রাজ্যপাল বাড়িতে আসেননি, হতাশ মুর্শিদাবাদের অশান্তিতে গুলিবিদ্ধ এজাজের পরিবার
দৈনিক স্টেটসম্যান | ২১ এপ্রিল ২০২৫
জাফরাবাদে মৃত বাবা-ছেলের বাড়িতে গিয়ে পাশে থাকার আশ্বাস দিয়েছেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। কিন্তু মুর্শিদাবাদের অশান্তির ঘটনায় আরও এক মৃত এজাজ আহমেদের বাড়িতে গেলেন না তিনি। এজাজের মা ভেবেছিলেন রাজ্যপাল তাঁর বাড়িতে আসবেন। কিন্তু জাফরাবাদে নিহতদের বাড়িতে গেলেও এজাজের বাড়িতে যাননি রাজ্যপাল। এ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন এজাজের পরিবারের সদস্যরা।
সংশোধিত ওয়াকফ আইন নিয়ে প্রতিবাদের আবহে সাজুর মোড়ে অগ্নিগর্ভ পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল। সেখানে গণ্ডগোলের মাঝে পড়ে গুলিবিদ্ধ হন সুতির কাশিমনগরের বাসিন্দা এজাজ আহমেদ। তিনি পেশায় পরিযায়ী শ্রমিক। আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাঁকে উদ্ধার করে ভর্তি করা হয় মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজে। দু’দিন পর সেখানেই তাঁর মৃত্যু হয়ে। পরিবারের দাবি, সেদিন মামার বাড়ি থেকে নিজের বাড়িতে ফিরছিলেন এজাজ। সেই সময় তাঁর বুকে গুলি লাগে। তাঁর বাড়িতে রয়েছেন বৃদ্ধ বাবা, মা, স্ত্রী ও ১৪ মাসের কন্যা সন্তান।
এজাজের পরিবারের সদস্যরা জানিয়েছেন, পুলিশ প্রশাসন নিয়মিত তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন। তবে জাফরাবাদে নিহত দুইজনের বাড়িতে গেলেও সেখান থেকে কয়েক কিলোমিটার দূরে এজাজের বাড়িতে আসেননি রাজ্যপাল। এই নিয়ে হতাশা প্রকাশ করেছেন এজাজের মা সায়েমা। তিনি আশা করেছিলেন যে রাজ্যপাল তাঁদের বাড়িতেও আসবেন। কিন্তু তিনি দেখলেন জাফরাবাদে গেলেও তাঁদের বাড়িতে আসেননি সিভি আনন্দ বোস। তাঁর কথায়, ‘আমার ছেলে বাইরে কাজ করত। তাতেই সংসার চলত। আমার ছেলে তো চলে গেল। তাঁর সন্তান রয়েছে, বউ রয়েছে। তাঁরা চলবে কী করে। মুখ্যমন্ত্রী ওঁর সন্তানের দিকে তাকাক।”
মায়ের সুরেই কথা বলেছেন এজাজের দাদাও। তিনি বলেছেন, ‘আমারাও আশা করেছিলাম উনি (রাজ্যপাল) আমাদের বাড়িতে আসবেন। রাজ্যপাল তো কোনও দলের নন, তিনি সবার। এই ঝামেলায় হরগোবিন্দ দাসের পরিবার যেমন প্রিয়জন হারিয়েছেন, আমরাও তরতাজা প্রাণ হারিয়েছি। আমরাও দুঃখী। অন্যজনের বাড়িতে গেলেও আমাদের বাড়িতে আসেননি। এটা আশা করিনি।’