• ‘সন্দেহজনক’ ওষুধ ঢুকছে অন্য জেলা থেকে, উদ্বেগ, ড্রাগ কন্ট্রোলারের তদন্ত শুরু নদীয়ায়
    বর্তমান | ২২ এপ্রিল ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, কৃষ্ণনগর: চোরাই পথে জেলার বিভিন্ন দোকানে আনা হচ্ছে ‘সন্দেহজনক’ ওষুধ। সরকারি নিয়ম না মেনে ওষুধ আনানো হচ্ছে ঘুরপথে।‌ দেখা যাচ্ছে, সেই সমস্ত ওষুধ ভিনজেলা থেকে নদীয়া জেলায় ঢুকছে। বিষয়টি সামনে আসতেই উদ্বেগ বেড়েছে প্রশাসনিক মহলে। দ্রুত তদন্ত প্রক্রিয়ার কাজ শুরু করেছে নদীয়া জেলার ড্রাগ কন্ট্রোলার। ইতিমধ্যেই জেলার বেশকিছু জায়গায় অভিযান চালানো হয়েছে। যদিও সেই সন্দেহজনক ওষুধ এখনও পর্যন্ত উদ্ধার করা যায়নি। তবে ড্রাগ কন্ট্রোলারের তরফ থেকে নদীয়া জেলার বেশকিছু জায়গাকে চিহ্নিত করা হয়েছে। সেই এলাকার দোকান থেকে ওই ওষুধ পাওয়া যেতে পারে বলে অনুমান করছেন ড্রাগ কন্ট্রোলার দপ্তরের আধিকারিকরা। পাশাপাশি, কিউআর কোড না থাকা অবৈধ ওষুধও ছেয়ে গিয়েছে নদীয়া জেলায়। ড্রাগ কন্ট্রোলার দপ্তরের তৎপরতায় জেলার বিভিন্ন জায়গা থেকে কিউআর কোড না থাকা বেশ কিছু ওষুধের নমুনা বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। জেলা প্রশাসনের তরফ থেকে সেগুলি পরীক্ষার জন্য ল্যাবে পাঠানো হয়েছে।

    নদীয়া জেলা ড্রাগ কন্ট্রোলার দপ্তরের এক আধিকারিকের কথায়, অন্য জেলা থেকে অবৈধভাবে ওষুধ ঢোকার বিষয়টি আমরা জানতে পারি। তৎক্ষণাৎ নদীয়া জেলার চারটি মহকুমার বিভিন্ন জায়গায় ইনফর্ম করা হয়। কোথায় সেই ওষুধ রাখা হচ্ছে, তা নিয়ে আমরা তদন্ত শুরু করি। সেইমতো বেশকিছু জায়গায় অভিযান চালানো হয়েছে। কোথাও সেই নিষিদ্ধ ওষুধ থাকলে আমরা খুঁজে বের করব।

    জানা গিয়েছে, সম্প্রতি উত্তর ২৪পরগনার বারাসত এলাকা থেকে একপ্রকার ওষুধ ঢুকেছে নদীয়া জেলায়।‌ সেটি মূলত ক্ষতিগ্রস্ত প্রস্টে‌ট এবং মূত্রাশয়ের সমস্যাজনিত কারণে ব্যবহৃত হয়।‌ সেই ওষুধকেই সম্প্রতি নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে সরকারের তরফ থেকে। কিন্তু তারপরেও সেই ওষুধ ঢোকার বিষয়টি কপালে ভাঁজ ফেলেছে প্রশাসনের। রানাঘাট ও কল্যাণী মহকুমায় এই ওষুধ ছড়িয়ে দিয়েছে অসাধু চক্র।‌ এমনটাই মনে করছেন ড্রাগ কন্ট্রোলার দপ্তরের আধিকারিকরা।

    প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, সেই ওষুধের খোঁজেই গত সপ্তাহে রানাঘাট ও মদনপুর এলাকার বিভিন্ন দোকানে অভিযান চালিয়েছে ড্রাগ কন্ট্রোলার দপ্তরের আধিকারিকরা। তবে, এখনও পর্যন্ত সেই ওষুধ তাঁদের নাগালে আসেনি। তবে নদীয়া জেলায় ‘সন্দেহজনক’ সেই ওষুধ যে ঢুকেছে, সেই ব্যাপারে নিশ্চিত গোয়েন্দারা। সেইমতো লাগাতার অভিযান চালানো হবে বলে জানা গিয়েছে।

    পাশাপাশি, কিউআর কোড বিহীন ওষুধ কোথাও বিক্রি হচ্ছে কি না, তাও নজরে রাখছে ড্রাগ কন্ট্রোলার। কারণ, কেন্দ্রীয় সরকারের তরফ থেকে ৩০০টি ওষুধে কিউআর কোড সাঁটানো বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। ‘বারকোড’ বা ‘কিউআর কোড’ স্ক্যান করলেই সেই ওষুধ সংক্রান্ত আট ধরনের তথ্য বেরিয়ে আসবে। তবে নদীয়া জেলায় এই নিয়ম অমান্য করেও ওষুধ বিক্রি হচ্ছে বলে জানা গিয়েছে।‌ চলতি মাসে কৃষ্ণনগর ও নবদ্বীপ সহ বিভিন্ন জায়গা থেকে আট রকমের ওষুধ বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। যাদের গায়ে কিউআর কোড লাগানো ছিল না। সেগুলি পরীক্ষার জন্য ল্যাবে পাঠানো হয়েছে। 

    যদিও কিউআর কোড সাঁটিয়েও ওষুধ নিয়ে জালিয়াতি করা হচ্ছে। ওষুধের আসল প্যাকেট থেকে ‘কিউআর কোড’ স্ক্যান করে সঠিক লিঙ্কটি কপি করে নিচ্ছে কারবারিরা। এরপর আসল ওষুধের ‘কিউআর কোড’ই জাল করে ছাপিয়ে দিচ্ছে নকলের প্যাকেটে। - প্রতীকী চিত্র
  • Link to this news (বর্তমান)