• ফিরছে শান্তি, পারলালপুর থেকে ধুলিয়ান ফিরল সাতটি পরিবার
    বর্তমান | ২১ এপ্রিল ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, মালদহ: মুর্শিদাবাদের ধুলিয়ানের পরিস্থিতি আপাতত স্থিতিশীল। তাই রবিবার গঙ্গা পেরিয়ে নিজের বাড়িতে ফিরলেন সুখদেব, চন্দনা সহ অনেকেই। সাতটি পরিবারের কারও মুখে বাড়িতে ফেরার উচ্ছ্বাস। আবার কয়েকজনের চোখমুখে কিছুটা আতঙ্ক। কিছু মানুষ এখনও  রয়ে গিয়েছেন পারলালপুর হাইস্কুলে। শীঘ্রই তাঁরা বাড়ি ফিরবেন বলে প্রশাসন সূত্রে খবর। জেলাশাসক নীতিন সিঙ্ঘানিয়া বলেন, প্রায় সব পরিবার বাড়ি ফিরে গিয়েছে। আমরা এতদিন তাঁদের পাশে ছিলাম। তাঁদের সদিচ্ছায় ও মুর্শিদাবাদ প্রশাসনের সহযোগিতায় আমরা ওই পরিবারগুলিকে বাড়ি ফেরাতে পেরেছি। 

    ধুলিয়ান পুরসভার ১৬ নম্বর ওয়ার্ডের এক বাসিন্দা গত শনিবার রাতে গঙ্গা পেরিয়ে ধুলিয়ান থেকে বৈষ্ণবনগরে চলে আসেন। পরিবারের অন্যান্য সদস্য এবং প্রতিবেশীদের সঙ্গে তিনিও সাত দিন এই পারলালপুর হাইস্কুলে আশ্রয় নিয়েছিলেন। রবিবার তাঁর পরিবার নিয়ে বাড়ি ফিরে যান।  

    বৈষ্ণবনগরে আশ্রিতদের ধুলিয়ানে নিজেদের বাড়িতে ফেরার জন্য রবিবার বিশেষ ব্যবস্থা করা হয় মালদহ জেলা প্রশাসনের তরফে। এদিন পারলালপুর গঙ্গার ঘাটে বড় নৌকার ব্যবস্থা করা হয়। প্রত্যেকের জন্য ছিল লাইফ জ্যাকেট। আশ্রিতদের গঙ্গার ওপারে পৌঁছে দিতে নৌকায় মোতায়েন ছিল পুলিস এবং বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী। 

    ওই পরিবারের এক সদস্য বলেন, আমরা শনিবার এখানে চলে এসেছিলাম। ভেবেছিলাম বুধ অথবা বৃহস্পতিবারের মধ্যে বাড়ি ফিরে যেতে পারব। কিন্তু প্রতিবেশীরা ফিরতে মানা করেছিলেন। আমরা চারটে পরিবার বাড়ি ফিরে যাচ্ছি। বাড়িতে ওরা সব লুটপাট করে নিয়েছে। একটা টোটো ছিল, সেটাও নিয়ে চলে গিয়েছে। কিছুই অবশিষ্ট নেই। এখন জানি না বাড়িতে ফিরে কী পরিস্থিতি দেখতে হবে। 

    এদিন গঙ্গার ঘাটে নৌকায় ওঠার সময় অনেকেই সংবাদ মাধ্যমের সঙ্গে কথা বললেন। কেউ আবার ভয়ে মুখই খুললেন না। ধুলিয়ানের এক বাসিন্দা বলেন, সবাই বলছে বাড়ি যাও, ভালো লাগবে। ফিরছি ঠিকই, কিন্তু ভয় লাগছে। কতদিন বাড়ি ছেড়ে এভাবে পড়ে থাকব। ৯ দিন পর বাড়ি ফিরছি। জানি না কী হবে। 

    অন্যদিকে, এদিনই মালদহের আসেন শিশু সুরক্ষা কমিশনের চেয়ারপার্সন তুলিকা দাস ও দুই সদস্য। তিনি প্রথমে কালিয়াচক থানার দীনটোলায় যান। সেখানেই তিনদিন আগে একটি পরিত্যক্ত বাড়িতে বোমা ফেটে দুই শিশু গুরুতর জখম হয়। কমিশনের সদস্যরা এদিন ঘটনাস্থল ঘুরে দেখেন। একই সঙ্গে ঘটনাস্থলে উপস্থিত অন্যান্য শিশুদের বাড়িতে গিয়ে তাঁদের পরিবারের সঙ্গে কথা বলেন চেয়ারপার্সন। এরপর মালদহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে গিয়ে বোমা ফেটে জখম শিশুটিকেও দেখেন তাঁরা। 
  • Link to this news (বর্তমান)