নিজস্ব প্রতিনিধি, মেদিনীপুর: ২০২৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনের আগে তৃণমূলের নেতাকর্মীদের অক্সিজেন জোগাচ্ছে শালবনীতে জিন্দালদের পাওয়ার প্লান্ট। সোমবারই সেই পাওয়ার প্লান্টের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। প্রতি নির্বাচনের আগে বিরোধীরা রাজ্যে ‘শিল্প নেই, শিল্প নেই’ বলে চিৎকার শুরু করে, তার মুখের মতো জবাব হতে চলেছে শালবনীর এই পাওয়ার প্লান্ট। সেই কথা মাথায় রেখে ২০২৬ সালের বিধানসভা ভোটের আগে শিল্পায়নকে সামনে রেখেই প্রচারে ঝাঁপাতে চাইছে তৃণমূলের নেতাকর্মীরা। সোমবার শালবনীতে পাওয়ার প্লান্টের শিলান্যাস অনুষ্ঠানের মঞ্চে হাজির ছিলেন জঙ্গলমহলের সমস্ত জনপ্রতিনিধিরা। এদিন মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্য তাঁদের অক্সিজেন জুগিয়েছে। তৃণমূলের নেতাকর্মীদের কথায়, মুখ্যমন্ত্রী প্রতিশ্রুতি দিলে রাখতে জানেন। গত লোকসভা ভোটের সময়ও বিজেপির নেতাকর্মীরা শিল্প ও কর্মসংস্থানের প্রশ্ন তুলে প্রচার চালিয়েছিল। কিন্তু সামনের বিধানসভা নির্বাচনে তারা কোনও ইস্যু খুঁজে পাবে না। জেলার বিভিন্ন প্রান্তে শিল্পায়ন নিয়ে লাগাতার প্রচার চালানো হবে।
রাজ্যের মন্ত্রী মানস ভুঁইয়া বলেন, বাম আমলে শুধুই প্রতিশ্রুতি শুনতাম। মুখ্যমন্ত্রী যা কাজ করছেন, দেশ স্বাধীন হওয়ার পর থেকে কোনও সরকার তা করতে পারেনি। মানুষের কাছে গিয়ে শিল্পায়নের কথা বলব।
মেদিনীপুর সাংগঠনিক জেলা তৃণমূলের সভাপতি সুজয় হাজরা বলেন, বিরোধীরা প্রচার করে, শিল্প কোথায়। আজ বিরোধীরা চুপ। কারণ তাঁরা বুঝে গিয়েছেন, এই রাজ্যে শিল্পায়ন ও কর্মসংস্থান হচ্ছে। আগামী দিনে আরও শিল্প আসবে। আমরা জেলাজুড়ে প্রচারে নামব।
এদিন ঘাটাল লোকসভার সাংসদ দেব বলেন, মুখ্যমন্ত্রীকে ধন্যবাদ। তাঁর স্বপ্ন ‘এগিয়ে বাংলা’ রূপায়িত হচ্ছে। যাঁরা বলছে বাংলায় উন্নয়ন হচ্ছে না, শিল্প নেই। তাঁরা আজকে দেখুন।
প্রসঙ্গত, ২০১৮ সালের পঞ্চায়েত নির্বাচন ও ২০১৯ সালের লোকসভা ভোটে ভালো ফল করেছিল বিজেপি। সেটাই ছিল শেষ। কারণ এরপর আর একটাও নির্বাচনে দাঁড়াতে পারেনি গেরুয়া শিবির। কিন্তু প্রতিবছর নির্বাচন এলেই শালবনীর শিল্প পরিস্থিতি নিয়ে প্রচার চালাত বিজেপির নেতাকর্মীরা। অস্বস্তিতে পড়ত তৃণমূল। কিন্তু এবার শালবনীতে পাওয়ার প্লান্ট তৈরি হতে চলায় মাথায় হাত বিজেপির। এদিন মেদিনীপুরের সাংসদ জুন মালিয়া বলেন, মুখ্যমন্ত্রী আমাদের রাজ্যের গর্ব। ওঁর দেখান পথেই আমরা এগিয়ে যাব। শিল্পে নতুন দিশা দেখাবে বাংলা। এক বিজেপি নেতা বলেন, শিল্পায়ন ছিল আমাদের অন্যতম প্রধান ইস্যু। পাওয়ার প্লান্ট তৈরি হলে প্রচারের জন্য নতুন ভাবনা চিন্তা করতে হবে। কিন্তু আমাদের গোষ্ঠী কোন্দল কমছে না। নতুন কিছু ভাববে কে। রাজ্যের মন্ত্রী বীরবাহা হাঁসদা বলেন, শিল্প হবে। কর্মসংস্থানও হবে। ঝাড়গ্রাম জেলায় এনিয়ে প্রচারে ঝড় উঠবে।
পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক মহম্মদ রফিক বলেন, বিজেপি ধর্ম নিয়ে রাজনীতি করতে থাকুক। এবারের নির্বাচনে ওদের আর খুঁজে পাওয়া যাবে না। যদিও এনিয়ে কটাক্ষের সুর বিজেপির নেতাকর্মীদের গলায়। জেলা বিজেপির মুখপাত্র অরূপ দাস বলেন, শিল্পায়ন অক্সিজেন না কার্বন ডাই অক্সাইড, তা পরে বোঝা যাবে। সামনে ভোট আসছে। তাই এই সরকার ভাওতা দিচ্ছে। মানুষ যোগ্য জবাব দেবে। কারণ, ২৬ হাজার জনের চাকরি বাতিল হয়েছে। -নিজস্ব চিত্র