‘জলকন্যা’ সায়নীর ফেরার অপেক্ষায় দিন গুনছেন কালনাবাসী
বর্তমান | ২১ এপ্রিল ২০২৫
সংবাদদাতা, কালনা: বিশ্বের সপ্তসিন্ধুর ষষ্ঠসিন্ধু জয়ে এশিয়ার প্রথম মহিলা সাঁতারু হিসাবে বাংলার জলকন্যা কালনার সায়নী দাসের নাম ইতিমধ্যেই ইতিহাসের পাতায়। ২২ এপ্রিল, মঙ্গলবার জয়ের মুকুট পড়ে সায়নী দেশে ফিরবেন। তাঁর ফেরার অপেক্ষায় সাঁতার শেখা পুকুর পাড়ের বাসিন্দা থেকে স্কুলের শিক্ষিকা ও শুভানুধ্যায়ীরা। অপেক্ষায় সায়নীর মা ও দিদি-জামাইবাবুরা।
কালনা শহরের বারুইপাড়ার বাসিন্দা সায়নী দাস। সালটা ২০১৬-’১৭। সায়নী ইংলিশ চ্যানেল জয়ের লক্ষ্যে বাধাবিঘ্নের মধ্যে দিয়ে নিজেকে প্রস্তুত করছিলেন। পাড়ার পুকুর ও ভাগীরথী নদীতে চলছে অনুশীলন। কালনা শহরের ১০নম্বর ওয়ার্ডের জাপটপাড়ার একটি পুকুরে সকাল-বিকেল ঘণ্টার পর ঘণ্ট সাঁতার কাটা চলত। পুকুর পাড়ে দাঁড়িয়ে মেয়েকে সাঁতারের খুঁটিনাটি বলে দিচ্ছেন প্রশিক্ষক বাবা রাধেশ্যাম দাস। সায়নীকে দেখে পাড়ার বেশকিছু কিশোর-কিশোরী পুকুরের জলে নেমে পড়েছিল সেদিন। রাধেশ্যামবাবুও ওদের সাঁতার শেখান। সেদিনের সায়নীর পাশে থেকে সাঁতার শেখা কিশোরী, কলেজ পড়ুয়া তিথি মজুমদার, জয়িতা পালরা ‘সায়নীদি’র সাফল্যে খুবই উচ্ছ্বসিত। সায়নী কালনা মহিষমর্দিনী গার্লস ইন্সটিটিউশন থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করেছেন। ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষিকা টিনা শীল বলেন, রাষ্ট্রপতির কাছ থেকে ওর তেনজিং নোরগে অ্যাডভেঞ্চার জাতীয় পুরস্কার নেওয়ার অনুষ্ঠানটি স্কুলে লাইভ দেখানো হয়। ওর গর্বে স্কুল আজ গর্বিত। বাড়ি ফিরলেই স্কুলে সংবর্ধনা দেওয়া হবে। কালনার ছেলে জাতীয় দলের প্রাক্তন ফুটবলার বিদেশ বসু বলেন, ওর জন্য গর্বে আমার বুক ফুলে উঠছে। ওর সাফল্য এসেছে ওর জেদ, অধ্যবসায় ও বাবা-মায়ের ঐকান্তিক চেষ্টায়। সায়নীর মা গৃহবধূ রুপালি দাস বিগত পাঁচটি চ্যানেল জয়ে মেয়ের পাশে থেকেছেন(ইংলিশ চ্যানেল ব্যতিত)। এবার মেয়ের সঙ্গে যেতে পারেননি। বাড়িতে অধীর আগ্রহে মোবাইলে মেয়ের কঠিন লড়াই করে এগিয়ে যাওয়া দেখেছেন। তিনি বলেন, খুবই ভালো লাগছে। মেয়ে সব বাধা অতিক্রম করে জয়ী হয়েছে। আমি খুবই আনন্দিত। সায়নীর সাফল্যে আনন্দিত জামাইবাবু প্রীতম বসাক, দিদি রিম্পা বসাক ও তাঁদের ছোট্ট মেয়ে ইন্দুজা।