কোচবিহারের মরা তোর্সা ড্রেজিং করতে জেলা থেকে প্রস্তাব গেল রাজ্যে
বর্তমান | ২২ এপ্রিল ২০২৫
সুকান্ত গঙ্গোপাধ্যায়, কোচবিহার: কোচবিহার শহরের গা ঘেঁষে চলে যাওয়া তোর্সা নদীর পাশেই রয়েছে মরা তোর্সা। নাম শুনেই বোঝা যায় এটির অবস্থা করুণ। বর্ষার সময় কিছুটা ফুলেফেঁপে উঠলেও বছরের অন্যান্য সময় এখানে তেমন জল থাকে না। বরং কচুরিপানা, কোথাও আবার আবর্জনায় ভরে থাকে। এই মরা তোর্সাতে ড্রেজিং করে তার নাব্যতা বাড়াতে চাইছে সেচদপ্তর। আর এই কাজের জন্য ইতিমধ্যেই জেলা সেচদপ্তর রাজ্য সেচদপ্তরের কাছে প্রস্তাব পাঠিয়েছে।
‘নো কস্ট টু গভর্নমেন্ট এক্সচেকার’ পদ্ধতিতে এই ড্রেজিং করার পরিকল্পনা করা হয়েছে। যাতে সরকারের কোনও খরচ হবে না। নাব্যতা হারানো এই নদীখাত থেকে যে মাটি, পলি বা বালি ওঠার সম্ভাবনা রয়েছে তার হিসেব কষে নির্দিষ্ট এজেন্সিকে কাজের বরাত দেওয়া হবে। মরা তোর্সার গর্ভে ড্রেজিংয়ের কাজ করার সময় যা উঠে আসবে তা ওই এজেন্সিই নেবে। তার সম্ভাব্য দাম যাচাই করে দেখবে সেচদপ্তর। এটা হলে সাড়ে পাঁচ কিমি লম্বা এই মরা তোর্সা সংস্কার হবে এবং আগামী দিনে এলাকার চেহারাই বদলে যাবে।
সেচদপ্তরের কোচবিহারের এগজিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার অসীম চৌধুরী বলেন, কোচবিহারের মরা তোর্সায় ড্রেজিং করার জন্য রাজ্যের কাছে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। চিফ ইঞ্জিনিয়ারের মাধ্যমে এ মাসেই ওই প্রস্তাব আমরা পাঠিয়েছি। ওদিক থেকে সবুজ সঙ্কেতের আপেক্ষায় আছি।
কোচবিহারের জেডি হাসপাতাল সংলগ্ন এলাকা থেকে শুরু করে রানিবাগান এলাকা পর্যন্ত বিস্তৃত এই মরা তোর্সা। টাকাগাছ গ্রাম পঞ্চায়েত ও তোর্সার বাঁধ ঘেঁষে এই মরা তোর্সা। একসময় এটি তোর্সারই মূল স্রোতে ছিল। নদী সরে যাওয়ার কারণে এটি তোর্সার মূল স্রোত থেকে কার্যত বিচ্ছিন্ন হয়ে গিয়েছে। গত কয়েক দশকে এর চারপাশে গজিয়ে উঠেছে প্রচুর বাড়িঘর। মরা তোর্সা এখন কচুরিপানায় ভর্তি। আশপাশের আবর্জনাও জমা করা হয়। ফলে এটি কোনও কোনও জায়গায় বদ্ধ জলাশয়ে পরিণত হয়েছে। অনেক জায়গায় এটি বুজে যাওয়ার অবস্থা।
অথচ এটি পূর্বের অবস্থায় ফিরলে এলাকার পরিবেশ যেমন ভালো হবে তেমনই মাছ চাষ থেকে শুরু করে বোটিংও করা যেতে পারে। ফলে আগামী দিনে মরা তোর্সা সংস্কার হলে কোচবিহার শহরের সৌন্দর্যায়নের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে এটিও একটি আকর্ষণীয় স্থান হয়ে উঠতে পারে। - নিজস্ব চিত্র।