• ল্যাব গড়তে ৩ লক্ষ টাকা দান অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষিকার
    এই সময় | ২১ এপ্রিল ২০২৫
  • এই সময়, সাঁইথিয়া: স্কুলে ল্যাবরেটরি তৈরি করার জন্য তিন লক্ষ টাকা দান করলেন অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষিকা মণিকা চৌধুরী। বীরভূমের সাঁইথিয়া যোগেশ্বরী দত্ত উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ে ভূগোলের শিক্ষিকা ছিলেন তিনি। ২০২৪–এর ৩১ জানুয়ারি তাঁর কর্মজীবন শেষ হয়েছে। শনিবার ভূগোলের ল্যাব তৈরির জন্য স্কুল কর্তৃপক্ষের হাতে তিন লক্ষ টাকার চেক তুলে দেন মণিকা।

    ওই স্কুলে ছাত্রীর সংখ্যা ৫৫০। অফিস রুম–সহ শ্রেণিকক্ষের সংখ্যা সাত। স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষিকা শ্যামলী রায় বলেন, ‘মণিকাদির কাছে আমরা চিরকৃতজ্ঞ। ওঁর সাহায্যে ল্যাবরেটরির পাশাপাশি স্কুলের একটি বড় সমস্যার সমাধান হবে। আমাদের প্রতিটি ক্লাসে একশোর বেশি ছাত্রী রয়েছে। অতিরিক্ত ক্লাসরুমের অভাবে আমরা আলাদা সেকশন করতে পারছি না। ওই টাকায় ভূগোলের ল্যাব পাশাপাশি একটি অতিরিক্ত ক্লাসরুমও তৈরি করা হবে।’

    সাঁইথিয়া পুরসভার ২ নম্বর ওয়ার্ডের ধর্মরাজতলা পাড়ার বাসিন্দা মণিকা। এত দিন কাটিয়ে আসা স্কুলে ক্লাসরুমের সমস্যার পাশাপাশি ভুগোলের ল্যাবের প্রয়োজন রয়েছে সেটা বুঝতে পেরেছিলেন তিনি। তাই সঞ্চয়ের টাকা হাতে পেতেই তা স্কুল কর্তৃপক্ষের হাতে তুলে দিয়েছেন। তাঁর স্বামী সুকুমার মুখোপাধ্যায়ও অবসরপ্রাপ্ত স্কুলশিক্ষক। তিনি বলেন, ‘শুধু স্কুলেই নয়, আমার স্ত্রী বিভিন্ন জনহিতকর প্রতিষ্ঠানেও সামর্থ্য অনুযায়ী সাহায্য করে থাকেন।’

    স্কুলের দশম শ্রেণির ছাত্রী রুচিরা দত্ত, ঈশিতা সাহা, অদ্রিজা রুজদের বক্তব্য, ‘স্কুলে থাকতে দিদি অভিভাবকের মতো আমাদের স্নেহ–ভালোবাসা দিয়ে আগলে রাখতেন। স্কুল ছেড়ে গিয়েও যে আমাদের কথা ভোলেননি, তার প্রমাণ দিলেন।’ স্কুল পরিচালন সমিতির সভাপতি উত্তম মণ্ডল জানিয়েছেন, বয়সকালে মানুষ সাধারণত সঞ্চয়ের টাকা হাতছাড়া করতে চান না। মণিকা দিদিমণি সেই মানসিকতা থেকে সম্পূর্ণ আলাদা।

    একাকার সাংস্কৃতিক কর্মী বিজয় দাস বলেন, ‘এখন মূল্যবোধের অবক্ষয় বেড়েই চলেছে। এমন এক সময়ে এক শিক্ষিকার কর্মজীবনের সঞ্চয়েক একাংশ স্কুলের জন্য দান করার সিদ্ধান্ত উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে।’

  • Link to this news (এই সময়)