• স্যালাইন কাণ্ডে নিহতের পরিবার পেল ক্ষতিপূরণ, মেদিনীপুর হাসপাতাল পরিদর্শনে মুখ্যসচিব
    এই সময় | ২২ এপ্রিল ২০২৫
  • প্রায় সাড়ে তিন মাস অতিবাহিত মেদিনীপুর হাসপাতালে প্রসূতি মৃত্যুর ঘটনার। প্রশাসনের তরফে নিহত প্রসূতির পরিবারের হাতে ক্ষতিপূরণের চেক তুলে দেওয়া হয়েছে। পরিবারের একজনকে চাকরি দেওয়ার প্রতিশ্রুতিও দেওয়া হয়েছিল। সেটিও যাতে শীঘ্রই হয়, সে ব্যাপারে আশাবাদী নিহত প্রসূতির পরিবারের লোকজন। সোমবার মেদিনীপুর হাসপাতালের পরিকাঠামো ও স্বাস্থ্যব্যবস্থা খতিয়ে দেখতে পরিদর্শনে যান রাজ্যের মুখ্যসচিব মনোজ পন্থ।

    গড়বেতার সারগা গ্রামের বাসিন্দা নিহত মামনি রুইদাসের স্বামী দেবাশিস রুইদাসের হাতে শুক্রবারই মুখ্যমন্ত্রীর তরফে পাঠানো ৫ লক্ষ টাকার চেক তুলে দেওয়া হয়। সোমবার সন্ধ্যায় দেবাশিস বলেন, ‘রবিবার আমার অ্যাকাউন্টে মুখ্যমন্ত্রীর তরফে পাঠানো ৫ লক্ষ টাকা ঢুকেছে। বলা হয়েছে আমাদের সদ্যোজাত পুত্রসন্তানের প্রতিপালনের জন্য এই টাকা দেওয়া হয়েছে। আমি জেলা ও ব্লক প্রশাসন-সহ রাজ্য সরকার তথা মুখ্যমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানাই। রাজ্য সরকারের তরফে আমাকে একটি চাকরির প্রতিশ্রুতিও দেওয়া হয়েছিল। সেটা যদি দ্রুত হয়, খুব উপকৃত হব।’

    গত ৮ জানুয়ারি (২০২৫) মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের ‘মাতৃমা’ বিভাগে সিজারের পরই অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন পাঁচ প্রসূতি। ১০ জানুয়ারি ভোরে মৃত্যু হয় মামনি রুইদাস নামে ওই প্রসূতির। বাকিদের মধ্যে রেখা সাউ, মিনারা বিবি ও মাম্পি সিংহ সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে গেলেও, এখনও কলকাতার এসএসকেএম হাসপাতালে চিকিৎসাধীন কেশপুরের নাসরিন খাতুন। এই ঘটনায় হাসপাতালের তৎকালীন সুপার জয়ন্ত রাউত-সহ ১৩ জন চিকিৎসককে সাসপেন্ড করে রাজ্য সরকার। পরবর্তী সময়ে ৭ জন জুনিয়র চিকিৎসকের সাসপেনশন প্রত্যাহার করা হয়। তবে, এখনও সাসপেনশনের মধ্যেই রয়েছেন তৎকালীন সুপার-সহ ছয় সিনিয়র চিকিৎসক। সোমবার (২১ এপ্রিল) মুখ্যমন্ত্রীর মেদিনীপুর সফর চলাকালীন বিকেল ৫টা নাগাদ মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে ‘সারপ্রাইজ ভিজিট’ করলেন মুখ্যসচিব মনোজ পন্থ।

    মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের মাতৃমা ভবন, ক্যাথল্যাব ইউনিট, সিসিটিভি কন্ট্রোল রুম-সহ একাধিক ইউনিট পরিদর্শন করেন মুখ্যসচিব। এছাড়াও, মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে যে সব উন্নয়নমূলক কাজকর্মগুলি চলছে সেগুলিও খতিয়ে দেখেন মুখ্যসচিব। পরিষেবা সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে হাসপাতালের নার্স ও চিকিৎসকদের সঙ্গেও কথা বলেন মুখ্যসচিব। বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা করেন মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের অধ্যক্ষ মৌসুমী নন্দী এবং সুপার ইন্দ্রনীল সেনের সঙ্গে। 

    হাসপাতাল সুপার ডঃ ইন্দ্রনীল সেন বলেন, ‘মুখ্যসচিব এদিন মূলত আমাদের ক্যাথলেব-সহ বিভিন্ন বিভাগ ঘুরে দেখেন। সন্তোষ প্রকাশ করেছেন তিনি। এছাড়াও, পরিষেবা সংক্রান্ত নানা বিষয় নিয়েও আলোচনা হয়। আমরাও বেশ কিছু প্রস্তাব দিয়েছি। বিশেষত, চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীর যে ঘাটতি রয়েছে, তাও জানিয়েছি আমরা।’

    মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের অধ্যক্ষ ডঃ মৌসুমী নন্দী বলেন, ‘মুখ্যসচিব আমাদের অ্যাকাডেমিক বিল্ডিং, ক্যাথল্যাব, মেডিসিন বিভাগ, সার্জারি বিভাগ, সিসিইউ বিভাগ-সহ নবনির্মিত তিনটি গেট পরিদর্শন করে দেখেন। সার্বিকভাবে তিনি সন্তোষ প্রকাশ করেন।’ 

  • Link to this news (এই সময়)