এই সময়, হাওড়া: বামেদের ব্রিগেড সমাবেশে যোগ দিতে রবিবার সকালে হাওড়া ফেরিঘাটে ভিড় করেছিলেন বাম কর্মী–সমর্থকরা। কিন্তু সেখানে গিয়ে তাঁরা জানতে পারেন, ফেরি চলাচল বন্ধ রয়েছে। সেটা জানতে পেরে ক্ষোভে ফেটে পড়েন তাঁরা। শুরু হয় রাস্তা অবরোধ। তা নিয়ে হাওড়া স্টেশনের বাইরে উত্তেজনা ছড়ায়। পরে অবশ্য তাঁরা পায়ে হেঁটে মিছিল করে ব্রিগেডের উদ্দেশে রওনা দেন।
এ দিন সকাল থেকেই দূরপাল্লার ট্রেন এবং লোকাল ট্রেনে চেপে দক্ষিণবঙ্গের বিভিন্ন জেলা থেকে হাজার হাজার বাম কর্মী–সমর্থকরা হাওড়া স্টেশনে পৌঁছান। তাঁদের অনেকেই ভেবেছিলেন, লঞ্চে চেপে খুব সহজেই ওপারে চলে যাবেন। কিন্তু স্টেশন থেকে বেরিয়ে হাওড়া ফেরিঘাটে গিয়ে তাঁরা দেখেন, গেটে তালা ঝুলছে। তারই প্রতিবাদে শুরু হয় বিক্ষোভ।
ফেরিঘাটের কোলাপসিবল গেট ধরে ঝাঁকুনি দিতে দেখা যায় অনেককে। সেই সঙ্গে দফায় দফায় রাস্তা অবরোধ করেন ব্রিগেডমুখী বাম সমর্থকরা। এর ফলে হাওড়া স্টেশন এবং ফোরশোর রোডের একাংশে গাড়ি চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। হাওড়া স্টেশনের সামনে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়।
খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন ট্র্যাফিক পুলিশের উচ্চপদস্থ আধিকারিকরা। তাঁরা বিক্ষোভকারীদের বোঝানোর চেষ্টা করেন। ব্রিগেড সমাবেশ উপলক্ষে স্টেশনের বাইরে হাওড়া জেলা সিপিএমের পক্ষ থেকে যে ক্যাম্প তৈরি করা হয়েছিল, সেখানকার স্বেচ্ছাসেবকরাও ছুটে আসেন। তাঁরা দলীয় কর্মীদের বুঝিয়ে ব্রিগেডে পাঠানোর ব্যবস্থা করেন।
বাম কর্মী–সমর্থকরা অভিযোগ করেন, তাঁরা যাতে সভাস্থলে যেতে না পারেন তার জন্যই চক্রান্ত করে ফেরি পরিষেবা বন্ধ রাখা হয়েছে। বর্ধমানের আউসগ্রামের সিপিএম কর্মী সোমা দাস বলেন, ‘ফেরি পরিষেবা চালু থাকলে সহজেই গঙ্গা পেরিয়ে কলকাতায় চলে যাওয়া যায়। সেখান থেকে হেঁটে ব্রিগেডে যাওয়া যায়। কিন্তু তৃণমূল সরকার চায় না এই ব্রিগেড সমাবেশ সফল হোক। তাই তারা এ ভাবে বাঁধা দিচ্ছে।’
হুগলি নদী জলপথ পরিবহণ সমবায় সমিতির পক্ষ থেকে অবশ্য একদিন আগেই নোটিস দিয়ে জানানো হয়েছিল, রবিবার ফেরি সার্ভিস বন্ধ থাকবে। সংস্থার পরিচালন সমিতির অন্যতম সদস্য অজয় দে বলেন, ‘এই মুহূর্তে লঞ্চের সংখ্যা কম আছে। বেশিরভাগ লঞ্চ মেরামতির জন্য পাঠানো হয়েছে। যাতে ভিড়ের চাপে কোনও বিপর্যয় না ঘটে, সেই কারণে পরিষেবা বন্ধ রাখা হয়েছে।’
কর্মী–সমর্থকদের ব্রিগেডে যেতে যাতে কোনও অসুবিধা না হয় তার জন্য রবিবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত স্বেচ্ছাসেবকরা হাওড়া স্টেশনের বাইরে ক্যাম্প করে বসেছিলেন। দুপুর দেড়টা নাগাদ হাওড়া ও হুগলি জেলার কর্মী–সমর্থকদের নিয়ে সবচেয়ে বড় মিছিল হাওড়া ব্রিজ ধরে ব্রিগেডের দিকে রওনা দেয়। মিছিলের অগ্রভাগে ছিলেন হাওড়া জেলা সিপিএমের সম্পাদক দিলীপ ঘোষ।