মহিলাদের ভয় এখনও কাটেনি, হিংসা কবলিত এলাকা ঘুরে জানাল মহিলা কমিশন
দৈনিক স্টেটসম্যান | ২১ এপ্রিল ২০২৫
মুর্শিদাবাদে অশান্তির আবহে শনিবার ধুলিয়ান, সামশেরগঞ্জে গিয়েছিলেন জাতীয় মহিলা কমিশনের সদস্যরা। সেখান থেকে ফিরে কমিশনের চেয়ারপার্সন বিজয়া রহাটকর জানিয়েছেন, মুর্শিদাবাদে হিংসা কবলিত এলাকার মহিলাদের ভয় এখনও কাটেনি। তাঁরা এখনও আতঙ্কে রয়েছেন। তাঁদের আত্মবিশ্বাস বাড়াতে অনেক কাজ করতে হবে। পাশাপাশি তিনি আরও জানিয়েছেন, মুর্শিদাবাদের পরিস্থিতির রিপোর্ট কেন্দ্রকে দেওয়া হবে।
শনিবার মুর্শিদাবাদের বিভিন্ন এলাকায় গিয়ে মহিলাদের সঙ্গে কথা বলেছেন জাতীয় মহিলা কমিশনের প্রতিনিধিরা। তাঁরা মালদহেও গিয়েছিলেন। ওই সকল মহিলাদের একাংশ স্থানীয় পুলিশ প্রশাসনের উপর একরাশ ক্ষোভ উগরে দেন। এলাকায় স্থায়ী বিএসএফের শিবির করার দাবি জানিয়েছেন তাঁরা।
রবিবার নিউটাউনের একটি হোটেলে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়েছিলেন কমিশনের চেয়ারপার্সন বিজয়া। তিনি বলেছেন, ‘মহিলারা জানিয়েছেন, বিএসএফের জন্যই তাঁরা বেঁচে আছেন। আমরা যেখানেই গিয়েছি, মহিলাদের সঙ্গে কথা বলেছি। তাঁদের রাগে আমরা কেঁপে উঠেছি। তাঁদের সব স্বপ্ন শেষ। তাঁরা সব হারিয়েছেন। এক মহিলা কয়েকদিন আগেই এক সন্তানের জন্ম দিয়েছিলেন। তাঁকেও ঘর ছাড়তে হয়েছে!’ তিনি আরও জানিয়েছেন, তিনি সেখানকার কঠিন পরিস্থিতির কথা ভুলতে পারছেন না। অনেকের বাড়িতে লুটপাটও হয়েছে বলে তিনি জানতে পেরেছেন। মহিলাদের ভয় দেখানো হয়েছে। তাঁদের মনোবল ভেঙে গিয়েছে। তাই তাঁদের মনোবল বাড়ানোর কাজ করতে হবে।
সংশোধিত ওয়াকফ আইনের প্রতিবাদে মুর্শিদাবাদে অশান্তির জেরে ধুলিয়ান, সামশেরগঞ্জ এবং সুতির বহু বাসিন্দা এখনও ঘরছাড়া। তাঁদের মধ্যে বেশিরভাগ মানুষ গঙ্গা পেরিয়ে মালদহে আশ্রয় নিয়েছেন। ইতিমধ্যেই প্রশাসনের উদ্যোগে তাঁদের অনেককে বাড়িতে ফিরিয়ে আনা হয়েছে। তবে এখনও অনেকে বাড়ি ফিরে আসেননি। তাঁদের আত্মবিশ্বাস ফিরিয়ে আনার কাজ করছে পুলিশ প্রশাসন। মুর্শিদাবাদের পরিস্থিতি বর্তমানে স্বাভাবিক রয়েছে।
শুক্রবার মালদহে যাওয়ার পর শনিবারই মুর্শিদাবাদে হিংসা কবলিত এলাকায় গিয়েছিলেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। পাশাপাশি জেলায় গিয়ে পরিস্থিতি খতিয়ে দেখেছেন জাতীয় মানবাধিকার কমিশন ও মহিলা কমিশনের প্রতিনিধিরা। এ বিষয়ে তৃণমূল নেতা কুণাল ঘোষ বলেছেন, ‘কে সেখানে যাবেন, সেটা আদালত দেখবে। রাজ্যপাল তো বটেই, দিল্লি থেকে আসা দুই কমিশনও বিজেপির রাজনৈতিক লক্ষ্যপূরণে সাহায্যের চেষ্টা করছে। সন্দেশখালিতে আমরা যা দেখেছি, এখানেও পরে তা সামনে আসবে।’