নিজস্ব প্রতিনিধি, নন্দকুমার: জমি থেকে মাটি কাটা নিয়ে শরিকি বিবাদে দুই মহিলাকে নৃশংসভাবে পিটিয়ে খুন করা হল। রবিবার রাতে নন্দকুমার থানার বড়গোদা গ্রামে ওই ঘটনায় তীব্র উত্তেজনা দেখা দেয়। মৃতদের নাম মিনুরানি দাস(৫২) ও সুপ্রিয়া দাস(২৪)। সম্পর্কে তাঁরা শাশুড়ি ও বউমা। সংঘর্ষের ঘটনায় মিনুরানিদেবীর স্বামী গুরুপদ দাস গুরুতর জখম হয়েছেন। তিনি তমলুক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। লোহার রড দিয়ে মাথায় আঘাত করার পর কাঁচি দিয়ে জিভ কেটে নেওয়া হয়। রাত পৌনে ৮টা নাগাদ ওই ঘটনার পর সস্ত্রীক গুরুপদ এবং বউমাকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানেই দু’জনের মৃত্যু হয়।
শ্রীরামপুর বটতলা থেকে এক কিলোমিটার দূরে অবস্থিত বড়গোদা গ্রাম। কংসাবতী নদী সংলগ্ন এলাকায় গুরুপদবাবুর বাড়ি। তাঁরা মোট ছয় ভাই। একজন মারা গিয়েছেন। আরেকজন শ্রীরামপুরে বসবাস করেন। একই জায়গায় মধ্যে বাকি চার ভাইয়ের বসবাস। গুরুপদবাবুর দুই ভাই সুভাষ ও কিশোরীমোহন কংসাবতী নদী সংলগ্ন শরিকি জমির মাটি স্থানীয় একজনকে বিক্রি করে দেয়। সেখানে জেসিবি নামিয়ে মাটি কেটে মোটরভ্যানে করে অন্যত্র নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল। গুরুপদবাবু, তাঁর স্ত্রী ও বউমা ওই জমির মাটি বিক্রি নিয়ে আপত্তি তোলেন। তাঁদের না জানিয়ে জমি থেকে মাটি বিক্রি নিয়ে ঝামেলা হয়।
রবিবার সন্ধ্যা নাগাদ গুরুপদবাবু বিষয়টি নিয়ে স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্যা সুপ্রিয়া মণ্ডলের কাছে অভিযোগ জানান। এরপর তিনি পঞ্চায়েত প্রধানের কাছে অভিযোগ জানাতে গিয়েছিলেন। রাত পৌনে ৮টা নাগাদ অভিযোগ জানিয়ে বাড়ি ফেরার সময়ই তিনি চিৎকার চেঁচামেচি শুনতে পান। তড়িঘড়ি বাড়িতে এসে দেখেন, তাঁরই দুই ভাই ও তাদের পরিবার তাঁর বাড়িতে এসে বউমার উপর হামলা করছে। বউমাকে বাঁচাতে ঝাঁপিয়ে পড়েন শাশুড়ি মিনুরানিদেবী। তড়িঘড়ি স্ত্রী ও বউমাকে বাঁচাতে গুরুপদবাবু তাদের আটকাতে যান। কিন্তু, হামলাকারীরা লোহার রড দিয়ে তিনজনের মাথায় আঘাত করে। কাঁচি দিয়ে মিনুরানিদেবীর জিভ কেটে দেয়। সোমবার দুপুর ১২টা নাগাদ গুরুপদবাবুর বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, গোটা ঘরে রক্ত জমাট বেঁধে রয়েছে। সেখানে পড়ে রয়েছে কাঁচি। ঘটনাস্থল তখনও ঘেরা হয়নি। খুনের ঘটনায় মূল অভিযুক্ত গুরুপদবাবুর ভাই সুভাষ বড়গোদা গ্রামের বিজেপি নেতা।