত, এমন কিছু নথি নেওয়া হচ্ছে, যার প্রয়োজনীয়তা নেই।‌ যার জন্য এই ঝক্কি এড়াতে ইটভাটায় মালিকরাও নাম তোলার জন্য সেভাবে উৎসাহ দেখাতেন না। তাই এবার সেই পোর্টালকে ইউজার ফ্রেন্ডলি বানানো হচ্ছে। এবার থেকে ইটভাটাকে একবার নাম এন্ট্রি করলেই হবে। তারপর শুধু রিনিউয়াল করতে হবে। 

    প্রশাসনের আধিকারিকদের কথায়, এতদিন কোনও ইটভাটার মালিক পোর্টালে ঢুকে অনলাইনের মাধ্যমে নাম নথিভুক্ত করতে চাইলে, তাঁর আইডি-পাসওয়ার্ডের আবেদন জেলা অফিসে চলে আসত। তখন জেলা অফিস থেকে সংশ্লিষ্ট মালিকের আবেদন গ্রহণ করে সরকারি পোর্টালের অ্যাকসেস দেওয়া হতো। কিন্তু ইটভাটার অস্তিত্ব আদৌও এলাকাতে আছে কি না, তা জেলা অফিসের আধিকারিকদের বুঝতে অসুবিধা হতো। 

    তাই এবার থেকে এই কাজ ব্লকের ভূমি সংস্কার অফিস আধিকারিকরাই করতে পারবেন। শুধুমাত্র নথি খতিয়ে দেখে সেই চূড়ান্ত অনুমোদন দেবে জেলা অফিস। 

    প্রসঙ্গত, ইটভাটাগুলোর রাজস্ব ফাঁকি দেওয়ার প্রবণতা নতুন নয়। সরকারি পোর্টালে নাম না তুলেই ইটভাটা চালিয়ে যাচ্ছেন বহু মালিকরা। গত বছর নদীয়া জেলাতে এমন ৬০টি ইটভাটার বিরুদ্ধে জেলা প্রশাসনের তরফ থেকে থানায় অভিযোগ করা হয়েছিল। যার মধ্যে অনেক ইটভাটাকে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল প্রশাসনের তরফ থেকে।  নিজস্ব চিত্র
  • Link to this news (বর্তমান)