নিজস্ব প্রতিনিধি, পুরুলিয়া: সপ্তাহ খানেক আগেই পুরুলিয়ায় দেখা গিয়েছিল অক্ষয় কুমারের হিট ছবি ‘স্পেশাল ২৬’-এর ঝলক। আয়কর দপ্তরের আধিকারিক সেজে পুরুলিয়ার কোটশিলার এক বিড়ি ব্যবসায়ীর বাড়িতে তল্লাশির নামে লুটপাট চালানোর অভিযোগ উঠেছিল। সেই ঘটনায় ঝাড়খণ্ড থেকে সাতজনকে গ্রেপ্তার করল পুলিস। ধৃতদের অধিকাংশের বাড়িই ঝাড়খণ্ডে। এরমধ্যে ধৃত একজন নিজেকে সিআরপিএফ-এর জওয়ান বলে পরিচয় দিয়েছেন। সেই তথ্য যাচাই করা হচ্ছে বলে জানিয়েছে পুলিস। কোটশিলা থানার বামনিয়া গ্রামে ঝালদা-পুরুলিয়া রাস্তার উপরই বাড়ি বিড়ি ব্যবসায়ী কিরীটী কুমারের। গত ৮ এপ্রিল সন্ধ্যায় এক মহিলা সহ আটজন গাড়িতে চড়ে তাঁর বাড়িতে আসেন। নিজেদের আয়কর দপ্তরের আধিকারিক বলে পরিচয় দেন। তল্লাশির জন্য আয়কর দপ্তরের লোগো দেওয়া একটি চিঠিও দেখান। এরপর পরিবারের সবার মোবাইল ফোন কেড়ে নেওয়া হয়। ভিতর থেকে বন্ধ করে দেওয়া হয় দরজা। তারপর তল্লাশির নামে লুটপাট চালানো হয় বলে অভিযোগ। ব্যবসায়ীর অভিযোগ, তল্লাশির নামে আলমারি তছনছ করতে থাকে। নগদ প্রায় সাড়ে সাত লক্ষ টাকা, সোনার অলঙ্কার সহ আরও অনেক বহুমুল্য জিনিসপত্র একটি ব্যাগে ভরতে থাকে। একজন সেসব খাতায় লিখতেও থাকে। ফলে শুরুতে সন্দেহ হয়নি ব্যবসায়ীর। কিন্তু ভুল যখন ভাঙে, তখন আর কিছুই করার ছিল না তাঁর। ব্যবসায়ীর দাবি, সবকিছু নিয়ে দুষ্কৃতী দলটি চম্পট দেয়। যাওয়ার সময় ব্যবসায়ীর গাড়িটিও নিয়ে যায়। সেইসঙ্গে এক কর্মীকেও গ্রেপ্তারির নামে অপহরণ করে নিয়ে যায়। ঘটনার কথা পুলিসে জানান ওই ব্যবসায়ী। ওইদিন রাতেই ঘটনার তদন্তে নামে পুলিস। পরের দিন ভোরে বামনিয়া থেকে ৫০ কিলোমিটার দূরে ঝাড়খণ্ডের আনগাড়া থানার জনা এলাকা থেকে অপহৃত কর্মীকে উদ্ধার করে পুলিস। ঘটনার তদন্তে একটি টিম গঠন করে পুলিস। জেলার পুলিস সুপার অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, জেলা পুলিসের বিভিন্ন পদমর্যাদার আধিকারিকদের নিয়ে একটি টিম গঠন করা হয়। তাঁরা শনিবার ঝাড়খণ্ডের বিভিন্ন জায়গায় তল্লাশি করে দুই মহিলা সহ সাতজনকে গ্রেপ্তার করেছে। ঘটনার সঙ্গে যুক্ত আরও একাধিকজনকে চিহ্নিত করা হয়েছে। তাঁদেরও গ্রেপ্তার করা হবে। টিআই প্যারেডের কারণে দুষ্কৃতীদের নাম পরিচয় গোপন রাখা হচ্ছে বলে জানিয়েছে পুলিস সুপার।
জেলা পুলিস সুপার আরও জানিয়েছেন, ধৃতদের মধ্যে একজন নিজেকে সিআরপিএফের ৯৪ নম্বর ব্যাটেলিয়ানের কনস্টেবল বলে দাবি করেছেন। আমরা তা যাচাই করছি। পুলিস সূত্রের খবর, এই লুটের পিছনে মদত রয়েছে স্থানীয় দুই ব্যক্তির। তাদের মধ্যে একজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিস।
সোমবার ধৃতদের আদালতে তোলার কথা রয়েছে। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তাদের নিজেদের হেফাজতে নিতে চায় পুলিস। কোটশিলাকাণ্ডে ধৃতরা। -নিজস্ব চিত্র