ওষুধের দোকান কয়েক হাজার, ইনস্পেক্টর ৪ জন, নিধিরাম সর্দার ড্রাগ কন্ট্রোল বিভাগ
বর্তমান | ২২ এপ্রিল ২০২৫
সংবাদদাতা, শিলিগুড়ি: কয়েক বছর ধরে ওষুধের দোকান বেড়েই চলেছে। করোনা সংক্রমণ কালের পর থেকে পাড়ায় পাড়ায় ওষুধের দোকান করার প্রবণতা ব্যাপকভাবে দেখা দিয়েছে। ওষুধের দোকান বাড়লেও ওষুধের গুণগতমান যাচাইয়ের জন্য দার্জিলিং জেলায় ড্রাগ কন্ট্রোল ইনস্পেক্টরের সংখ্যা কিন্তু বাড়েনি।
জেলায় কয়েক হাজার ওষুধের দোকান আছে। প্রতিটি দোকানে নজরদারি ও ওষুধের গুনমান যাচাইয়ের জন্য নমুনা সংগ্রহের কাজ চলছে মাত্র চারজন ইনস্পেক্টর দিয়ে। জেলায় ড্রাগ কন্ট্রোল কার্যত নিধিরাম সর্দার হয়ে রয়েছে। এছাড়াও এই দপ্তরের এখনও নিজস্ব কোনও গাড়ি নেই। যেখানে অন্যান্য সরকারি দপ্তরে গাড়ি আছে, সেখানে এই গুরুত্বপূর্ণ বিভাগটি গাড়িশূন্য।
সম্প্রতি যে হারে ভেজাল ওষুধের তালিকা সরকারিভাবে প্রকাশ করা হচ্ছে তাতে সাধারণ মানুষের মনে আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। এতদিন যেসকল ওষুধ লোকজন খেয়ে এসেছে তার অনেকগুলি ভেজাল বলে চিহ্নিত হয়েছে। এতে
ড্রাগ কন্ট্রোলের ভূমিকা নিয়েও সাধারণ মানুষের মনে প্রশ্ন ও ক্ষোভ রয়েছে।
দার্জিলিং জেলা ড্রাগ কন্ট্রোলের ইনস্পেক্টর হুমায়ুন কবির এবং শতদল বিশ্বাস বলেন, আমরা মাত্র চারজন ইনস্পেক্টর আছি। আমাদের অফিসে কোনও গাড়ি নেই। দার্জিলিং জেলার সঙ্গে কালিম্পং জেলাও এখান থেকে দেখতে হচ্ছে। সব মিলিয়ে আমাদের উপর একটা প্রচণ্ড চাপ। আর এই চাপের মধ্যে প্রত্যাশামতো নমুনা সংগ্রহ ও নজরদারি করার কাজ কঠিন হয়ে পড়েছে। তবুও আমরা চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।
জাল ওষুধ ধরার প্রসঙ্গে হুমায়ুন কবীর বলেন, আমরা এখনও পর্যন্ত যতগুলি নমুনা সংগ্রহ করেছি, তারমধ্যে কোনও জাল ওষুধ ধরা পড়েনি। এরপরেও অভিযান ধারাবাহিকভাবে চলছে। মাসে ইনস্পেক্টর প্রতি পাঁচটি করে নমুনা কলকাতায় পরীক্ষার জন্য পাঠানো হচ্ছে। অর্থাৎ দার্জিলিং ও কালিম্পং জেলা থেকে মাসে ২০টি নমুনা কলকাতায় যাচ্ছে।
জেলা ড্রাগ কন্ট্রোল বিভাগের হিসেব অনুযায়ী শিলিগুড়ি থানা এলাকায় সব মিলিয়ে ১২০০’র বেশি ওষুধের দোকান রয়েছে। দার্জিলিং জেলায় প্রায় তিন
হাজার। এর সঙ্গে কালিম্পং জেলাও আছে। ব্যাপক হারে ওষুধের দোকান বেড়েছে। ওষুধ নিয়ে বিতর্ক ও আতঙ্কও দেখা দিয়েছে। এই প্রেক্ষাপটে এত বড় এলাকা থেকে মাসে মাত্র ২০টি নমুনা পাঠানো কিছুই না বলে মনে করে
ওয়াকিবহাল মহল। হুমায়ুন কবীর ও শতদল বিশ্বাস বলেন, অফিসের কোনও গাড়ি নেই। এই পরিকাঠামোয় এত বিশাল এলাকার হাজার হাজার ওষুধের দোকান ঘুরে বেশি করে নমুনা সংগ্রহ সম্ভব হচ্ছে না।