নিজস্ব প্রতিনিধি, বারাসত: দীর্ঘদিন ধরে বেহাল অবস্থায় পড়ে রয়েছে স্বরূপনগরের তরণীপুরের কাঠের ব্রিজ। সেটির মাঝে বড় বড় ফাটল তৈরি হয়েছে। ফলে যে কোনও সময় বড়সড় বিপত্তি ঘটে যেতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। তবে, দ্রুত ব্রিজটি কংক্রিটের করা নিয়ে প্রক্রিয়া শুরু করেছে উত্তর ২৪ পরগনা জেলা প্রশাসন।
বাংলাদেশ সীমান্ত লাগোয়া ব্লক স্বরূপনগর। এই ব্লকের একদিকে গোবিন্দপুর পঞ্চায়েতের তরণীপুর, এবং অপরপ্রান্তে গাইঘাটা ব্লকের রামনগর গ্রাম পঞ্চায়েত। এই দুই পঞ্চায়েতের মধ্যবর্তী এলাকা দিয়ে বয়ে যাওয়া ইছামতী নদীতে একটা সময় ফেরি পরিষেবা চালু ছিল। কিন্তু, আন্তর্জাতিক বাণিজ্য ও যোগাযোগের ক্ষেত্রে এলাকাটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। রাজ্যে পালাবদলের পর ২০১১ সালে এখানে ব্রিজ তৈরির পরিকল্পনা নেয় সরকার। তখন ভারতমালা প্রকল্পের মাধ্যমে এখানে ইছামতীর উপর কংক্রিটের ব্রিজ তৈরি হবে বলে ঘোষণা করেছিল কেন্দ্রীয় সরকার। কিন্তু এত বছর পেরিয়ে গেলেও তা হয়নি। কোনও এক অদৃশ্য কারণে তরণীপুর এলাকায় কংক্রিটের ব্রিজ তৈরির কাজ স্থগিত হয়ে গিয়েছে। তাই, মানুষের যাতায়াতের সুবিধার্থে জেলা পরিষদের পক্ষ থেকে কাঠের ব্রিজ তৈরি হয়েছে বছর দশেক আগে। কিন্তু, বর্তমানে সেই সেতুরও দশা বেহাল। যাতায়াত করা খুবই ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে গিয়েছে।
স্থানীয় বাসিন্দা রবি সাঁতরা বলেন, আমাদের এলাকায় এই ব্রিজ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কারণ এই রাস্তা দিয়েই ছোট চারচাকা, বাইক সহ সাধারণ মানুষ যাতায়াত করে। কিন্তু ব্রিজের দরুণ যাতায়াত করতে বড্ড ভয় লাগে। সুমনা মণ্ডল নামে আরেক বাসিন্দা বলেন, আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের ক্ষেত্রেও এখানে ব্রিজ জরুরি। কারণ বনগাঁর সঙ্গে বসিরহাটের যোগাযোগের সহজ মাধ্যম হল এই রাস্তা। এনিয়ে তৃণমূল নেতা রমেন সর্দার বলেন, ভারতমালা প্রকল্পের মাধ্যমে এখানে কংক্রিটের ব্রিজ করার কথা ঘোষণা করেছিল কেন্দ্রীয় সরকার। কিন্তু এত বছর কেটে গেলেও তা হয়নি। তবে, মানুষের সমস্যা সমাধানের জন্য রাজ্য সরকারই পাকা ব্রিজ তৈরি করবে। জমি অধিগ্রহণ নিয়ে ২৯ এপ্রিল একটি বৈঠক হবে।
এ নিয়ে উত্তর ২৪ পরগনার সভাধিপতি নারায়ণ গোস্বামী বলেন, আমরা কেন্দ্রীয় সরকারের উপর আর ভরসা করছি না। কারণ, বিভিন্ন অছিলায় বাংলাকে বঞ্চিত করা হচ্ছে। তাই, এলাকার বাসিন্দাদের উন্নতির জন্য এই ব্রিজ আমরাই তৈরি করব। ইতিমধ্যেই সংশ্লিষ্ট দপ্তর এনিয়ে বৈঠক করেছে। আশা করছি, কয়েকদিনের মধ্যেই জমি অধিগ্রহণ করে ব্রিজ তৈরির প্রক্রিয়া শুরু হবে।