• অকুপেন্সি সার্টিফিকেট প্রদানের গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত একমাসেই বদল, পুরসভায় ক্ষোভ
    বর্তমান | ২১ এপ্রিল ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, বরানগর: বহুতলগুলিকে দ্রুত ‘অকুপেন্সি সার্টিফিকেট’ দিয়ে আয় বাড়াতে চাইছে দক্ষিণ দমদম পুরসভা। সে কারণে মাস খানেক আগে পুরসভার সিআইসি বৈঠকে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়। তারপর পুর এলাকাকে দু’ভাগে বিভক্ত করে দুই আধিকারিককে দায়িত্ব দেওয়া হয়। কিন্তু কিছুদিনের মধ্যেই পুরসভার বোর্ড মিটিংয়ে সর্বসম্মতভাবে এই সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়েছে। ফলে আগের ব্যবস্থা মতো একজন আধিকারিকের হাতেই গোটা শহরের দায়িত্ব ন্যস্ত রয়েছে। বিষয়টি নিয়ে পুরসভার অন্যান্য আধিকারিকদের মধ্যে শুরু হয়েছে তীব্র গুঞ্জন।

    অনেকের বক্তব্য, দক্ষিণ দমদম পুর এলাকায় অবৈধ বহুতলের ছড়াছড়ি। সেখানে ফ্ল্যাট কিনে চরম বিপাকে পড়েন সাধারণ মানুষ। কারণ আবাসন তৈরির পর ‘কমপ্লিশন সার্টিফিকেট’ বা ‘অকুপেন্সি সার্টিফিকেট’ নিতেই চান না অধিকাংশ প্রোমোটার। ফলে সার্টিফিকেট না থাকায় ফ্ল্যাটের মিউটেশন হয় না। পুরসভার এক আধিকারিক জানান, সিংহভাগ বহুতলে বেআইনি নির্মাণ আছে। ‘অকুপেন্সি সার্টিফিকেট’ নিতে গেলে ফাইন সহ কয়েক লক্ষ টাকা অতিরিক্ত দিতে হতো পুরসভাকে। চারটি আবাসনের অকুপেন্সি সার্টিফিকেটের ফিজ জমা রাখলেই প্রোমোটার অন্য জায়গায় নতুন প্রজেক্ট শুরু করতে পারছেন। আবার কোথাও প্রোমোটার নিজে সিসি করাতে চাইছেন। কিন্তু সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ডের কাউন্সিলারের ব্যক্তিগত হিসেব নিকেশ না মেটায় তিনি তা আটকে রাখতে বলে দিচ্ছেন। সবমিলিয়ে খুব কম পরিমাণ সিসি হচ্ছে। আখেরে আয় কমছে পুরসভার।

    সে কারণেই ২০ মার্চের সিআইসি বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয় দক্ষিণ দমদমের এক থেকে ১৮ এবং ১৯ থেকে ৩৫ নম্বর ওয়ার্ডের জন্য আলাদা করে দু’জন আধিকারিক দায়িত্ব পাবেন। এই সিদ্ধান্ত মতো দুই আধিকারিক কাজও শুরু করেন। অকুপেন্সি সার্টিফিকেট নেই এমন বাড়ির তালিকা তৈরি হয়। পাশাপাশি নোটিস পাঠানোর কাজও শুরু হয়। কিন্তু এক মাসের মধ্যে দুই আধিকারিককে দায়িত্ব দেওয়ার সিদ্ধান্ত বাতিল করে দেওয়া হয়েছে। এই বিষয়ে আধিকারিকদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভ তৈরি হয়েছে। তাঁদের অনেকের বক্তব্য, ওসি (অকুপেন্সি সার্টিফিকেট) দেওয়ার আগে অ্যাসেসমেন্টের সময় সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ডের কাউন্সিলারকে ফোন করে জানাতে হয়। তিনি অনুমতি দিলে তবেই অ্যাসেসমেন্ট করতে যান কর্মীরা। সমস্ত ক্ষেত্রেই নিয়ন্ত্রণ থাকে পুর প্রতিনিধিদের হাতে। অথচ কোনও সমস্যা হলে দায় চাপে আধিকারিকদের উপর। এই বিষয়ে পুরসভার স্বচ্ছ সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত। এক কাউন্সিলারও বলেন, ওসির অ্যাসেসমেন্ট করতে আসার আগে কাউন্সিলারদের জানানো হয়। অনেক ক্ষেত্রে কাউন্সিলারের বদলে তাঁর কোনও প্রতিনিধি হাজির থাকেন। বহু আগে থেকে পুরসভায় এই নিয়ম চলছে। আসলে প্রোমোটাররা সরকারি কর্মীকে প্রভাবিত করার সুযোগ পান না। এই বিষয়টি নিয়ে অনেকে ঘনিষ্ঠ মহলে নানা কথা বললেও প্রকাশ্যে কিছু বলতে চাইছেন না। দক্ষিণ দমদম পুরসভার চেয়ারম্যান কস্তরী চৌধুরী বলেন, ‘বোর্ড মিটিংয়ে কাউন্সিলাররা এ বিষয়ে তাঁদের মতামত দিয়েছিলেন। তাঁরা জানিয়েছেন, আগের মতো এক জনের হাতেই দায়িত্ব থাকুক। তবে এবিষয়ে কোনও সিদ্ধান্ত 

    নেওয়া হয়নি।’
  • Link to this news (বর্তমান)