• একই শিক্ষককে চারমাসে বারবার বদলি! প্রতিবাদে কাউন্সিল দপ্তরে ‘হুজ্জতি’ তৃণমূল কাউন্সিলরের
    প্রতিদিন | ২২ এপ্রিল ২০২৫
  • অভ্রবরণ চট্টোপাধ্যায়, শিলিগুড়ি: এক শিক্ষককে বারবার বদলির প্রতিবাদে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের কাউন্সিল দপ্তরে গিয়ে ‘হুজ্জতি’ করলেন তৃণমূল কাউন্সিলর তথা পশ্চিমবঙ্গ প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির সম্পাদক রঞ্জন শীল শর্মা। সোমবার দুপুরে তিনি শিক্ষকদের নিয়ে কাউন্সিল দপ্তরে যান স্মারকলিপি জমা দিতে। তখনই কাউন্সিল চেয়ারম্যান দিলীপ কুমার রায়ের সঙ্গে বাকবিতন্ডায় জড়িয়ে পড়েন রঞ্জন। দুপক্ষের মধ্যে রীতিমতো উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। রঞ্জন শীল শর্মা চেয়ার থেকে উঠে টেবিল চাপড়ে একপ্রকার হুঁশিয়ারি দেন কাউন্সিল চেয়ারম্যানকে। তাই পরে বাধ্য হয়ে ওই শিক্ষকের বদলি আপাতত স্থগিত করে দেন চেয়ারম্যান। তবে শিক্ষকদের থেকে এহেন আচরণ আশা করেনি কাউন্সিল চেয়ারম্যান। তিনি ভীষণভাবে মর্মাহত।

    জানা গিয়েছে, খড়িবাড়ি সার্কেলের শিক্ষক মহম্মদ ইরসাদকে চারমাসের মধ্যে বেশ কয়েকবার বদলি করা হয়েছে। তবে নতুন স্কুলে গেলে তাকে ঢুকতেও দেওয়া হচ্ছে না। তাই এদিন সেই শিক্ষককে সঙ্গে নিয়ে কাউন্সিল দপ্তরে হাজির হন পশ্চিমবঙ্গ প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির সদস্যরা। কাউন্সিল চেয়ারম্যান দিলীপ কুমার রায়ের কক্ষে ঢুকে প্রথমেই তাঁর কাছে জানতে চাওয়া হয় কেন বারবার বদলি করা হচ্ছে একই শিক্ষককে। এরপর চেয়ারম্যান নানান যুক্তি খাড়া করলেও তা মানতে নারাজ ছিলেন রঞ্জন। তখনই দু’পক্ষের মধ্যে তুমুল বচসা বেঁধে যায়। কাউন্সিলের কাজকর্ম থমকে যায়। রঞ্জন চেয়ার ছেড়ে উঠে টেবিল চাপড়ানো শুরু করেন। এমনকি চেয়ারম্যানকে স্পষ্ট জানিয়ে দেন তিনি সদুত্তর না পেলে ঘেরাও করে রেখে দেওয়া হবে। শেষে একপ্রকার বাধ্য হয়েই ওই শিক্ষক মহম্মদ ইরসাদকে তাঁর স্কুলে থাকার জন্য লিখিত আকারে জানিয়ে দেন কাউন্সিল চেয়ারম্যান।

    এদিন শিক্ষকরা যে ব্যবহার তাঁর সঙ্গে করেছেন তাতে তিনি অপমানিত ও লজ্জিত তা স্পষ্ট জানিয়েছেন। কাউন্সিল চেয়ারম্যান দিলীপ কুমার রায় বলেন, “আমরা আইন মেনেই কাজ করেছি। কাউকে বদলি করা হয়নি। ওরা যা দাবি করেছে তা সম্পূর্ণ অযৌক্তিক। কারণ শিক্ষার স্বার্থে কোনও বিদ্যালয়ে শিক্ষক কম থাকলে অন্য বিদ্যালয় থেকে শিক্ষক সেখানে আনাই যায়। সেটা সাময়িক বদলি আবার ওই বিদ্যালয়ে শিক্ষক নিয়োগ হলে তাকে পুরনো জায়গায় ফিরিয়ে দেওয়া হবে। কিন্তু তারপরেও তারা স্মারকলিপি দেওয়ার নামে যা করল তাতে আমি মর্মাহত। আমরা সকলেই শিক্ষক তাই সকলের শালীনতা বজায় রাখা দায়িত্ব। এরা যা করল তা আমরা অবশ্যই উপযুক্ত জায়গায় জানাব।” অন্যদিকে রঞ্জন শীল শর্মা বলেন, “আমরা কাউকে অপমান করিনি। কারও সঙ্গে অশালীন ব্যবহার করিনি। আমাদের দাবিও অযৌক্তিক নয়। যদি অযৌক্তিক হত তাহলে তিনি লিখিত আকারে নির্দেশ দিতেন না। ওঁ যা বললেন তাতে ওঁকে নোবেল কিংবা অস্কার দেওয়া উচিত। উনি বললেন প্রাথমিকের শিক্ষককে দিয়ে নাকি উচ্চতর বিদ্যালয়ে ক্লাস করাবেন। এগুলো হাস্যকর যুক্তি। একই শিক্ষককে চার মাসের মধ্যে একাধিকবার বদলি করে উনি শিক্ষকমহলকে অপমানিত করেছে। ওঁর এটা বোঝা উচিত।”
  • Link to this news (প্রতিদিন)