সীমান্তে জমি কেনা ও বিএসএফকে হস্তান্তরের কাজ শুরু হল নদীয়ায়
বর্তমান | ২১ এপ্রিল ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি, কৃষ্ণনগর: সীমান্তে জমি কেনা ও বিএসএফকে জমি হস্তান্তরের কাজ জোরকদমে শুরু করেছে জেলা প্রশাসন। চলতি বছরের মধ্যেই সেই কাজের সিংহভাগটাই শেষ করা নিয়ে উদ্যোগী হয়েছে রাজ্য সরকার। নতুন করে জেলা প্রশাসনের তরফ থেকে প্রায় ৪০ একর জমি বিএসএফকে হস্তান্তর করা হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। পাশাপাশি যে সমস্ত জায়গায় জমিজট রয়েছে, সেগুলো দ্রুত মিটিয়ে ফেলার কাজ চলছে। সীমান্ত লাগোয়া নদীয়া জেলার সেই সমস্ত ব্লকে কাজ সম্পন্ন করার জন্য নির্দিষ্ট সময়সীমা নির্ধারণ করা হয়েছে প্রশাসনের তরফ থেকে। এখনও প্রায় সীমান্তের কুড়ি একর জমি কিনতে হবে রাজ্য সরকারকে। সেই প্রক্রিয়াও ইতিমধ্যেই শুরু করেছে জেলা প্রশাসন। সম্প্রতি নদীয়া জেলা প্রশাসনের সঙ্গে বিএসএফের বৈঠক হয়। সেখানেই জমি অধিগ্রহণ, জমি কেনা, জমি হস্তান্তর সহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়। তাতেই একাধিক বিষয় উঠে আসে।
নদীয়া জেলা প্রশাসনের এক আধিকারিক বলেন, বিএসএফের তরফ থেকে যে সংস্থা কাজ করছে, তাদের ইঞ্জিনিয়ারের সঙ্গে আমরা কথা বলেছি। কোন কোন প্লট এখনও তাদের হস্তান্তর করা হয়নি, তা জানতে চাওয়া হয়েছে। তারা সেই তথ্য দিলেই আমরা দ্রুত কাজ এগিয়ে নিয়ে যাবে। এবছরের মধ্যেই সীমান্তের জমি সংক্রান্ত কাজ মিটিয়ে ফেলাই আমাদের লক্ষ্য।
জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, করিমপুর-১ ব্লকের বিএসএফের ১১ নম্বর ব্যাটালিয়নের এলাকার অন্তর্গত ৩১ কিলোমিটারের মধ্যে ১.৪১ কিমি অর্থাৎ ৫.২৪ একর জমি কেনার কাজ বাকি ছিল। যার মধ্যে এখনও পর্যন্ত ৩.৯৬ একর জমি কেনা হয়েছে এবং তার মধ্যে ৩.৮৩ একর জমি বিএসএফের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। পড়ে থাকা ১.২৪ একর জমি অধিগ্রহণের কাজ চলছে। অন্যদিকে চাপড়া ব্লকের ১৬১ ব্যাটালিয়নের এলাকার অন্তর্গত ৪ কিমি অর্থাৎ ৩১.৮৬ একর জমিতে কাঁটাতার বসানোর কাজ বাকি রয়েছে। কিন্তু দেখা যাচ্ছে, রাজ্য সরকারের তরফ থেকে ১৭.৩৫ একক জমি বিএসএফকে হস্তান্তর করা হয়েছে। বাকি ১৪.৫১ একর জমি নানা জটিলতায় আটকে রয়েছে। আগামী ১৫ জুনের মধ্যে এই কাজ শেষ করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
অন্যদিকে চাপড়া ব্লকের বিএসএফের ৩১ ব্যাটালিয়নের এলাকায় ২.৪ কিমি এলাকা কাঁটাতারহীন অবস্থায় আছে। সেই জায়গার জমি অধিগ্রহণের জন্য বিএসএফের থেকে নতুন করে আবেদনপত্র জমা নেওয়া হচ্ছে। একইভাবে কৃষ্ণগঞ্জ ব্লকের বিএসএফের ৩২ ব্যাটালিয়নের এলাকায় ২৩.০৪ একর জমি অধিগ্রহণের কাজ চলছে। সেখানকার ১৮.২২ একর জমি ইতিমধ্যেই জেলা প্রশাসনের তরফ থেকে কেনা হয়েছে এবং তার মধ্যে ১৬.৯৬ একর জমি বিএসএফকে হস্তান্তর করা হয়েছে। অবশিষ্ট ৪.৮২ একর জমি দ্রুত কেনা হচ্ছে জেলা প্রশাসনের তরফ থেকে। চলতি বছরের ২৬ জুনের মধ্যে সেই কাজ শেষ করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
তবে হাঁসখালি ও রানাঘাট-২ ব্লকের বিএসএফের ১৯৪ ব্যাটালিয়ন এলাকায় বিরাট অংশের জমি অধিগ্রহণের কাজ বাকি রয়েছে। হাঁসখালি ব্লকের অধিগ্রহণের জন্য প্রয়োজনীয় ৩৩.৮৯ একর জমির মধ্যে ১৬ একর জমির ৩০০ জন মালিককে প্রশাসনের তরফ থেকে নোটিস পাঠানো হয়েছে। অন্যদিকে রানাঘাট-২ ব্লকের অধিগ্রহণের জন্য প্রয়োজনীয় ৩৬.৩৭ একর জমির বহু মালিকের থেকে রাজ্য সরকার জমি কিনেছে। ফাইল চিত্র