বেতনের দাবিতে অস্থায়ী পুর কর্মীদের বিক্ষোভ বালিতে, কাজ বন্ধের হুমকি
বর্তমান | ২২ এপ্রিল ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি, হাওড়া: বেতনের দাবিতে সোমবার বালি পুরসভার বাইরে বিক্ষোভে দেখালেন সাফাই বিভাগের কয়েকশো অস্থায়ী কর্মী। তাঁদের অভিযোগ, কারও একমাস, কারও তিন মাসের বেতন আটকে রাখা হয়েছে। বকেয়া না মেটালে অনির্দিষ্টকালের জন্য শহরজুড়ে সাফাইয়ের কাজ বন্ধ রাখার হুমকি দিয়েছেন কর্মীরা। পুরসভার অর্থ বিভাগের অভ্যন্তরীণ আইনি জটিলতার কারণেই অস্থায়ী কর্মীদের বেতন সঙ্কট তৈরি হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। দ্রুত সমস্যার সমাধানে এদিন আধিকারিকদের সঙ্গে বৈঠকে বসেন পুরসভার প্রশাসক।
বালি পুরসভার সাফাই বিভাগে চারশোরও বেশি অস্থায়ী কর্মী রয়েছেন। কারও দৈনিক মজুরি ১৪৪ টাকা, কারও ২০২ টাকা, আবার কেউ কেউ ৩৫৪ টাকা দৈনিক মজুরির ভিত্তিতে কাজ করেন। তাঁদের অভিযোগ, মার্চ মাসের বেতন চাইতে গেলে পুরসভার অর্থদপ্তর থেকে দাবি করা হয়, কিছু নথির সমস্যার কারণে বেতন দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। কর্মীদের দাবি, ফিন্যান্স অফিসারের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি বকেয়া বেতন মেটাতে অস্বীকার করেন। তাতেই কর্মীদের বিক্ষোভে কার্যত ঘৃতাহুতি হয়। সকালে কাজ বন্ধ রেখে বালি পুরসভার গেটের বাইরে বিক্ষোভে ফেটে পড়েন তাঁরা। অস্থায়ী কর্মী সুরজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়, জিতু মোদক, রিঙ্কু মালিরা বলেন, ‘নর্দমা সাফাইয়ের কাজ করে সামান্য মজুরি পাই। এখন পুরসভা বলছে, আমাদের মধ্যে কিছু কর্মীর কাগজপত্র ঠিক নেই। তার জন্য আমাদের বেতন আটকে রাখা হয়েছে। এভাবে কাজ করা সম্ভব নয়।’ বেতন সমস্যা না মিটলে জল ও শ্মশান সংক্রান্ত কাজ বাদে বাকি সমস্ত কাজ অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ রাখার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন অস্থায়ী কর্মীরা।
পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, অস্থায়ী কর্মীদের মধ্যে অনেকে এমন রয়েছেন যাঁদের অবৈধভাবে নিয়োগ করা হয়েছিল। নিয়োগের নথি সংক্রান্ত বেশ কিছু জটিলতা রয়েছে। সে কারণেই বেতন বিভ্রাট হয়েছে। বেতন সঙ্কট মেটাতে পুরসভার আধিকারিকদের নিয়ে এদিন বৈঠক করেন প্রশাসক তথা হাওড়ার এসডিও (সদর) অমৃতা রায় বর্মন। যদিও তাঁর সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলে তিনি কথা বলেননি। বেতন সমস্যা মেটাতে হস্তক্ষেপ করেন স্থানীয় বিধায়ক রানা চট্টোপাধ্যায়।
তিনি বলেন, ‘আমি নিজে এসডিও, পুরসভার এগজিকিউটিভ অফিসার ও ফিন্যান্স অফিসারের সঙ্গে বৈঠক করেছি। রাজ্য এই সঙ্কট মেটাতে তৎপর। পুর ও নগরোন্নয়ন দপ্তরের তরফে সমস্যার সমাধানের চেষ্টা চলছে। দ্রুত সঙ্কট মিটবে।’ বালির বিভিন্ন ওয়ার্ডের বাসিন্দারা বলছেন, শহরের সমস্ত নিকাশি নালা আবর্জনায় উপচে থাকে। যে কারণে সামান্য বৃষ্টি হলেই রাস্তায় জলের স্রোত বয়। এমন অবস্থায় পুরসভার কর্মীরা সাফাইয়ের কাজ বন্ধ রাখলে চরম ভোগান্তি হবে।’ নিজস্ব চিত্র